প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৪, ০৭:৪৪ পিএম
পাকিস্তান মুসলিম লিগের (পিএমএল-এন) উদাসীনতার কারণেই সরকার গঠনের প্রক্রিয়ায় অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। সরকার গঠনের বিষয়ে কেউই তাদের অবস্থান পরিবর্তন না করলে বিপজ্জনক অচলাবস্থা তৈরি হতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব মন্তব্য করেছেন তিনি।
বিলাওয়াল বলেন, আমরা আমাদের অবস্থানে অনড় আছি, অন্য কেউ যদি তাদের অবস্থান পরিবর্তন করতে চায় তবে অগ্রগতি হতে পারে। যদি কেউ তাদের অবস্থান পরিবর্তন করতে প্রস্তুত না হয় তবে খুব বিপজ্জনক অচলাবস্থা তৈরি হতে পারে। এর ফলে যা ঘটবে তা গণতন্ত্র, অর্থনীতি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য কল্যাণকর হবে না।
তিনি আরও বলেন, পিপিপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে আমাদের কাছে যারা এসেছে তাদের সঙ্গে কথা বলব। আমাকে যদি পিএমএল-এনকে ভোট দিতে হয়, আমি আমার শর্ত অনুযায়ী তা করব। কীভাবে (এন) লীগের শর্তে ভোট দিতে হবে?
বিলাওয়াল বলেন, দেশের জনগণ একক কোনো দলকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেয়নি। জনগণ এমন একটি সিদ্ধান্ত দিয়েছে, যার বিষয়ে সকল অংশীদারদের ঐকমত্যে আসতে হবে। রাজনৈতিক অংশীদারদের একসাথে বসে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
তার মতে, সরকার গঠনে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিলে সেটি অবশ্যই ভালো হতো। পাকিস্তানের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে নানান প্রশ্ন উঠছে।
তবে সরকার গঠনের জন্য পিপিপি তাড়াহুড়ো করবে না বলে উল্লেখ করে বিলাওয়াল বলেন, কেউ (পিএমএল-এন) যদি অবস্থান পরিবর্তন করে, তাহলে অগ্রগতি হতে পারে।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানে নির্বাচনের দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনও সরকার গঠন করা সম্ভব হয়নি। দেশটির দুই রাজনৈতিক দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ও পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) মাঝে জোট সরকার গঠনের আলোচনা চললেও কোনও সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি। রাজনৈতিক এই অচলাবস্থার পেছনে দল দুটির নেতারা পরস্পরকে দায়ী করেছে।
পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির মোট আসন সংখ্যা ২৬৬টি, তার মধ্যে নির্বাচন হয়েছে ২৬৫টি আসনে। কোনো দল যদি সরকার গঠন করতে চায়, তাহলে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির অন্তত ১৩৩টি আসনে সেই দল বা জোটকে জয়ী হতে হবে।
কিন্তু নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং বর্তমানে কারাবন্দী নেতা ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই)। দলটির প্রার্থীরা ৯২টি আসন পেয়েছে। পিটিআইয়ের পর এই তালিকায় যথাক্রমে রয়েছে পিএমএল-এন, তারা ৭৫টি আসন পেয়েছে। আর পিপিপি পেয়েছে ৫৪টি আসন।
এছাড়া মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট (এমকিউএম) ১৭টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম- ফজলুর (জেইউআইএফ) ৪টি এবং স্বতন্ত্রপ্রার্থীরা পেয়েছেন ৯টি আসন।
অর্থাৎ কোনো দলই এককভাবে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম আসন পায়নি। এই পরিস্থিতিতে জোট সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা শুরু হয় পিএমএল-এন এবং পিপিপির মধ্যে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সাবেক ক্ষমতাসীন দল দুটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারেনি।