প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০২৪, ০৭:৫৬ এএম
রাজধানী রিয়াদে শুধু দেশের অমুসলিম কূটনীতিকদের জন্য প্রথমবারের মতো মদের দোকান খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে সৌদি আরব। নতুন এই মদের দোকানটি রিয়াদের কূটনৈতিক কোয়ার্টারে অবস্থিত। মূলত এই অঞ্চলটিতেই দূতাবাস এবং কূটনীতিকরা বসবাস করেন। বুধবার রয়টার্সের হাতে পাওয়া একটি নথি এবং মদের দোকান স্থাপনের পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত সূত্র এই তথ্য জানিয়েছে।
সূত্রের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, আগামী সপ্তাহগুলোতে দোকান খোলার সম্ভাবনা রয়েছে। রয়টার্সের হাতে পাওয়া নথি অনুযায়ী, অমুসলিমদের জন্য মদ ক্রয় ‘কঠোরভাবে সীমাবদ্ধ’ থাকবে। মদ পেতে হলে প্রথমে গ্রাহকদের একটি মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হবে। এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি ক্লিয়ারেন্স কোড পেলে প্রত্যেক মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ মদ কিনতে পারবেন রেজিস্ট্রেশনকারীরা। তবে অন্য অমুসলিম প্রবাসীরা এই দোকানে প্রবেশাধিকার পাবে কি না তা নথিতে স্পষ্ট উল্লেখ নেই। পর্যটন ও অন্যান্য ব্যবসা খাতকে সমৃদ্ধ করতে মদের দোকান খোলার মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। এছাড়া এটি মোহাম্মদ বিন সালমানের ভিশন-২০৩০ এরও একটি অংশ। তার ইচ্ছা ২০৩০ সালের পর সৌদির অর্থনীতিকে তেল বাণিজ্যের প্রভাব থেকে মুক্ত করবেন।
সৌদি আরবে মদ্যপানের বিরুদ্ধে কিছু কঠোর আইন রয়েছে। এই আইনের অধীনে শত শত বেত্রাঘাত, নির্বাসন, জরিমানা বা কারাদণ্ডের শাস্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমনকি দেশটির প্রবাসীরা মদ্যপানের শাস্তি হিসাবে নির্বাসনের মুখোমুখি হন। যদিও পরবর্তী সময়ে এই আইনের সংস্কার করে বেত্রাঘাতের পরিবর্তে জেলের সাজার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বর্তমানে দেশটিতে যেসব অমুসলিম কূটনীতিক রয়েছেন তারা কূটনৈতিকভাবে অথবা কালোবাজার থেকে মদ কিনে থাকেন। সৌদির রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া চলতি সপ্তাহে জানিয়েছে, সরকার কূটনৈতিক চালানের মধ্যে মদ আমদানিতে নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করছে, যা নতুন দোকানের চাহিদা বাড়িয়ে তুলতে পারে। রোববার আরব নিউজ জানিয়েছে, সৌদি আরবের অভ্যন্তরে অমুসলিম দেশগুলোর দূতাবাসের মাধ্যমে প্রাপ্ত বিশেষ পণ্য ও অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়ের অনুপযুক্ত বিনিময় প্রতিরোধের জন্য নতুন প্রবিধান আমদানি রোধ করবে।
সৌদি আরব সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কঠোর সামাজিক বিধিনিষেধ অনেকটাই শিথিল করেছে, যেমন পাবলিক প্লেসে পুরুষ ও নারীদের আলাদা করা এবং নারীদের কালো পোশাক বা আবায়া পরতে বাধ্য করা। ক্ষমতায় থাকার জন্য সৌদি যুবরাজ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন। যেমন দেশকে অধর্মীয় পর্যটনের জন্য উন্মুক্ত করা, কনসার্ট ও নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি দেওয়া, সেসঙ্গে ভিন্নমত ও রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে ক্র্যাকডাউন।