• ঢাকা শুক্রবার
    ০৮ নভেম্বর, ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১
এক কিংবদন্তির চিরপ্রস্থান

ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের আপসহীন নেতা ইব্রাহিম রাইসি

প্রকাশিত: মে ২০, ২০২৪, ০৮:৫৩ পিএম

ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের আপসহীন নেতা ইব্রাহিম রাইসি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের একজন কট্টরপন্থী প্রসিকিউটর থেকে একজন আপসহীন নেতা হয়ে উঠেছিলেন ইব্রাহিম রাইসি। 

ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রাইসির এমন মৃত্যু কারো কাম্য ছিল না। দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির পর সর্বোচ্চ নেতা হওয়ার দৌড়ি এগিয়ে ছিলেন ৬৩ বছর বয়সি এই কিংবদন্তি। 

১৯৬০ সালে মাশহাদের একটি ধর্মীয় পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন রাইসি। পাঁচ বছর বয়সে তিনি বাবাকে হারান। বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে একজন আলেম হন রাইসি।

পবিত্র শহর কোমে থাকাকালীন তরুণ ছাত্র ছিলেন রাইসি। তখন ১৯৭৯ সালের বিপ্লবে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। পরবর্তীতে, কোমের ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে তার যোগাযোগ তাকে বিচার বিভাগে একজন বিশ্বস্ত ব্যক্তিত্বে পরিণত করে। 

প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ইরানে হিজাববিরোধী বিক্ষোভ কঠোরহস্তে দমন করেছেন তিনি। সেইসঙ্গে বিশ্বশক্তিগুলোর সঙ্গে দেশটির পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে সংলাপে কঠোর হস্তক্ষেপ করতেন। 

রোববার আজারবাইজান প্রজাতন্ত্রের সঙ্গে ইরানের সীমান্তে একটি বাঁধের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ফেরার পথে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরআবদুল্লাহিয়ান এবং অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের বহনকারী একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে রাইসি পরলোকগত হন।

২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন রাইসি। এরপর ইরানের ক্রমবর্ধমান উন্নত প্রযুক্তির উপর নিয়ন্ত্রণ জোরদার করেন এবং যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক দেশটির উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করে যান রাইসি। 

নির্বাচিত হওয়ার মাত্র এক বছরের মাথায় তিনি ইরানের ‍‍`হিজাব ও সতীত্ব আইন‍‍` প্রয়োগে বিন্দুমাত্র ছাড় দেননি তিনি। 

ইরানের নেতৃত্ব মূলত দুই ভাগে বিভক্ত। একদিকে ধর্মীয় নের্তৃবৃন্দ, অন্যদিকে সরকার। তবে এই দুইয়ের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছিলেন রাইসি। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ব্যাপক সমর্থন পেয়েছিলেন তিনি। যার ফলে খামেনির উত্তরসূরি হওয়ার দৌড়ে তিনি এগিয়ে ছিলেন বলে ধারনা করা হয়। 

মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বলছে, তেহরানের তরুণ প্রসিকিউটর থাকাকালীন রাইসি এমন একটি প্যানেলে ছিলেন, যারা ১৯৮৮ সালে রাজধানীতে রাজনৈতিক বন্দিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছিল।

২০১৯ সালে খামেনি তাকে বিচার বিভাগীয় প্রধানের মর্যাদায় আসীন করান। এর অল্প সময়ের মধ্যেই, তিনি পরবর্তী সর্বোচ্চ নেতা নির্বাচনকারী ৮৮ সদস্যবিশিষ্ট যাজক সংস্থা বিশেষজ্ঞ পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যানও নির্বাচিত হন। 

২০১৪ সালে প্রসিকিউটর-জেনারেল নিযুক্ত হওয়ার আগে তিনি ১০ বছর বিচার বিভাগের উপ-প্রধান হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী রাইসি ২০১৭ সালের নির্বাচনে বাস্তববাদী হাসান রুহানির কাছে হেরে যান।

আন্তর্জাতিক সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