প্রকাশিত: জুলাই ১০, ২০২৩, ০৫:৫৯ পিএম
ব্যক্তিগত অস্ত্র কেনার হিড়িক পড়েছে ইসরাইলে। ইসরাইলি জনগণের অজুহাত, ফিলিস্তিনিদের হাত থেকে আত্মরক্ষার স্বার্থেই অস্ত্র জড়ো করছেন তারা। ফিলিস্তিনিদের চোরাগোপ্তা হামলা থেকে সুরক্ষার প্রয়োজনকে এর কারণ হিসেবে দেখানো হচ্ছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বলছে, সাধারণ মানুষকে অস্ত্র কিনতে রীতিমতো উৎসাহিত করছে ভূখণ্ডটির নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ও।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলীয় শহর আফুলায় অস্ত্রের দোকানে প্রতিদিনই বাড়ছে বেচাকেনার পরিমাণ। সাধারণ নাগরিকরাই কিনছেন এসব অস্ত্র। অস্ত্র বিক্রির সাথে সাথে এখানেই দেয়া হয় তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ।
এক অস্ত্রের দোকানের মালিক বলেন, কখন এটা ব্যবহার করা যাবে আর কখন নিষিদ্ধ, তা জানতে হবে। এখানে সেগুলো শেখানো হয়। আপনি এটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন কিনা সেটা গুরুত্বপূর্ণ।
গত এক বছরের বেশি সময় ধরে দখলকৃত পশ্চিম তীরে ইহুদি বাহিনীর আগ্রাসন বেড়ে চলায় কয়েকবার ক্ষুব্ধ হয়ে ফিলিস্তিনিরা ইসরাইলে চোরাগোপ্তা হামলা চালায়। ছুরি বা বড়জোর নিরাপত্তা বাহিনীর কাছ থেকে কেড়ে নেয়া অস্ত্রই থাকে ফিলিস্তিনিদের সম্বল। খুব বেশি হতাহতের খবরও মেলে না এসব হামলায়। এরপরও তাদের হাত থেকে বাঁচতে আত্মসুরক্ষার পথ খুঁজছে ইসরাইলিরা।
একজন অস্ত্রের ক্রেতা জানান, নিরাপত্তা বাহিনীর বিকল্প হতে নয়, বরং পুলিশ পৌঁছানো পর্যন্ত আত্মসুরক্ষা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। আর সেজন্যই প্রয়োজন ব্যক্তিগত অস্ত্র।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বলছে, অস্ত্রের দোকানগুলোতে আগের চেয়ে বেড়েছে বেচাকেনাও। আর এই অস্ত্র কেনার ক্ষেত্রে একটা অজুহাতও দাঁড় করাচ্ছেন সাধারণ ইসরাইলিরা। বলছেন, ফিলিস্তিনিদের হাত থেকে আত্মসুরক্ষা নিশ্চিত করতেই ব্যক্তিগত অস্ত্র কেনার দিকে ঝুঁকছেন তারা।
এই যখন অবস্থা, তখন প্রশাসনও অনেকটা নীরব ভূমিকা পালন করে পরোক্ষ সমর্থন যোগাচ্ছে ব্যক্তিগত অস্ত্র কেনার এই মহোৎসবে। উল্টো অস্ত্র ব্যবহারের অনুমোদন প্রক্রিয়া সহজ করার ঘোষণার মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষকে আগ্নেয়াস্ত্র কেনায় উৎসাহ দিচ্ছে ইসরাইলের নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ও। এতে ২০২১ সালে যেখানে ইসরাইলে ব্যক্তিগত অস্ত্র কিনতে ১৯ হাজার আবেদন পড়েছিল, ২০২২ সালে তা দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে দাঁড়ায় ৪২ হাজারে।
এ অবস্থায় নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত ফিলিস্তিনিরা। এরইমধ্যে দেড় লাখের বেশি সাধারণ ইসরাইলির হাতে চলে এসেছে ব্যক্তিগত অস্ত্র। আর এতে আগের চেয়ে সহিংসতা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন সাধারণ ফিলিস্তিনিরা।
জেকেএস/