প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০২৪, ০৭:১২ পিএম
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়কে ‘হুমকি’ মনে করছে ইরান ও তার মধ্যপ্রাচ্যের মিত্ররা। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সংস্থার জরিপে দেখা গেছে, রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প ও ডেমোক্রেটিক পার্টির কমলা হ্যারিসের মধ্যে চলছে তীব্র প্রতিযোগিতা। তবে, ইরানের জন্য ট্রাম্পের আরেক মেয়াদ অত্যন্ত ভীতিকর হবে বলেই আশঙ্কা তেহরানের।
পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট কে হচ্ছেন, সেদিকে তাকিয়ে বিশ্ব। বিভিন্ন সংস্থার জরিপে নানা আভাস পাওয়া যাচ্ছে। কেউ বলছেন ট্রাম্প, কেউ এগিয়ে রাখছে কমলাকে। তবে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম সামরিক শক্তিশালী দেশ ইরান ও তার মিত্রদের আশঙ্কা নির্বাচনে জয়ী হতে পারেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
আর ট্রাম্পের জয়কে হুমকি মনে করছে ইরান ও তার মধ্যপ্রাচ্যের মিত্ররা। এই আশঙ্কার আসল কারণ হলো, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে তেহরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা ও শীর্ষ নেতাদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে তাদের হত্যা করতে ট্রাম্প উৎসাহ দিতে পারেন।
একই সঙ্গে তাদের ধারণা, ইরানের তেল বাণিজ্যের ওপরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপ করতে পারে ট্রাম্প প্রশাসন। এছাড়া ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে পারমাণবিক চুক্তি মানতে চরম চাপ প্রয়োগ করতে পারেন ট্রাম্প- রয়েছে সেই আশঙ্কাও।
অক্টোবরে এক নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে যেতে চান না, তবে দেশটির ওপর হামলা করতে ইসরাইলকে উৎসাহিত করেন।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব সম্ভাব্য পরিবর্তন মধ্যপ্রাচ্যের ক্ষমতার ভারসাম্যে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকি বিনষ্ট হতে পারে ইরানের পররাষ্ট্রনীতি ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও। আবার অনেকেই বলছেন, ইসরাইলের একের পর এক সামরিক অভিযানের কারণে মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব কিছুটা মন্থর হতে পারে। সেটা ট্রাম্প বা কমলা যিনিই আসুক।
তবে ট্রাম্প যদি ইসরাইলকে ফের সমর্থন দেন, সেটা ইরানের জন্য বেশি ক্ষতিকর বলেই মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, কমলা হ্যারিসের জয় যে ইরানের জন্য সুখকর তা-ও কিন্তু না। এক নির্বাচনী প্রচারণায়, কমলা ইরানকে ‘বিপজ্জনক’ ও ‘অস্থিতিশীলতা’ সৃষ্টিকারী বলেছেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ‘আক্রমণাত্মক আচরণ’ মোকাবিলায় মিত্রদের সঙ্গে কাজ করবে বলেও তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, ট্রাম্প ক্ষমতা ছাড়ার সময় ইরান ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু এখন দেশটি ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে এবং কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা অর্জন করছে।
এর আগে ২০১৮ সালে ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি বাতিল করে কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তাই ইরানের জন্য ট্রাম্পের আরেক মেয়াদ অত্যন্ত ভীতিকর হবে বলেই আশঙ্কা ইরান ও দেশটির মিত্রদের।