প্রকাশিত: এপ্রিল ১৫, ২০২৪, ১০:৫০ পিএম
দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে ইসরাইলি হামলায় চরম ক্ষেপেছে তেহরান। ইরান প্রতিশোধ নিয়েছে ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করে। কিন্তু বলা হচ্ছে, ক্ষেপণাস্ত্রগুলো কাবু করতে পারেনি ইসরাইলকে। কেননা, তেল আবিবের প্রতিরক্ষায় ঢাল হয়ে পাশে ছিল তার মিত্র দেশগুলো। এ তালিকার যে দেশটি নিয়ে বেশি আলোচনা ও সমালোচনা হচ্ছে তা হলো জর্ডান।
যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি কিছু আরব দেশগুলো রেখেছে সক্রিয় ভূমিকা। সৌদি আরবের পাশাপাশি ইরানের সেই ড্রোন হামলাকে নস্যাৎ করার জন্য ‘দেহরক্ষীর’ মতো পাশে ছিল প্রতিবেশী দেশ জর্ডানও। আরব দেশ হয়েও ইসরাইলের সহযোগী শক্তি হিসাবে জর্ডানের এমন অবস্থান ছিল রীতিমতো অবাক করার মতো। আলজাজিরা, জেরুজালেম পোস্ট
মধ্যপ্রাচ্যের মতো অশান্ত অঞ্চলে জর্ডান অপেক্ষাকৃত একটি দুর্বল দেশ। ১৯৯১ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধের পর আঞ্চলিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে জর্ডান। পাশাপাশি সামরিক এবং অর্থনৈতিক দুদিক থেকেই নড়বড়ে হয়ে পড়ে তাদের অবস্থান। ফলে যুদ্ধবিগ্রহগ্রস্ত অঞ্চলটিতে গা বাঁচিয়ে চলতে হয় দেশটিকে। এমনকি আর্থিকভাবে সাহায্যের জন্যও জর্ডানকে অন্য দেশের দারস্থ হতে হয়।
অন্যদিকে ইসরাইলের সঙ্গে সীমান্ত ভাগাভাগি করে জর্ডান। ফলে ইসরাইলের সঙ্গে যে কোনো বৈরী সম্পর্ক অর্থনৈতিকভাবে দেশটিকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। আবার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও মিত্রতার সম্পর্ক জর্ডানের। ফলে নিজেদের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং আত্মরক্ষার স্বার্থেই ইরানের হামলায় ইসরাইলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে দেশটি।
এছাড়াও ইসরাইলের পাশে দাঁড়ানোর পেছনে জর্ডানের কূটনৈতিক বিষয় ছাড়াও পেছনে রয়েছে দীর্ঘ ইতিহাসও। এর মধ্যে রয়েছে ইসরাইল-জর্ডান শান্তি চুক্তি। ওয়াদ্দি আরাবা নামে সেই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয় ১৯৯৪ সালে ২৬ অক্টোবর। এই চুক্তিটি দুই দেশের মধ্যে ভূমি, পানি, ব্যবসা এবং ভ্রমণের ক্ষেত্রে সম্পর্ক স্থাপিত করে। এই চুক্তিটির আরও একটি অঙ্গীকার ছিল কোনো দেশই তাদের ভূমি ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশকে আক্রমণ করতে দেবে না। ফলে শনিবার এ হামলার পর রোববার নিজেদের অবস্থান নিয়ে বক্তব্য দেয় জর্ডান সরকার।
সেই বিবৃতিতে বলা হয়, তাদের এই সামরিক পদক্ষেপ নিজেদের আত্মরক্ষার জন্য করা হয়েছে, ইসরাইলের সুবিধার জন্য নয়। সেই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত রাতে আমাদের আকাশসীমায় প্রবেশ করা ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্রগুলো আমাদের নাগরিকদের এবং আবাসিক ও জনবহুল এলাকার নিরাপত্তাকে বিপন্ন না করেই প্রতিরোধমূলকভাবে মোকাবিলা করা হয়েছে।
জর্ডান সরকার আরও যোগ করেছে, তাদের সামরিক বাহিনী নিজ দেশের নাগরিক, আকাশসীমা এবং ভূখণ্ডের প্রতিরক্ষায় যে কোনো পক্ষের ভবিষ্যতের আক্রমণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে। তবে জর্ডানের এমন অবস্থানে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে দেশটিকে নিয়ে। অনেকেই বিষয়টি নিয়ে খেপেছে। অনেকে আবার হাস্যরসাত্মকভাবে নিন্দা করছে দেশটির। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী কেউ কেউ ইসরাইলি সামরিক ইউনিফর্ম পরা জর্ডানের শাসক রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহর ছবি প্রকাশ করছে।