• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
মডার্ন ডিপ্লোমেসির নিবন্ধ

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টেকসই অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১০, ২০২৩, ০৩:৫৬ এএম

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টেকসই অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথে বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বিশ্বব্যাপী রাষ্ট্র পরিচালনা ও নেতৃত্বের ইতিহাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা এক দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী নেতা। যার বিচক্ষণ নেতৃত্বে অভূতপূর্ব সাফল্যের পথে এগিয়ে চলেছে দেশ।

দেশের আর্থ-সামাজিক কাঠামোকে তিনি এমনভাবে রুপান্তর করেছেন যা শুধু দেশেই নয় বরং বিদেশেও সমানভাবে প্রশংসিত হয়েছে। দেশের প্রতিটি সেক্টরে শেখ হাসিনা যেভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাতে তার শাসনামলে সামগ্রকিভাবে বাংলাদেশে উন্নয়ণের চূড়ায় পৌঁছেছে।  

তার নিত্য-নতুন উদ্ভাবনী ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত এবং কৌশলগত পদক্ষেপের মাধ্যমে একটি কৃষিপ্রধান অর্থনীতির দেশ থেকে বাংলাদেশ ক্রমবর্ধমান শিল্পোন্নত দেশে পরিনত হয়েছে। দেশের জিডিপির হার বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশগুলোর অন্যতম বাংলাদেশ।

দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির দিকে লক্ষ্য রেখে শেখ হাসিনা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন অবকাঠামোগত উন্নয়নের ওপর। পদ্মা ব্রিজ এবং রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মত প্রকল্প হাতে নেয়ার মাধ্যমে টেকসই ও দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নকে নিশ্চিত করেছেন। যার মধ্য দিয়ে নিজেদের সক্ষমতাকে আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরতে পেরেছে বাংলাদেশ।

পরিবহণ, জ্বালানি ও প্রযুক্তি খাতে উল্লেখযোগ্য বিনিযোগ করার মাধ্যমে বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ যেমন বেড়েছে তেমনি দেশকে একটি আর্ন্তজাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের কেন্দ্রে পরিনত করেছেন। 

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ও তত্ত্বাবধানে কৃষিখাতে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে। এই খাতকে গুরুত্ব দেয়ায় ৯০ দশক থেকে একুশ শতক পর্যন্ত উৎপাদন যথেষ্ট পরিমানে বেড়েছে। সার উৎপাদন ও কৃষি ব্যবস্থার আধুনিকায়নের জন্য বাংলাদেশ শুধু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে তাই নয়, বরং আর্ন্তজাতিকভাবেও বাংলাদেশ সামনের সারিতে চলে এসেছে।

দেশ এখন চাল ও মাছ উৎপাদনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। পাট উৎপাদনে দ্বিতীয়, শাকসবজিতে চতুর্থ এবং আম উৎপাদনে বিশ্বে অষ্টম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।

দূরদৃষ্টি ও সাম্যতা শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রধান বৈশিষ্ট। মানব সম্পদের উন্নয়নের কথা বিবেচনা করে সবার আগে দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। সর্বস্তরে শিক্ষার প্রচলন করেছেন। নারী পুরুষ ও শিশুদের স্বাস্থ্য সেবা বাড়িয়েছেন। এমন একটি সমাজ কাঠামো গড়ে তুলতে চেয়েছেন যেখানে প্রতিটি মানুষ নিজেকে উন্নত করার সুযোগ পাবে।

শেখ হাসিনার সরকার সবসময় সামাজিক নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দিয়েছে। এজন্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, সহায় সম্বলহীন মানুষ, বয়স্ক মানুষ, বিধবা, তালাকপ্রাপ্তা, প্রতিবন্ধী ও নিঃস্ব মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতার ব্যবস্থা করেছেন। চালু করেছেন আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং একটি ঘর একটি খামার প্রকল্প।

এসবের মধ্যদিয়ে দেশের প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার ওপরে উঠে এসেছে। বৈশ্বিক দৃষ্টিতে দারিদ্র্য দূরীকরণে বাংলাদেশ একটি রোল মডেল হিসেবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

