প্রকাশিত: অক্টোবর ২৯, ২০২৪, ০৭:২৫ পিএম
ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক জাতিসংঘ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ’র কার্যক্রম তিন মাসের মধ্যে নিষিদ্ধ করতে ইসরায়েল পার্লামেন্টে যে বিল পাস করেছে তাতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। একই সঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেকগুলো দেশ।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিরোধিতা সত্ত্বেও ইসরায়েলের এমপিরা এ বিষয়ে দুটি বিল পাসের পক্ষে ভোট দিয়েছে। এর ফলে ইউএনআরডব্লিউএ-কে ইসরায়েল, অধিকৃত পূর্ব জেরুসালেম ও দখলীকৃত পশ্চিম তীর ও গাজায় কার্যক্রম পরিচালনার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ হবে।
গাজায় যুদ্ধকালে আশ্রয় শিবির তৈরি এবং ত্রাণ বিতরণে জাতিসংঘের এ বৃহত্তম সংস্থাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ইউএনআরডব্লিউএ কমিশনার জেনারেল ফিলিপ্পে লাজ্জারিনি তার সংস্থার ওপর এ ধরনের নিষেধাজ্ঞাকে নজিরবিহীন উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দা করেছেন।
তিনি বলেছেন এটি জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস আইনটি কার্যকর হলে এর ‘বিপর্যয়কর পরিণতি’ সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে ইউএনআরডব্লিউএ গাজায় উপত্যকায় ত্রাণ বিতরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এবং ‘এ মূহুর্তে অন্য কেউ তাদের জায়গা নিতে পারবে না’।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার বলেছেন তিনি মারাত্মক উদ্বিগ্ন এবং নতুন আইন গাজায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলবে। একই ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে জার্মানি, বেলজিয়াম, আয়ারল্যান্ড, স্পেন ও নরওয়েসহ আরও কয়েকটি দেশ।
ইসরায়েল দাবি করে আসছিলো যে গাজায় হামাসের সাথে মিলে কাজ করছিলো জাতিসংঘের এই সংস্থার কর্মীরা।
গত বছর সাতই অক্টোবর ইসরায়েলে যে হামলা হামাস করেছে তাতে এই সংস্থার কর্মীরাও অংশ নিয়েছে।
জাতিসংঘ পরে তদন্ত করে এই সংস্থার নয় জনকে চিহ্নিত করেছে যাদের ওই হামলার সাথে যোগসূত্র থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
গত অগাস্টেই তাদের বরখাস্ত করার কথা বলেছেন জাতিসংঘের উপ মুখপাত্র ফারহান হক। গাজার একজন সাংবাদিক জানিয়েছেন গাজার বাস্তুচ্যুত শরণার্থীদের বেশিরভাগই ইউএনআরডব্লিউএ- এর খাদ্য সহায়তার ওপর নির্ভর করে। ``গাজায় বেশির ভাগ ত্রাণ সহায়তা দেয় ইউএনআরডব্লিউএ।``
ইসরায়েলের নিষেধাজ্ঞা তাদের মানবিক কার্যক্রমকে ধ্বংস করে দিবে,” বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস এর নিউজডে প্রোগ্রামকে বলেছেন ঘাদা উদাহ। ওদিকে ইউএনআরডব্লিউএ -এর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া নিয়ে বিবিসি আরবি বিভাগের সাথে কথা বলেছেন কয়েকজন ফিলিস্তিনি।
ওম ইউসুফ বলছেন গাজায় ইউএনআরডব্লিউএ-র কাজ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত ভুল কারণ তারা আমাদের চিকিৎসা দেয়। আমাদের সন্তানদের স্কুলে শিক্ষা দেয়।
“আমি আশা করি এটি কার্যকর হবে না কারণ এটি ভুল,” বলছিলেন তিনি।
ওম সহায় বলছেন এ সিদ্ধান্ত তাদের তেল ও খাবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিবে। “ যা হচ্ছে তা খুবই খারাপ। ইউএনআরডব্লিউএ-র দেয়া ময়দা ছাড়া এ দেশে আর কিছু আমাদের জন্য নেই। আশা করি এ সিদ্ধান্ত বাতিল হবে,” বলেছেন তিনি।
খান ইউনিসের মোহামেদ বলেন তারা ইউএনআরডব্লিউএ-কে ময়দা, তেল, চিনি ও অন্য দরকারি জিনিস আনতে দিবেন না।
“এটি বন্ধ হলে আমরা খাবার ও বাচ্চারা শিক্ষা পাবে না”।