• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

মার্কিন নির্বাচন পদ্ধতি আসলে কেমন?

প্রকাশিত: নভেম্বর ৩, ২০২৪, ০৮:৫৬ পিএম

মার্কিন নির্বাচন পদ্ধতি আসলে কেমন?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম গণতন্ত্র ও পরাশক্তির দেশ আমেরিকা। ফলে দেশটির নির্বাচন ঘিরে দেশ-বিদেশে সাধারণ মানুষের মাঝে আগ্রহ ও কৌতূহলের শেষ নেই। চার বছর পরপর আমেরিকায় নির্বাচন হয় এবং নভেম্বর মাসের প্রথম সোমবারের পর যে মঙ্গলবার পড়ে, সেদিনই ভোটগ্রহণ হয়। সেই হিসাবে ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসের ৫ তারিখে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে।

মার্কিন রাজনীতিতে সবচেয়ে প্রভাবশালী দল মাত্র দুটি–রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক পার্টি। সাধারণত এই দুই দলের যেকোনো একটি দল থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। অবশ্য ছোট ছোট কিছু রাজনৈতিক দল যেমন লিবার্টারিয়ান, গ্রিন, ইন্ডিপেনডেন্ট পার্টি–তারাও কখনো কখনো প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী মনোনয়ন ঘোষণা করে। রিপাবলিকান পার্টি একটি রক্ষণশীল দল হিসেবে পরিচিত। এ দলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট ছিলেন আব্রাহাম লিঙ্কন, জর্জ ডাব্লিও বুশ ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। অপরদিকে ডেমোক্রেটিক দল তুলনামূলকভাবে উদারনৈতিক রাজনৈতিক দল। দলটি থেকে উল্লেখযোগ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট ছিলেন জন এফ কেনেডি, বিল ক্লিনটন, বারাক ওবামা এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

বর্তমানে ডেমোক্রেটিক দলের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বয়স ৮০ বছর। বয়স কোনো ফ্যাক্টর নয় বলে ২০২৪ সালে পুনর্নির্বাচনী প্রস্তুতিও তিনি শুরু করেছিলেন। কিন্তু গত জুলাইয়ে বাইডেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে সমর্থন দেন। মূলত এরপর থেকেই উভয় শিবিরে জোর প্রচার শুরু হয়।

তবে প্রেসিডেন্ট কে হবেন, সেটি নির্ধারণ হবে আগামী ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে। ভোটাররা চার বছর মেয়াদের জন্য প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন। এ নিয়ে প্রত্যাশীদের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। তাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ক্ষণ যত এগিয়ে আসছে, বিশ্ববাসীর উৎকণ্ঠা ততই বাড়ছে।

যুক্তরাষ্ট্র গোটা বিশ্বের কাছে প্রকৃত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্ররূপে স্বীকৃত। গণতন্ত্রের পুরোধা, ঐতিহ্যের প্রতীক, গর্বিত মুরব্বি আর উপদেশদাতা যুক্তরাষ্ট্র। সেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট দেশটির নাগরিকদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন না। তিনি নির্বাচিত হন ইলেকটরদের ভোটে। সাধারণ নাগরিকরা ইলেকটরদের নির্বাচন করে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইলেকটোরাল কলেজের মোট আসন সংখ্যা ৫৩৮টি। এই নির্বাচনে বিজয়ী হতে হলে কমপক্ষে ২৭০টি ইলেকটোরাল ভোট পেতে হয়। প্রতিটি রাজ্যের জন্য ইলেকটোরাল আসন সংখ্যা রাজ্যটির জন্য বরাদ্দকৃত সিনেট ও প্রতিনিধি পরিষদের মোট আসন সংখ্যার সমান। অর্থাৎ, কোনো একটি অঙ্গরাজ্যের প্রতিনিধি পরিষদে যতগুলো আসন আছে, তার সাথে অঙ্গরাজ্যটির জন্য বরাদ্দ থাকা দুটি সিনেট আসন যোগ করে ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা পাওয়া যায়। তবে ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়াকে আলাদাভাবে সম্মানসূচকভাবে তিনটি ইলেকটোরাল ভোট বরাদ্দ করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গণনা পদ্ধতি দুটি। একটি হলো মাথাপিছু ভোট, যাকে বলে পপুলার ভোট। অপরটি হলো অঙ্গরাজ্যভিত্তিক ইলেকটোরাল কলেজ ভোট। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, মার্কিন গণতন্ত্রে পপুলার ভোটের চেয়ে ইলেকটোরাল কলেজ ভোট অনেক বেশি ক্ষমতাশালী। একজন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী সর্বাধিক পপুলার ভোট অর্জন করলেও তা তাঁকে প্রেসিডেন্ট হওয়ার নিশ্চয়তা দেয় না। কিন্তু নির্দিষ্ট পরিমাণ ইলেকটোরাল কলেজ ভোট (২৭০) অর্জন করতে সক্ষম হলেই প্রেসিডেন্ট হওয়ার নিশ্চয়তা থাকে।