লিঙ্গ সমতা সৃষ্টি বা নারী-পুরুষ বৈষম্য দূরীকরণ শেখ হাসিনা সরকারের যুগান্তকারী পদক্ষেপগুলোর একটি। শেখ হাসিনার অনুপ্রেরণা ও সদিচ্ছায় আজ সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে। রাজনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষাসহ সমাজের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে পুরুষের পাশাপাশি সমানভাবে কাজ করছে নারী যা নারীর ক্ষমতায়ণকে নিশ্চিত করেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেকদিন থেকেই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নের কথা বলে আসছেন। তৃণমূলের মানুষ যাতে ডিজিটাল সুবিধার আওতায় আসতে পারে এজন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে হাসিনা সরকার। ডিজিটাল বৈষম্য না করে প্রত্যন্ত প্রামগঞ্জ পর্যন্ত ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে এই সেবা।

২০০৯ সালে ‘ভিশন ২০২১’-এর কথা বলেন শেখ হাসিনা। এই সময়ের মধ্যে আইসিটি বা তথ্য প্রযুক্তি খাতকে সমৃদ্ধ করার মধ্যদিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি। বর্তমানে তার যোগ্য নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশে পরিনত হচ্ছে।

এরই মধ্যে পরিকল্পিত ৩৯টি হাই-টেক পার্কের মধ্যে ৯টি গড়ে তোলা হয়েছে। এক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট এর কথা না বললেই নয়। দেশে ইন্টারনেট সেবা এবং টেলিভিশন চ্যানেলগুলো প্রচারের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের ব্যবহার নতুন দুয়ার  খুলে দিয়েছে।

বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় যেমন জলবায়ু পরিবর্তনের মত ইস্যুতে শেখ হাসিনার সরকার অগ্রণী ভুমিকা পালন করেছে। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সবসময় সচেষ্ট ছিলেন হাসিনা।

পরিবেশ সুরক্ষা নিয়ে শেখ হাসিনা আর্ন্তজাতিক বিভিন্ন ফোরামে অংশ নিয়েছেন এবং নিজের মতামত তুলে ধরেছেন। যা একটি নিরাপদ ভবিষ্যত গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তার দৃঢ়তা ও সদিচ্ছার প্রকাশ ঘটিয়েছে।

শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। হাসিনার কূটনৈতিক পদক্ষেপ প্রতিবেশি দেশ ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বকে সুদৃঢ় করেছে। ভারতের সঙ্গে দীর্ঘদিনের স্থল সীমান্ত চুক্তি এবং পানি বন্টন ইস্যুতে শেখ হাসিনা যে কৗশলগত ভুমিকা পালন করেছেন তা শুধু দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককেই উন্নত করেনি বরং দু’দেশের বিরোধপূর্ণ সমস্যার সমাধান করেছে।

হাসিনা সরকারের নেয়া পদক্ষেপেই বাংলাদেশ সমুদ্রসীমা অনুযায়ী ১ লাখ ৩১ হাজার ৯৬ স্কয়ার কিলোমিটার জয় করেছে দেশ। ভারতের সঙ্গে ১১১টি ছিটমহলসহ ১৬ হাজার ৭শ ৫১ একর জমি সংক্রান্ত সীমান্ত সমস্যার সমাধান করেছেন হাসিনা।

হাসিনার নেতৃত্বই মিয়ারমারের সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে যুদ্ধে জড়াতে দেয়নি। যদিও আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে এদেশে ঠেলে দিয়েছে মিয়ানমার। বরং এত বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে নিজের দেশে আশ্রয় দিয়ে তিনি যে মানবিকতা ও উদারতার পরিচয় দিয়েছেন তা বিশ্ব শান্তি রক্ষায় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

ভূ- রাজনীতির ক্ষেত্রেও শেখ হাসিনা কূটনৈতিক বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন। তাতে বিশ্বে অত্যন্ত মর্যাদা ও প্রশংসায় ভূষিত হয়েছেন তিনি। বিশ্ব নেতৃত্বের ইতিহাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার শাসনকাল অনুসরণীয় হয়ে থাকবে।

অর্থনৈতিক উন্নয়নে তার দূরদর্শীতা, সামাজিক কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে তার অঙ্গীকার, পরিবেশ সুরক্ষায় আপসহীনতা এবং সুক্ষ্ম কূটনীতির মধ্যদিয়ে বিশ্বে একজন দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী নেতা হিসেবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে উজ্বল করেছেন শেখ হাসিনা। 

 

জেকেএস/

আর্কাইভ