প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪, ০৯:২৪ পিএম
ইয়েমেনের সানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, লোহিত সাগরের বন্দর এবং বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে সম্প্রতি বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। জবাবে এবার তেলআবিবের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইয়েমেন।
ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি শুক্রবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ইয়েমেন হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে দখলকৃত ভূমিতে অবস্থিত তেলআবিবের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।
শুক্রবার সকালে তেলআবিবে ইয়েমেনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর দখলকৃত অঞ্চলের বড় অংশজুড়ে এয়ার রেইড সাইরেন বেজে ওঠে। পাশাপাশি হামলার কারণে বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর বন্ধ হয়ে যায়।
ইসরাইলের জরুরি সেবাগুলো জানিয়েছে, হামলায় ১৮ জন আহত হয়েছেন। তারা সাইরেন শুনে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
অনলাইনে প্রকাশিত ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, দখলদার ইসরাইলের আয়রন ডোম ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধেয়ে আসা হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রটিকে আটকাতে ব্যর্থ হয়।
এ হামলার ফলে ইসরাইল দখলকৃত ভূখণ্ডের অর্ধেক এলাকায় লকডাউন কার্যকর করতে বাধ্য হয়। ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম এ ঘটনাকে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ব্যর্থতা হিসেবে বর্ণনা করেছে।
এদিকে ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দখলকৃত ইয়াফা (তেলআবিব) অঞ্চলে বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর লক্ষ্য করে প্যালেস্টাইন-২ হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে একটি নির্দিষ্ট সামরিক অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘শত্রুর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সত্ত্বেও ক্ষেপণাস্ত্রটি তার লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হয় এবং এই অভিযানে হতাহতের পাশাপাশি বিমানবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়’।
ইয়েমেনের রাজধানী সানা এবং বন্দরনগরী হুদাইদায় ইসরাইলের বিমান হামলার কয়েক ঘণ্টা পরই তেলআবিবে এই হামলার ঘটনা ঘটল।
এর আগে বৃহস্পতিবার সানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং ইয়েমেনের অন্যান্য স্থানে ইসরাইলি বিমান হামলা চালানো হয়। রিপোর্ট অনুযায়ী, সানা বিমানবন্দরে ‘ছয়টিরও বেশি’ হামলা চালানো হয়। পাশাপাশি আল-দাইলামি বিমান ঘাঁটিও হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়।
আল-মাসিরাহ টেলিভিশন চ্যানেলের রিপোর্ট অনুযায়ী, হুদাইদার কৌশলগত বন্দরনগরীতে বিদ্যুৎকেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইসরাইল।
ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ গোষ্ঠীর মুখপাত্র মোহাম্মদ আব্দুস সালাম এই হামলাগুলোকে ‘ইয়েমেনি জনগণের বিরুদ্ধে একটি জায়নিস্ট অপরাধ’ বলে অভিহিত করেছেন।
এর আগে বুধবার ইয়েমেন থেকে নিক্ষিপ্ত একটি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইল-দখলকৃত কেন্দ্রীয় অঞ্চলে সাইরেন বাজায়। যা এক সপ্তাহের মধ্যে চতুর্থবারের মতো ইসরাইলি বসতিতে সাইরেনের কারণ হয়।
এ বিষয়ে ইয়েমেনি সামরিক মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি জানান, নতুন অভিযানে প্যালেস্টাইন-২ হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়। যা তেলআবিবে একটি ইসরাইলি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে।
তেলআবিবে এই ক্ষেপণাস্ত্রটি আঘাত হানার পর ইসরাইলের প্রচারিত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এটি ঠেকাতে ব্যর্থ হয়। যার ফলে সেখানে ১৬ জন আহত হন। সূত্র: মেহের নিউজ এজেন্সি