২০০০ সালে ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী আল গোর ওই সময়ে সর্বাধিক পপুলার ভোট পেয়েও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি। কারণ, তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান দলের জর্জ বুশ ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেয়েছিলেন ২৭১টি। আর এতেই তিনি আল গোরকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট পদে আসীন হন। একই ঘটনা ঘটে হিলারি ক্লিনটনের বেলায় ২০১৬ সালে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে প্রায় ২ শতাংশ ভোট বেশি পেলেও ইলেকটোরাল কলেজ ভোটে পিছিয়ে পড়েছিলেন হিলারি। ট্রাম্প পেয়েছিলেন ৩০৪টি ইলেকটোরাল ভোট, আর হিলারি পেয়েছিলেন ২২৭টি। ফলে প্রেসিডেন্ট হন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

আগেই বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে বেশি ভোট পেলেই যে একজন প্রার্থী সব সময় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন, তা নয়। জনগণের সরাসরি বা প্রত্যক্ষ ভোটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন না। ‘ইলেকটোরাল কলেজ’ নামে পরিচিত একদল কর্মকর্তার পরোক্ষ ভোটেই নির্বাচিত হন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এ ক্ষেত্রে ‘কলেজ’ শব্দটি বলতে একদল লোককে বোঝায়, যাঁরা নির্বাচকের (ইলেকটর) ভূমিকা পালন করেন। এই নির্বাচকমণ্ডলীর কাজ হলো প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করা।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী, এই ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতিতেই একজন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন, যা কেন্দ্রীয় ও অঙ্গরাজ্য সরকারের আইনের জটিল এক সমন্বয়ের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি অঙ্গরাজ্য থেকে নিজ নিজ দলের ইলেকটরদের একটি স্লেট আগেই পাঠানো থাকে, যা গঠনের আলাদা বিধি আছে।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিন প্রার্থীরা সারা দেশে ভোটারদের কাছ থেকে যেসব ভোট পান, সেগুলোকে বলা হয় পপুলার ভোট এবং ইলেকটোরাল কলেজের ভোটকে বলা হয় ইলেকটোরাল ভোট। কোনো একটি অঙ্গরাজ্যে যে প্রার্থী সবচেয়ে বেশি পপুলার ভোট পাবেন, তিনি ওই অঙ্গরাজ্যের সব ইলেকটোরাল ভোট পেয়ে যাবেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী যদি ৫০ দশমিক ১ শতাংশ ভোট পান, তাহলে ওই অঙ্গরাজ্যের ৩৮টি ইলেকটোরাল ভোট ডেমোক্রেটিক দলের ঝুলিতেই যাবে। তবে মাইন ও নেব্রাস্কার ক্ষেত্রে ‘বিজয়ীর ঝুলিতে’ সব যায় না। এ দুই অঙ্গরাজ্যে আনুপাতিক হারে ইলেকোরাল ভোট বণ্টন হয়।

