প্রকাশিত: এপ্রিল ১৮, ২০২৪, ১০:৪২ পিএম
হামলার প্রতিশোধ নিতে ইরান যে এত শক্তি প্রয়োগ করবে, তা বুঝতে পারেনি ইসরাইল। বিষয়টি নিয়ে খুবই সহজ হিসাব ছিল তাদের। ইসরাইল মনে করেছিল, ইরান শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া দেখাবে না। কিন্তু সেই চিন্তা একদম ঠিক ছিল না।
এ ধরনের ধরনের বক্তব্য নিউইয়র্ক টাইমসকে দিয়েছেন কয়েকজন মার্কিন কর্মকর্তা। এক ইসরায়েলি কর্মকর্তার বক্তব্য উদ্ধৃত করে মার্কিনিরা বলেছেন,
কনস্যুলেটে হামলা চালানোর মাত্র কয়েক মিনিট আগে যুক্তরাষ্ট্রকে এ ব্যাপারে ইসরায়েল অবহিত করে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ক্ষিপ্ত হন বলে জানায় নিউইয়র্ক টাইমস।
সংবাদমাধ্যমটিকে দুই ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কনস্যুলেটে হামলা চালানোর পরিকল্পনা আরও দুই মাস আগে করা হয় এবং গত ২২ মার্চ ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা এটির অনুমোদন দেয়। যদিও হামলার পরপর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছিলেন, তিনি এ ব্যাপারে কিছু জানেন না। তবে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভাই এটির অনুমোদন দেয়। কিন্তু কনস্যুলেটে হামলার পর ইরান পাল্টা হামলা চালাতে এত শক্তি প্রয়োগ করবে, এটি ইসরায়েল একদমই বুঝতে পারেনি।
তারা তাদের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে বলেছিল, ইরান ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে খুব বেশি হলে ১০টি সারফেস টু সারফেস ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে পারে। এর পর গত সপ্তাহে তারা নতুন পর্যবেক্ষণে জানায়, ইরান থেকে সর্বোচ্চ ৬০ থেকে ৭০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে পারে। কিন্তু ইরান কয়েকশ ড্রোন এবং একশরও বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়বে, এটি তারা কল্পনাও করেনি।
এদিকে চলতি মাসে ইরানের হামলার জবাব দেবে না ইসরায়েল। পাসওভার উৎসব শেষ হওয়ার আগে ইরানে হামলা চালাবে না ইসরায়েল। আর এটি শেষ হবে ৩০ এপ্রিল। এক মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে মূলত এ কথা জানিয়েছে এবিসি নিউজ। তবে তিনি এটাও জানিয়েছেন, এ সিদ্ধান্ত যে কোনো সময় বদলে যেতে পারে।
অন্যদিকে, ইরানের সেনাপ্রধান কমান্ডার মেজর জেনারেল আব্দোলরহিম মৌসাভি বলেছেন, ইরানের স্বার্থের বিরুদ্ধে কোনো আগ্রাসন চালানো হলে কঠোরভাবে তার জবাব দেওয়া হবে। এই জবাব এমন হবে, তাদের অনুতাপ করতে হবে। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার বদলা নিতে পাল্টা হামলা চালানোর ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। এই প্রেক্ষাপটে বুধবার তেহরানে ইরানের জাতীয় সেনা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের ফাঁকে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন দেশটির সেনাপ্রধান।
এ ছাড়া ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জোরদার করার বিষয়ে বুধবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারা। ইসরায়েলে তেহরানের নজিরবিহীন ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর নেতারা এ সিদ্ধান্ত নিলেন। একই সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা।