• ঢাকা বুধবার
    ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে মার্কিন মানবাধিকারকর্মীর অনশন ধর্মঘট

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০২৪, ১০:৩১ পিএম

গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে মার্কিন মানবাধিকারকর্মীর অনশন ধর্মঘট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

অবরুদ্ধ গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলের ‘গণহত্যা ও অভুক্ত রাখার’ প্রতিবাদে তিন দিন ধরে অনশন ধর্মঘট পালন করছেন মার্কিন মানবাধিকারকর্মী হাজামি বারমাদা। ওয়াশিংটনে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং হোয়াইট হাউজের কাছে অবস্থান নিয়ে বারমাদা এই ধর্মঘট শুরু করেন।

বারমাদার অভিযোগ, বাইডেন প্রশাসন বিশেষত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন গাজায় মানবিক সংকট সৃষ্টিতে ইসরাইলকে সহযোগিতা করছেন।

মার্কিন এই মানবাধিকারকর্মী বলেন, ‘স্টেট ডিপার্টমেন্ট মানবাধিকার, নারীর অধিকার, শিশু সুরক্ষা এবং শিক্ষার পক্ষে দাঁড়ানোর কথা বলে। অথচ এসবই গাজা ও পশ্চিম তীরে হামলার শিকার হচ্ছে। যা হচ্ছে মার্কিন প্রশাসনের পূর্ণ সমর্থন এবং অনুমোদনে।

মার্কিন অস্ত্র ইসরাইলের কাছে সরবরাহ করা হচ্ছে। যা নিরীহ বেসামরিক লোকদের হত্যা এবং শিশুদের অভুক্ত রাখার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন বারমাদা।

বাইডেন প্রশাসনের প্রতি দাবি

হাজামি বারমাদা মার্কিন প্রশাসনের কাছে ইসরাইলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি দাবি জানিয়ে বলেন, আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের জন্য ইসরাইলকে শাস্তি দেওয়া উচিত।

তার দাবিগুলো হলো:

১) মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ইসরাইলকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা।

২) ইসরাইলের কাছে মার্কিন অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করা।

৩) গাজায় খাদ্য ও মানবিক সহায়তার প্রবেশ নিশ্চিত করা।

ধর্মঘটের প্রভাব ও সংকট

এই মার্কিন মানবাধিকারকর্মী বুধবার বলেছেন, গত তিন দিন ধরে চলা এই অনশন ধর্মঘটে তিনি ইতোমধ্যেই ১২ পাউন্ড ওজন হারিয়েছেন এবং তার শরীরে ক্ষুধার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।

বারমাদার ভাষায়, ‘ক্ষুধা যখন শরীরে প্রভাব ফেলে, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তখন কাজ করা বন্ধ করে দেয়। শিশুদের ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়া আরও দ্রুত ঘটে। প্রতিটি দিনই গুরুত্বপূর্ণ।

মার্কিন প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া

গত ১৩ অক্টোবর মার্কিন প্রশাসন ইসরাইলকে এক চিঠিতে গাজায় মানবিক সহায়তার উন্নতির জন্য ৩০ দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিদিন কমপক্ষে ৩৫০টি ত্রাণ ট্রাক গাজায় প্রবেশ করাতে হবে এবং UNRWA কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার মতো আইন কার্যকর করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

তবে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইল এই নির্দেশনা মানেনি। বরং সেখানকার পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের পদক্ষেপ

গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।

যদিও তা দম্ভভরে প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরাইল ও তার পরম মিত্র বাইডেন প্রসাশন।

এ নিয়ে বারমাদা বলেন, ‘৪১৭ দিনেরও বেশি সময় ধরে বাইডেন প্রশাসন গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা সমর্থন করেছে। এখন সময় এসেছে বলার যে, আর নয়। আমাদের কিছু হারানোর নেই’।

চলমান এই অনশন ধর্মঘটের মাধ্যমে বারমাদা বিশ্বব্যাপী সচেতনতা বৃদ্ধির চেষ্টা করছেন। যাতে বাইডেন প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি

আর্কাইভ