প্রকাশিত: এপ্রিল ২৪, ২০২৪, ০৯:০৭ পিএম
হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জাদ্দিন আল-কাসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু উবায়দা বলেছেন, ইসরাইলের সামনে কোনো লক্ষ্য নেই, কোনো আশাও নেই, লজ্জাজনক পরাজয়ের অনেকটা সন্নিকটে তাদের সেনারা।
ইসরাইলের নৃশংস হামলায় মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে গাজা। মিলছে একের পর এক গণকবর। ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে ভয়াবহ আগ্রাসন চালিয়েও মৃত্যু আর ধ্বংস ছাড়া কিছুই করতে পারেনি বর্বর ইসরাইলি সেনারা। দমাতে পারেনি ফিলিস্তিনের শক্তিশালী বিদ্রোহী সংগঠন হামাসকেও।
গাজা যুদ্ধের ২০০ দিন উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার টেলিভিশনে প্রচারিত এক বিবৃতিতে এমন বক্তব্য দিয়েছেন হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জাদ্দিন আল-কাসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু উবায়দা।
লেবাননের সংবাদ মাধ্যম আল-মায়েদিনের প্রতিবেদন অনুসারে, ভিডিও ভাষণে আবু উবায়দা আরও বলেছেন, গাজায় যুদ্ধের ২০০ দিন পর দখলদার বাহিনী বিশ্বকে বোঝাতে চাচ্ছে, তারা সব প্রতিরোধ গ্রুপকে নির্মূল করে ফেলেছে। এটা একটি ভয়াবহ মিথ্যা। তারা গাজার বালিতে পুরোপুরি আটকে গেছে। ইসরাইলি বাহিনী এখন গাজায় তার ভাবমর্যাদা পুনরুদ্ধার আর পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরাইলের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিরোধ পর্বতের মতোই অটল রয়েছে বলেও জানান তিনি।
উবায়দা বলেছেন, আমাদের ভূমিতে যতক্ষণ দখলদারদের আগ্রাসন থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আঘাত আর প্রতিরোধ অব্যাহত থাকবে। ফলে এখান থেকে ইসরাইলি বাহিনী লজ্জা আর পরাজয় ছাড়া আর কিছুই অর্জন করতে পারবে না।
৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ইসরালি সেনাবাহিনী অব্যাহতভাবে গাজাসহ বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। হামাসকে নির্মূল করার অজুহাতে চালানো সাড়ে ছয় মাসের এই হামলায় ফিলিস্তিনে ৩৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন লক্ষাধিক। যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ৩৪ হাজার ২৬২ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৭৭ হাজার ২২৯ জন আহত হয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে পুরো বিশ্ব থেকে বিশেষ করে তাদের মিত্র হিসেবে পরিচিত দেশগুলো থেকেও যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানানো হচ্ছে। কিন্তু তাতে কোনো ধরনের সমঝোতায় আসতে রাজি নন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ফলে ইসরাইলকে এখন ইরান, লেবাননের হিজবুল্লাহসহ ইয়েমেনের হুথিকেও মোকাবিলা করতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে ইসরাইল বড় ধরনের ফাঁদে পড়ে গেছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরাও।
এদিকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজাতে ইসরাইলের হামলা চলাকালীন সময়েই নতুন এক সিদ্ধান্তের কথা জানাল জ্যামাইকা। ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে ক্যারিবীয় অঞ্চলের দেশটির সরকার। ইসরাইলের যুদ্ধ এবং গভীরতর মানবিক সংকট নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই এ সিদ্ধান্তের কথা জানাল দেশটি। জ্যামাইকার পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্যবিষয়ক মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়। বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরা।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জাতিসংঘ সনদের মূলনীতির প্রতি প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রগুলো নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পাশাপাশি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের স্বীকৃতি প্রদান করতে চায়। এ বিষয়ে জ্যামাইকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী কামিনা জনসন স্মিথ বলেন, তার দেশ সামরিক পদক্ষেপের পরিবর্তে কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধান দেখতে চায়। এর আগে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি দিতে সম্মত হয়েছিল স্পেনসহ ইউরোপের চারটি দেশ। অন্য তিনটি দেশ হলো আয়ারল্যান্ড, মাল্টা ও স্লোভেনিয়া। ইতোমধ্যে তারা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রাথমিক পদক্ষেপ নিয়েছে।