• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

তিস্তার স্রোতে অবরুদ্ধ সিকিম, মৃত বেড়ে ১৪

প্রকাশিত: অক্টোবর ৬, ২০২৩, ০১:১৭ এএম

তিস্তার স্রোতে অবরুদ্ধ সিকিম, মৃত বেড়ে ১৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

হঠাৎ বন্যায় ভয়াবহ দুর্যোগের মুখে পড়েছে ভারতের পার্বত্যরাজ্য সিকিম। তিস্তার তীব্র স্রোতে জায়গায় ধসে পড়েছে যান চলাচলের জাতীয় সড়কগুলো।

বৃহস্পতিবার সিকিমের একজন সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন, বন্যায় ১৪টি সেতু ভেঙে পড়েছে। সীমান্ত সড়ক সংস্থার অধীনে নয়টি এবং রাজ্য সরকারের অধীনে পাঁচটি। যোগাযোগব্যবস্থা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন। রাজ্যের বিভিন্ন অংশে তিন হাজারেরও বেশি পর্যটক আটকা পড়েছেন।

এক কথায় তিস্তার সর্বগ্রাসী স্রোতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে গোটা সিকিম। এ বিপর্যয়কে ‘দুর্যোগ’ হিসাবে ঘোষণা করেছে সিকিম সরকার।

ভারতের গণমাধ্যমে এদিন বলা হয়েছে, প্রবল বৃষ্টিতে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় নিখোঁজ ২৩ ভারতীয় সেনাদের একজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। 
ভারতীয় সেনাবাহিনী  জানায়, সিংটাম শহরের কাছে বারডাং থেকে নিখোঁজ হওয়া সেনাদের মধ্যে উদ্ধার করা সেনার অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। তবে অন্যদের কোনো হদিস এখনো মেলেনি। হিমালয়ার ছোট এই রাজ্যে বুধবারের এ বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ জনে। নিখোঁজ মানুষের সংখ্যাও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০২ জনে। নিখোঁজ শতাধিক মানুষের মধ্যে ২২ জন ভারতীয় সেনা।

বৃহস্পতিবার সকালেও ভয়াবহ পরিস্থিতি সিকিমে। ২৯ মাইল এলাকার কাছে বড়সড় ধস নামে। ধসের ফলে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক এখন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। তিস্তা ব্রিজ থেকে সিকিম যাওয়ার পথে বেশ কিছু জায়গায় বড় আকারের ধসের কারণে জাতীয় সড়ক নিচের দিকে বসে গেছে। 
বুধবার দুপুর নাগাদ ২৮ মাইল এলাকায় ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের রাস্তায় ধস নামে। জাতীয় সড়কের বিভিন্ন জায়গা ধীরে ধীরে তিস্তার গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে।

মঙ্গল ও বুধবার মাঝরাতের পরে রাজ্যের লাচেন উপত্যকার লোনাক হ্রদের উপরে মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়। তার সঙ্গে গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাতও ছিল। মেঘভাঙা বৃষ্টি বলতে সাধারণত অতি ভারি বৃষ্টি, যা একটি নির্দিষ্ট এলাকায় হয়।

আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের মতে, এক ঘণ্টায় ১০০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ১০ সেন্টিমিটার অথবা আধঘণ্টায় পাঁচ সেন্টিমিটার বা তার বেশি বৃষ্টি হলে সেটাকেই মেঘভাঙা বৃষ্টি বা ক্লাউড বার্স্ট বলা হয়।

মাঙ্গান জেলার চুংথাং, গ্যাংটক জেলার ডিকচু ও সিংটাম এবং পাকিয়ং জেলার রাংপো থেকে আহত ও নিখোঁজদের খবর পাওয়া গেছে। ২৫ জনেরও বেশি মানুষকে বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

মাঙ্গান জেলার সাংকালান ও টুং-এ আকস্মিক বন্যায় ফাইবার ক্যাবল লাইন ধ্বংস হওয়ার কারণে চুংথাং এবং উত্তর সিকিমের বেশির ভাগ অংশে মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ব্রডব্যান্ড সংযোগ বিঘ্নিত হয়েছে। চুংথাংয়ের পুলিশ স্টেশনটিও ধ্বংস হয়ে গেছে। জলমগ্ন বাড়িঘর। কিছু জায়গায় পানির তোড়ে সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে বড় বড় বিল্ডিং। কাদাস্রোতের তলায় চাপা পড়ে রয়েছে বহু বসতি, রাস্তাঘাট, সেনাছাউনি।

পরিস্থিতি জরিপ করে আগামী ৮ অক্টোবর পর্যন্ত পাকিয়ং, গ্যাংটক, নামচি এবং মঙ্গনের সব এলাকায় স্কুল বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চালু করা হয়েছে একাধিক জরুরি পরিষেবার নম্বর। খোলা হয়েছে ২২টি ত্রাণ শিবির। দুই হাজারের বেশি মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে।

 

সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন

আর্কাইভ