একেক অঙ্গরাজ্যের হাতে একেক সংখ্যক ইলেকটোরাল কলেজ ভোট থাকার কারণে বেশি ভোট আছে এমন অঙ্গরাজ্যগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে প্রার্থীরা তাঁদের নির্বাচনী প্রচারের ছক তৈরি করেন। নির্বাচনের দিন মার্কিনরা যখন ভোট দেন, তখন তাঁরা মূলত প্রার্থীদের বাছাই করা ইলেকটরদের ভোট দেন। দুটি ছাড়া বাকি ৪৮টি অঙ্গরাজ্যে ‘উইনার-টেক-অল’ ব্যবস্থা চালু রয়েছে। এর অর্থ হলো, জয়ী প্রার্থীকে সব ইলেকটোরাল কলেজ ভোট দিয়ে দেওয়া হয়। উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি বললে বুঝতে সুবিধা হবে।

সবচেয়ে বেশি ইলেকটর রয়েছেন ক্যালিফোর্নিয়ায়। এখানকার ইলেকটরের সংখ্যা ৫৫ জন। এঁরা সাধারণত দলের কর্মী, সদস্য বা দলের প্রতি অনুগত লোকজন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের অংশ হিসেবে ক্যালিফোর্নিয়ার মানুষ যখন ভোট দেন, তখন তাঁরা মূলত তাঁদের পছন্দের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে নয়; বরং প্রার্থীর নিযুক্ত ইলেকটরদের ভোট দেন। এখন ক্যালিফোর্নিয়ায় যে জিতবে, সে প্রার্থীর নির্ধারিত ৫৫ জন ইলেকটর যাবেন ইলেকটোরাল কলেজে। প্রার্থীর হয়ে চূড়ান্ত ভোটে অংশ নিতে যে ইলেকটোরাল কলেজ সভা হবে, সেখানে এই ইলেকটররা যাবেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ইলেকটররা সেখানে বাদ পড়ে যাবেন।

বর্তমানে ক্যালিফোর্নিয়ায় ৫৫টি, টেক্সাসে ৩৮টি, ফ্লোরিডায় ২৯টি, নিউইয়র্কে ২৯টি, পেনসিলভানিয়ায় ২০টি, ইলিনয়ে ২০টি, ওহাইওতে ১৮টি, জর্জিয়ায় ১৬টি, মিশিগানে ১৬টি, নর্থ ক্যারোলাইনায় ১৫টি, নিউজার্সিতে ১৪টি, ভার্জিনিয়ায় ১৩টি, ওয়াশিংটন ডিসিতে ১২টি, ইন্ডিয়ানায় ১১টি, টেনেসিতে ১১টি, অ্যারিজোনায় ১১টি, ম্যাসাচুসেটসে ১১টি, মিনেসোটায় ১০টি, উইসকনসিনে ১০টি, মিসৌরিতে ১০টি, ম্যারিল্যান্ডে ১০টি, সাউথ ক্যারোলাইনায় ৯টি, কলোরাডোয় ৯টি, আলাবামায় ৯টি, কেন্টাকিতে আটটি, লুইজিয়ানায় আটটি, ওরিগনে সাতটি, কানেকটিকাটে সাতটি, ওকলাহোমায় সাতটি, কানসাসে ছয়টি, আইওয়াতে ছয়টি, আরকানসাসে ছয়টি, নেভাদায় ছয়টি, ইউটায় ছয়টি, মিসিসিপিতে ছয়টি, নেব্রাস্কায় পাঁচটি, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ায় পাঁচটি, নিউ মেক্সিকোতে পাঁচটি, আইডাহোতে চারটি, রোড আইল্যান্ডে চারটি, হাওয়াইতে চারটি, নিউ হ্যাম্পশায়ারে চারটি, মন্টানায় তিনটি, নর্থ ডাকোটায় তিনটি, ভারমন্টে তিনটি, মেইনে চারটি, ডেলাওয়ারে তিনটি, ওয়াইওমিংয়ে তিনটি, সাউথ ডাকোটায় তিনটি, আলাস্কায় তিনটি এবং ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়াতে তিনটি ইলেকটোরাল ভোট রয়েছে।

