• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ন্যাটো : আল্টিমেটামের জবাবে জেলেনস্কিকে সতর্কবার্তা হোয়াইট হাউসের

প্রকাশিত: জুলাই ৭, ২০২৩, ০২:২০ এএম

ন্যাটো : আল্টিমেটামের জবাবে জেলেনস্কিকে সতর্কবার্তা হোয়াইট হাউসের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সামরিক জোট নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশনের (ন্যাটো) সদস্যপদ পাওয়ার জন্য কিছুদিন আগে জোটের নেতৃত্বকে আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তার জবাবে এবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে পাল্টা সতর্কবার্তা দিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বাসভবন ও কার্যালয় হোয়াইট হাউস।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারিন জেন-পিয়েরে বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ন্যাটোর সদস্যপদ পেতে হলে ইউক্রেনকে অবশ্যই জোটের অন্যান্য সদস্যরাষ্ট্রগুলোর মতো প্রয়োজনীয় যোগ্যতা অর্জন করতে হবে এবং সেই যোগ্যতা অর্জনের পূর্বশর্ত হলো দেশটির শাসনব্যবস্থার প্রয়োজনীয় সংস্কার। ইউক্রেন যদি তার রাষ্ট্র পরিচালনা ব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে না পারে, সেক্ষেত্রে রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধে জয়ী হলেও দেশটি ন্যাটোর সদস্যপদ পাবে না বলে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন ক্যথরিন জেন-পিয়েরে।

বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি বলেন, ‘আমাদের প্রেসিডেন্ট বার বার বলেছেন যে ন্যাটোর সদস্যপদ পেতে হলে অবশ্যই জোটের অন্যান্য সদস্যরাষ্ট্রগুলোর সমপর্যায়ের যোগ্যতা অর্জন করতে হবে ইউক্রেনকে এবং সেই যোগ্যতা অর্জনের প্রধান পূর্বশর্ত হলো অভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক সংস্কার।’

‘সেই সঙ্গে জোটের সব সদস্যরাষ্ট্রের সম্মতির ব্যাপারটিও গুরুত্বপূর্ণ। ওয়াশিংটন বরাবরই ন্যাটোর ওপেন ডোর পলিসির প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং জোটের সব সদস্যরাষ্ট্র সম্মতি দিলেই কেবলমাত্র (ন্যাটোর) সদস্যপদ পেতে পারে ইউক্রেন। (রাশিয়ার বিরুদ্ধে) চলমান যুদ্ধে জয়লাভের চেয়েও এটি গুরুত্বপূর্ণ।’

জোটের সদস্যপদ পেতে হলে কী ধরনের প্রশাসনিক সংস্কার ইউক্রেনকে করতে হবে— বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে তা ভেঙে বলেননি ক্যারিন জেন-পিয়েরে, তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এর আগে একাধিক বার দেশটির কর্মকর্তাদের দুর্নীতির দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ করেছেন। এমনকি গত মাসে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার মনে হয়, ইউক্রেন বিভিন্ন ভাবে আমাদের বোঝানোর চেষ্টা করছে যে ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সামরিক কাঠামো ও সক্ষমতা তাদের রয়েছে। কিন্তু্ এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটি হলো— সেই কাঠামো কি দুর্নীতিমুক্ত?’

প্রসঙ্গত, ইউক্রেন বিশ্বের শীর্ষ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর একটি। ২০২২ সালে দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি বৈশ্বিক সূচকে ১৪০টি দেশের মধ্যে ইউক্রেনের অবস্থান ছিল ১২৯ তম।

আগামী ১১ থেকে ১২ জুলাই ন্যাটোর সম্মেলন হবে  লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলিনাসে। সেই সম্মেলনে অতিথিরাষ্ট্র হিসেবে ইউক্রেনের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। কিয়েভ প্রত্যাশা করেছিল, ভিলিনাস সম্মেলনেই জোটের পূর্ণ সদস্যপদ পাবে ইউক্রেন।

কিন্তু ২৭ জুন গত ২৭ জুন উত্তর ইউরোপের দেশ এস্তোনিয়ার রাজধানী তাল্লিনে এক সংবাদ সম্মেলনে ন্যাটোর মহাসচিব জিনস স্টলটেনবার্গ জানান, রাশিয়া-ইউক্রেনের চলমান এই যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরই কেবল ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্যপদ প্রদানের ব্যাপারটি বিবেচনা করা হবে; তার আগে নয়। সেই সঙ্গে স্টলটেনবার্গ আরও বলেন, ন্যাটোর সদস্যপদ পেতে হলে ইউক্রেনকে অবশ্যই এ যুদ্ধে জয়ী হতে হবে।

মহাসচিবের এই বক্তব্যে হতাশা প্রকাশ করে ন্যাটোকে ‘আল্টিমেটাম’ দিয়ে বসে কিয়েভ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের দপ্তারের উপপ্রধান ইগোর ঝোভকা এক বার্তায় বলেন, যদি পূর্ণ সদস্যপদ না দেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে সম্মেলনে যাবেন না জেলেনস্কি।

কিয়েভের এই মন্তব্যের পর আজ বৃহস্পতিবার ন্যাটো নিয়ে ইউক্রেনকে সতর্কবার্তা দিল হোয়াইট হাউস।

 

বিএস/

আর্কাইভ