প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৪, ২০২৪, ০৭:৪১ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রের আগামী নির্বাচনের প্রভাব একাধিক কারণে সুদূরপ্রসারি হতে পারে। বিশেষ করে নেতৃত্বের ক্ষেত্রে প্রজন্মের পরিবর্তন রাজনীতির গতিপ্রকৃতি বদলে দিতে পারে। রাজনীতির আঙিনায় কমলা হ্যারিস, বিবেক রামস্বামী ও নিকি হ্যালির মতো তিন ভারতীয় বংশোদ্ভূত রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে হিসাব-নিকাশ মার্কিন রাজনীতির বিবর্তন স্পষ্ট করে দিচ্ছে।
চলতি বছর মার্কিন নির্বাচন ঘিরে বাকি বিশ্বের আগ্রহের মধ্যে একটা মরিয়া ভাব টের পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হলে তিনি দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোর ওপর জোরালো আঘাত হানতে পারেন বলে বিশেষজ্ঞদের অনেকে আশঙ্কা করছেন। আমূল বদলে যেতে পারে সেই দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ ও বহির্বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক।
অন্যদিকে বিভিন্ন কারণে ভোটারদের মনে প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের ভাবমূর্তি যথেষ্ট অনুকূল নয়। ফলে তার পুনর্নির্বাচনের সম্ভাবনা প্রশ্নের মুখে পড়ছে। অশীতিপর বাইডেন পুনর্নির্বাচিত হলেও আর কত দিন তিনি কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন, সেই বিষয়েও সংশয় রয়েছে।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বয়স ৮১। ট্রাম্পের বয়স ৭৭৷ ফলে তাদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে সম্পূর্ণ কার্যকাল পূরণ করার ক্ষমতা আছে কিনা, এ বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
রিপাবলিকান দলের মনোনয়নের দৌড়ে ট্রাম্পের পথ থেকে একের পর এক বাধা দূর হয়ে যাচ্ছে। একাধিক প্রার্থী দলের প্রাথমিক বাছাইয়ের প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যবসায়ী বিবেক রামস্বামী ও ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে রন ডিস্যান্টিস রণে ভঙ্গ দিয়েছেন। রামস্বামী ট্রাম্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে পারেন- এমন জল্পনা-কল্পনাও চলছে।
ট্রাম্পেরই কিছুটা ‘দায়িত্বশীল’ সংস্করণ হিসেবে পরিচিত ডিস্যান্টিসও শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পের প্রার্থিতার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন। ফলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী, জাতিসংঘে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন প্রতিনিধি নিকি হ্যালি। তিনি নিজেকে রিপাবলিকান দলে ট্রাম্পের একমাত্র বিকল্প। তিনি ট্রাম্প ও বাইডেনের মতো ‘বৃদ্ধ’ প্রার্থীদের বদলে তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বাইডেন ও ট্রাম্পের বার্ধক্যের বিষয় আলোচনায় আসায় ভাইস প্রেসিডেন্ট পদ বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে। এক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত বাইডেনের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস তেমন নেতৃত্বের পরিচয় দেখাতে পারেননি। নিজের দপ্তরে কেলেঙ্কারির ফলেও কিছুটা কোণঠাসা হয়ে গেছেন।
অন্যদিকে ট্রাম্প দলের মনোনয়ন পেলে কাকে শেষপর্যন্ত ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী করবেন, তার ওপরও ভোটারদের সিদ্ধান্ত কিছুটা নির্ভর করতে পারে। বাইডেন শেষ মুহূর্তে তার দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য আরও আকর্ষণীয় ও গ্রহণযোগ্য কোনো ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর নাম ঘোষণা করলে হয়তো কিছুটা বাড়তি সমর্থন আদায় করতে পারবেন।
ইউক্রেন যুদ্ধ ও মধ্যপ্রাচ্য সংকটের মতো আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে বাইডেনকে এত ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে যে, তিনি নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার মতো যথেষ্ট সময় পাচ্ছেন না। একমাত্র বিদেশে মার্কিন সৈন্য মোতায়েন বা প্রত্যাহারের মতো সিদ্ধান্ত নিয়েই তার মাথাব্যথা বেশি দেখা যায়; যা মার্কিন ভোটারদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের তালিকায় পররাষ্ট্রনীতির স্থান অনেক পেছনে।