আগেই বলা হয়েছে, সাধারণত জনসংখ্যার ওপর ইলেকটরের সংখ্যা নির্ভর করে। নিয়ম হলো, প্রতিটি অঙ্গরাজ্যে জনসংখ্যা যেমনই হোক, ন্যূনতম তিন পয়েন্ট দিতেই হবে। কারণ, একটি অঙ্গরাজ্য আকারে যত ছোটই হোক না কেন, তার জনসংখ্যা যত কমই হোক না কেন, তার দুজন সিনেটর আছেন এবং প্রতিনিধি পরিষদে অন্ততপক্ষে একটি আসন রয়েছে। অবশ্য এই সংখ্যা নির্ধারণ করা হয় প্রতি ১০ বছর পরপর। যেমন ২০০৪ সালে ফ্লোরিডার ছিল ২৭টি ইলেকটোরাল ভোট। এখন তা ২৯টি।

এবার আসা যাক ইলেকটোরাল ভোট নিয়ে। ভোটগ্রহণ তো হলো। বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে ভোট গণনা শেষে ইলেকটোরাল কলেজও গঠিত হলো। ধরা যাক–এবারের নির্বাচনে ভোট গণনা শেষে রিপাবলিকান পার্টির নির্ধারিত ২৮১ জন ইলেকটর নির্বাচিত হলেন এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির নির্বাচিত হলেন ২৫৭ জন ইলেকটর। কিন্তু ইলেকটোরাল কলেজের ভোটে রিপাবলিকান ইলেকটরদের মধ্যে ১৪ জন ডেমোক্র্যাট প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বসলেন। সেক্ষেত্রে ডেমোক্রেটিক প্রার্থীর ইলেকটোরাল ভোটসংখ্যা দাঁড়াবে ২৭১‑এ। ফলে তিনি বিজয়ী হবেন। অর্থাৎ, নিজ দলের প্রার্থীকেই ভোট দেওয়ার বিষয়ে ইলেকটরদের ওপর কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এ জন্য দলগুলো ইলেকটর নির্ধারণের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা নিয়ে থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রক্রিয়াটি যে বেশ জটিল, তা আশা করা যায় এরই মধ্যে পাঠকেরা বুঝে গেছেন। এত জটিল প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে জানার পর একটি প্রশ্ন স্বভাবতই পাঠকের মনে চলে আসার কথা–যদি জনসমর্থনের ওপরই নির্বাচকমণ্ডলীর বা ইলেকটরদের নির্ভর করতে হয়, তাহলে এত প্যাঁচালো প্রক্রিয়ায় নির্বাচকমণ্ডলী দিয়ে পরোক্ষ নির্বাচন করানো কেন? তার চেয়ে বরং সরাসরি জনগণের ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করলে হয় না?

এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়া যাবে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে। ১৭৭৬ সালে যখন যুক্তরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়, তখন সেটি একক কোনো দেশ ছিল না। তখনকার যুক্তরাষ্ট্র ছিল অনেক স্বাধীন অঙ্গরাজ্যের একটি সমন্বিত জোট। যে কারণে এখনো দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের আইন পরস্পরের চেয়ে আলাদা ও বৈচিত্র্যপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্রের গোড়াপত্তনের সময় নিউজার্সির মতো ছোট অঙ্গরাজ্যগুলো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভার্জিনিয়া কিংবা নিউইয়র্কের মতো জনবহুল অঙ্গরাজ্যগুলোর একচ্ছত্র আধিপত্যের আশঙ্কায় প্রচলিত প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রের পথে যেতে চায়নি। তাই জাতীয় নির্বাচনে ছোট-বড় সব অঙ্গরাজ্যের মতামতের প্রতিফলন ঘটাতেই ইলেকটোরাল কলেজ ব্যবস্থার জন্ম। এ ছাড়া সাধারণ জনগণ সরাসরি ভোট দিলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে এবং মানের চেয়ে সংখ্যার আধিপত্য প্রতিষ্ঠা হয়ে যেতে পারে–এসব আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানপ্রণেতারা প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রের বদলে পরোক্ষ গণতন্ত্রকেই বেছে নিয়েছিলেন।

আর্কাইভ