
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৫, ১০:১৮ এএম
যুক্তরাষ্ট্রের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ইউএসএআইডি) রাজধানী ঢাকায় কর্মরত মার্কিন কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) শেষ কর্মদিবস পার করলেন। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবারের মধ্যে বিশ্বের সব স্থান থেকে সংস্থাটির কর্মকর্তাদের যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত যেতে নির্দেশ দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। ফলে বাংলাদেশ ছাড়ছেন প্রায় ৬০–৭০ জন ইউএসএআইডির মার্কিন কর্মকর্তারা।
গত ২০ জানুয়ারি ক্ষমতায় বসার পরপরই বিশ্বব্যাপী ইউএসএআইডির তহবিল স্থগিত করেছেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সংস্থাটিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে একীভূত করতে চাচ্ছে তার নতুন প্রশাসন। এরই মধ্যে ওয়াশিংটনে ইউএসএআইডির প্রধান কার্যালয়ে না যাওয়ার জন্য কর্মীদের নির্দেশও দেয়া হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সংস্থাটির ওয়েবসাইট।
গতকাল বৃস্পতিবার শেষ কর্ম দিবস পার করেছেন ঢাকায় ইউএসএআইডির মার্কিন কর্মকর্তারা। গতকাল শেষ কর্মদিবস উপলক্ষে এক আবেগঘন পরিবেশ বিরাজ করে সংস্থাটির কার্যালয়ে। দীর্ঘ দিন ধরে স্থানীয়দের সঙ্গে একত্রে কাজ করায় একপ্রকার বন্ধন তৈরি হয়েছিল। একই সঙ্গে তহবিল বন্ধ করে দেয়ায় সংস্থাটিতে কাজ করা বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের ভবিষ্যত কি তা নিয়ে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে সংস্থাটির কার্যালয়ে।
আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস জানায়, এ বিষয়ে কোনো তথ্য পেতে হলে ইউএসএআইডি ওয়েবসাইটে যা প্রকাশ করা হয়েছে, তা দেখতে হবে।
ঢাকায় সংস্থাটির ৬০–৭০ জন মার্কিন কর্মকর্তা কর্মরত ছিলেন জানিয়ে ঢাকার ইউএসএআইডিতে কর্মরত এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, তহবিল বন্ধ করার ঘোষণার পর সর্ব প্রথম ওয়েবসাইটটি বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর বাংলাদেশের মার্কিন দূতাবাসে এক তার বার্তার মাধ্যমে ঢাকায় কর্মরত সকল মার্কিন কর্মকর্তাদের যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ফেরত যেতে নির্দেশ দেয়া হয়। গতকাল সংস্থাটিতে কর্মরত বাংলাদেশি ও মার্কিন কর্মকর্তা সবারই মন বেশ বিষণ্ন ছিলেন।
মার্কিন যেসব কর্মকর্তাদের জরুরী চিকিৎসা অথবা সন্তানদের পড়াশোনা সংক্রান্ত জটিলতা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে কিছু সময় বাড়ানো হবে। তবে বাকিদের অবশ্যই শুক্রবারের মধ্যে ফেরত যেতে হবে। ঢাকার কর্মকর্তাদের পরিচয় পত্র ‘আইডি’ ডিজেবল বা অকার্যকর করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ঢাকায় সংস্থাটির কর্মকর্তাদের আর কোনো ফাংশন থাকলো না।
এদিকে ঢাকাস্থ ইউএসআইডিতে কর্মরত ২৫০–৩০০ বাংলাদেশি কর্মকর্তারা পড়েছেন অনিশ্চয়তায়। তাদের চাকরি থাকবে কি–না। নতুন করে কোথায় চাকরি করবেন, ঢাকায় সংস্থাটির কর্মকান্ড ভবিষ্যতে চালালেও এর খরচ যে কমিয়ে আনা হবে এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই এর কর্মকর্তাদের।
সংস্থাটির আরেক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ইউএসএআইডির মতো এত বড় একটি সংস্থা এভাবেই হয়তো বন্ধ করে দিতে পারবে না ট্রাম্প প্রশাসন। এখন সাময়িকভাবে ৯০ দিনের জন্য এক প্রকার স্যাংশন দিয়েছে। তবে এর কার্যক্রম বিশ্ব থেকে পুরোপুরি বন্ধ করতে হলে দেশটির পালার্মেন্ট থেকে বিল পাস করিয়ে নিতে হবে।
তিনি বলেন, তবে ইউএসএআইডির কার্যক্রম চালু থাকলেও এর খরচ যে বর্তমান প্রশাসন কমিয়ে নিয়ে আসবে সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এতে করে বর্তমানে বিশাল সংখ্যক যে বাংলাদেশিরা বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন, তাদের সংখ্যা একেবারে কমিয়ে আনা হবে। ফলে সিংহভাগ বাংলাদেশি কর্মকর্তারা যে চাকরি হারাচ্ছেন, তার সন্দেহ নেই। ফলে কর্মরত বাংলাদেশিদের মধ্যে এক প্রকার অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে।