• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

মণিপুর নিয়ে ভারতের সংসদ উত্তপ্ত, অধিবেশন পণ্ড

প্রকাশিত: জুলাই ২৫, ২০২৩, ০১:৩৭ এএম

মণিপুর নিয়ে ভারতের সংসদ উত্তপ্ত, অধিবেশন পণ্ড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মণিপুর রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে সরগরম ভারত। দেশটির প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি ও আলোচনার দাবিতে আজ সোমবারও সংসদের উভয় কক্ষের অধিবেশন বারবার ভন্ডুল হয়েছে। বিরোধীদের সমস্বর দাবি, সভার সব কাজ বন্ধ রেখে মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীকে বিবৃতি দিতে হবে। সরকারের বক্তব্য, তারা আলোচনায় রাজি, তবে তা হবে অধ্যক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী।

এই পরস্পরবিরোধী দাবির মধ্যে রাজ্যসভায় আম আদমি পার্টির (আপ) সদস্য সঞ্জয় সিংকে চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় সাময়িক বরখাস্ত করে দেন। চলতি অধিবেশনে তিনি আর সভায় উপস্থিত থাকতে পারবেন না। প্রতিবাদে বিরোধীরাও চেয়ারম্যানের ডাকা বৈঠক বর্জন করেন। বর্জন করেন সভার আলোচ্যসূচি নির্ধারণ কমিটির বৈঠকও।

আজ সোমবার সংসদীয় অধিবেশন শুরুর আগে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র পক্ষ থেকে সংসদ ভবনের বাইরে মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে বিক্ষোভ করা হয়। বিরোধীদের দাবি, মণিপুর নিয়ে যে কথা প্রধানমন্ত্রী সংসদের বাইরে বলেছেন, সংসদের ভেতরে তা তিনি বলুন।

বিরোধীদের পাল্টা হিসেবে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির সাংসদেরাও। তাঁরা ক্ষোভ দেখান বিরোধীশাসিত রাজস্থান, ছত্তিশগড়, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খন্ডসহ বিভিন্ন রাজ্যে নারী নির্যাতনের ঘটনার বিরুদ্ধে। দুই পক্ষের হাতেই ছিল বিভিন্ন পোস্টার।

শাসক দল বিজেপির এটা নতুন কৌশল। মণিপুর থেকে দৃষ্টি ঘোরানো তাদের উদ্দেশ্য। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজেই এই কৌশলের জন্ম দেন। সংসদ শুরুর দিন মণিপুর নিয়ে মৌনতা ভেঙে তিনি বলেছিলেন, দুঃখ–কষ্টে তাঁর হৃদয় বিদীর্ণ। কিন্তু শুধু মণিপুরে আবদ্ধ থেকে নয়, নারী নির্যাতনের ঘটনায় রাজস্থান–ছত্তিশগড়ের মতো বিরোধীশাসিত রাজ্যের নাম উল্লেখ করে তিনি বিষয়টিতে রাজনীতির অন্য রং লাগিয়েছিলেন। সংসদে শাসক দলও সেই প্রসঙ্গ তুলে বিরোধীদের মোকাবিলায় ব্যস্ত।

শাসক দলের দাবি, সরকার আলোচনায় প্রস্তুত, বিরোধীরা রাজি নয়। লোকসভার স্পিকার ও রাজ্যসভার চেয়ারম্যানও বারবার বলছেন সরকার আলোচনায় প্রস্তুত। কিন্তু বিরোধীরা তাতে কর্ণপাত করছে না। আজ সোমবার লোকসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও রাজ্যসভায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং দুজনই বলেন, সরকার আলোচনায় প্রস্তুত। তাঁদের অভিযোগ, বিরোধীরাই আলোচনা চাইছেন না।

সরকার ও বিরোধীরা দুই পক্ষই আলোচনা চায়। কিন্তু তাতে গুণগত পার্থক্য আছে। বিরোধীরা চায় লোকসভা ও রাজ্যসভা দুই কক্ষেই মুলতবি প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হোক। এই প্রস্তাব গৃহীত হলে সভার অন্য সব কাজ বন্ধ থাকবে। একমাত্র ওই প্রস্তাব নিয়েই সভাকে আলোচনা করতে হবে। মুলতবি প্রস্তাবে সরকারকে তিরস্কার করা যায়। বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের ব্যাখ্যা চাওয়া যায়। সরকারও জবাবদিহিতে বাধ্য থাকে।
কিন্তু সরকার মুলতবি প্রস্তাবের ওপর আলোচনা চায় না। তারা চায় স্বল্প মেয়াদের আলোচনা। এ ধরনের আলোচনায় সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা থাকে না। বিরোধীরা সরকারি জবাবের ওপর পাল্টা প্রশ্ন করতে বা ব্যাখ্যা চাইতে পারেন না। দুই বা আড়াই ঘণ্টার মধ্যে আলোচনা শেষ হয়ে যায়। সরকারকে তিরস্কার করার সুযোগও ওই প্রস্তাবে থাকে না।

 

আর্কাইভ