প্রকাশিত: এপ্রিল ২৭, ২০২৪, ১১:২৯ এএম
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, হামাস ও ফাতাহকে এক টেবিলে নিতে পারছে চীন। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ও এর প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠী ফাতাহর মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার বেইজিংয়ে ওয়াং ওয়েনবিন এ তথ্য জানান।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।
হামাস ও ফাতাহর মধ্যে এই রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। মূলত ফাতাহর একপ্রকার বিরোধিতা থেকেই হামাসের জন্ম। হামাস শুরুর দিকে ইসরাইল রাষ্ট্রের অস্তিত্ব মেনে না নিলেও ইদানিং দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে। চীনের তরফ থেকে ফিলিস্তিনের দুই বিবদমান পক্ষের মধ্যে ঐক্যের এই আলোচনা একটি বিরল পদক্ষেপ।
ফাতাহ পশ্চিমা বিশ্ব সমর্থিত এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বে পরিচালিত একটি রাজনৈতিক দল। এই দল ইসরাইল অধিকৃত পশ্চিম তীরে সীমিত স্বশাসনের কার্যক্রম পরিচালনা করে। বিপরীতে হামাস পশ্চিমা বিশ্বের কাছে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিতি। তারা নিয়ন্ত্রণ করে গাজা ভূখণ্ড।
২০০৭ সালে এক সংক্ষিপ্ত যুদ্ধে হামাস গাজা থেকে ফাতাহকে বিতাড়িত করে। এর পর থেকেই দল দুটি রাজনৈতিক বিরোধ সারতে ব্যর্থ হয়েছে। ওয়াশিংটন এ দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ঐক্যের পদক্ষেপের বিষয়ে সতর্ক। কারণ যুক্তরাষ্ট্র ফাতাহ তথা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে সমর্থন করলেও হামাসকে সন্ত্রাসী হিসেবে নিষিদ্ধ করেছে।
ফাতাহর এক নেতা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, জ্যেষ্ঠ নেতা আজাম আল-আহমেদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল চীনে রওনা হয়েছে। হামাসের এক নেতা বলেছেন, হামাসের সিনিয়র কর্মকর্তা মুসা আবু মারজুকের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল আলোচনায় যোগ দেবে।
তবে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত না করে বলেছেন, ‘আমরা ফিলিস্তিনি জাতীয় কর্তৃপক্ষের কর্তৃত্বকে শক্তিশালী করার বিষয়টি সমর্থন করি এবং আলোচনা ও পরামর্শের মাধ্যমে (হামাস ও ফাতাহর মধ্যে) ঐক্য অর্জন এবং সংহতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে সব ফিলিস্তিনি উপদলকে সমর্থন করি।’
গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এই প্রথম হামাসের কোনো প্রতিনিধি চীনে গেল। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চীনা কূটনীতিক ওয়াং কেজিয়ান গত মাসে কাতারে হামাসপ্রধান ইসমাইল হানিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বেইজিংয়ের এই কূটনীতিকের উদ্দেশ্য দুই ফিলিস্তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীর মধ্যে পুনর্মিলনের প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নেওয়া।
চীন সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান হারেই কূটনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে যাচ্ছে। আরব দেশ ও ইরানের সঙ্গে দেশটি শক্তিশালী সম্পর্ক উপভোগ করছে। গত বছর বেইজিং দীর্ঘদিনের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে একটি যুগান্তকারী শান্তি চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেছে। চীনা কর্মকর্তারা সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক ফোরামে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে ব্যাপক কথা বলছেন। দেশটি ইসরাইল-ফিলিস্তিনি শান্তি সম্মেলন এবং একটি দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান বাস্তবায়নে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার আহ্বান জানিয়েছে।