• ঢাকা শুক্রবার
    ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১
ইসরাইল ও হামাস একমত

গাজা যুদ্ধ অবসানের সম্ভাবনা জিম্মি ও বন্দিরা পাবে মুক্তি, আশার আলো দেখাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২৫, ০৯:৫১ এএম

গাজা যুদ্ধ অবসানের সম্ভাবনা জিম্মি ও বন্দিরা পাবে মুক্তি,  আশার আলো দেখাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে ইসরাইল ও হামাস একমত হওয়ায় দেখা দিয়েছে গাজা যুদ্ধ অবসানের সম্ভাবনা। চুক্তি অনুযায়ী, জিম্মি ও বন্দিদের মুক্তি দেয়া হবে। এক্ষেত্রে মধ্যস্থতা করছে কাতার ও মিশর। আশার আলো দেখাচ্ছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। আর বাইডেন প্রশাসন জানিয়েছে, শান্তি ফেরাতে কাজ চলছে দলবদ্ধভাবে।

একের পর এক বৈঠক, বিশ্ব নেতাদের কথার লড়াই আর আশ্বাসের ফুলঝুরি। এরপরও হতাশাই ছিল যেন সঙ্গী। তবে এবার ব্যর্থতার বৃত্ত ভেঙে উঁকি দিলো আশার আলো। গাজায় ১৫ মাস ধরে চলা নজিরবিহীন সহিংসতা এবং এতে ৪৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণহানির পর যুদ্ধবিরতিতে একমত হলো হামাস ও ইসরাইল।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান বিন জাসিম আল থানি সংবাদ সম্মেলনে জানান, এই চুক্তি ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম ধাপে ছয় সপ্তাহের মধ্যে বেশ কয়েকজন বন্দিকে মুক্তি দেয়ার পাশাপাশি গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার করা হবে। 

সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার (১৯ জানুয়ারি) প্রাথমিকভাবে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি শুরু হবে। এর মধ্যে কয়েকটি ধাপে নানা শর্ত বাস্তবায়ন করা হবে। যেমন উত্তর গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের ক্রমান্বয়ে প্রত্যাহার, গাজায় হামাস ও অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্তি, ইসরায়েলি কারাগার থেকে কয়েক হাজার ফিলিস্তিনির মুক্তি, গাজায় মানবিক সহায়তা জরুরি ভিত্তিতে বাড়ানো, গাজায় আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য মিশরের সীমান্তবর্তী ফিলাডেলফিয়া করিডর অতিক্রমের অনুমতি ইত্যাদি। প্রাথমিক ৬ সপ্তাহ বা ৪২ দিনের যুদ্ধবিরতির পর তা স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রূপান্তরিত হবে। 

কাতারের প্রধানমন্ত্রী আল থানি বলেন, আমরা অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, গাজায় চলমান যুদ্ধ শেষ করতে কাতার এবং মিশরের যৌথ প্রচেষ্টা সফল হয়েছে। দু’পক্ষের সম্মতিতে গাজায় চিরতরে যুদ্ধ বন্ধের পাশাপাশি বন্দিদের মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। একইসঙ্গে, গাজায় যুদ্ধবিধ্বস্তদের জন্য মানবিক সাহায্য পাঠানোরও কথা হয়েছে। 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও সংবাদ সম্মেলনে ইসরাইল-হামাস দ্বন্দ্বের ইতি টানার ঘোষণা দেন। জানান, গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে একজোট হয়ে কাজ করেছেন তারা। 

বিদায়ী এই প্রেসিডেন্ট বলেন, আগামী ছয় সপ্তাহে ইসরাইল দ্বিতীয় ধাপের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করবে, যা এই যুদ্ধকে চিরতরের জন্য শেষ করে দেবে। তবে পরিকল্পনা অনুযায়ী যদি দ্বিতীয় ধাপের সব শর্ত নিয়ে আলোচনায় সময় বেশি লাগে, তাহলে যুদ্ধবিরতি চলমান থাকবে। 

আর নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে জানান, এই চুক্তি সফল হওয়ার ব্যাপারে তিনি শতভাগ আশাবাদী। দ্রুতই জিম্মিরা ফিরবে নিজ বাড়িতে। 

এদিকে, এই সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজোগ। এক বিবৃতিতে তিনি জানান, যুদ্ধবিরতির এই সিদ্ধান্তের প্রতি পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। তার আশা, ইসরাইলিরা জিম্মিরা শিগগিরই নিজ ভিটায় ফিরবেন। যদিও হামাস নেতা খালিল আল হায়ার দাবি, গাজায় লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে ইসরাইল। 

তবে উভয় পক্ষের যুদ্ধবিরতির এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে চুক্তির শর্ত মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।

আন্তর্জাতিক সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