প্রকাশিত: জুলাই ২৪, ২০২৩, ০১:৫৫ এএম
দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়ায় শক্তিশালী প্রতিপক্ষহীন একতরফা সাধারণ নির্বাচনে ভূমিধস জয়ের দাবি করেছে ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের রাজনৈতিক দল কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (সিপিপি)। রোববার ভোটগ্রহণ শেষে নির্বাচনে জয়ের এই দাবি করেছে সিপিপি।
সমালোচকরা দেশটির এবারের সাধারণ নির্বাচনকে ‘ব্যাপক প্রতারণা’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এমনকি দেশটির শক্তিশালী কোনও বিরোধী দল এই নির্বাচনে অংশ নেননি। আর যারা নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন তাদের হুন সেনের সিপিপির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সক্ষমতা নেই।
সমালোচকরা বলছেন, হুন সেন তার বড় ছেলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে দলের ক্ষমতায় থাকার পথ পোক্ত করতেই বিরোধী শক্তিবিহীন এই নির্বাচন আয়োজন করেছেন।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স লিখেছে, কম্বোডিয়ার নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতাটি এবার হুন সেনের কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টির (সিপিপি) জন্য ছিল একক ঘোড় দৌড়ের মতো; যে দলটি যুদ্ধের বিশাল ময়দানের এক রাজনৈতিক দানব। বছরের পর বছর ধরে প্রতিদ্বন্দ্বীদের ওপর হুন সেনের নির্মম দমন-পীড়নের কারণে কোনও কার্যকর প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হয়নি দলটি।
কম্বোডিয়ার নির্বাচন কমিটি বলছে, সিপিপির সঙ্গে এবারের নির্বাচনে অংশ নিয়েছে আরও ১৭টি রাজনৈতিক দল। যদিও এই ১৭টি দলের বেশিরভাগই নাম-সর্বস্ব। তাদের কোনও দলই এর আগে ২০১৮ সালের নির্বাচনে একটি আসনেও জয় পায়নি।
বহুল বিতর্কিত এই নির্বাচনে ৮১ লাখ ভোটার ভোট দিয়েছেন বলে দেশটির নির্বাচন কমিটি জানিয়েছে। নির্বাচন কমিটির মতে, রোববারের নির্বাচনে ভোট পড়ার হার ছিল ৮৪ শতাংশ। চলতি বছরের মে মাসে কাগজে ত্রুটি থাকায় সিপিপির একমাত্র প্রতিপক্ষ ক্যান্ডেললাইট পার্টিকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।
সিপিপির মুখপাত্র সোক আইসান বলেছেন, ‘আমরা ভূমিধস জয় পেয়েছি... তবে আমরা এখন পর্যন্ত ঠিক কত আসনে জয় পেয়েছি, তা হিসেব করতে পারিনি।’
গত ৩৮ বছর ধরে কম্বোডিয়ার ক্ষমতায় আছেন ৭০ বছর বয়সী হুন সেন। নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে পশ্চিমাদের উদ্বেগকে পাত্তাই দেননি তিনি। নির্বাচনে জয়ী হলে তার বড় ছেলে হুন মানেটের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন হুন সেন। আর এর মধ্য দিয়ে সাবেক এই খেমার রুজ গেরিলার শাসনের অবসান ঘটবে কম্বোডিয়ায়।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ছেলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য কোনও সময়সীমা বেধে দেননি হুন সেন। ওই দিন তার ছেলে ‘প্রধানমন্ত্রী হতে পারে’ বলে প্রথমবারের মতো ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি। হুন সেন বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের বিষয়টি ছেলে হুন মানেটের ওপর নির্ভর করছে। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য তাকে সংসদের যেকোনও একটি আসনে জয় পেতে হবে। আর এই জয়ের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
হুন সেন বলেছেন, গত দিন দশকের মধ্যে এবারের নির্বাচনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পড়েছে। আর এর মধ্য দিয়ে বিদেশিদের ভোট নস্যাৎ করে দেওয়ার চেষ্টার প্রতিবাদ ভোটাররা ব্যালটের মাধ্যমে করেছেন।
বিএস/