প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০২৩, ০১:৫২ এএম
একবিংশ শতাব্দীর ভারতেও এমন অনেক জিনিস, নিয়মকানুন রয়েছে যা আমাদের অবাক করে। ভারতের প্রায় প্রত্যেকটি রাজ্যেই কিছু না কিছু প্রাচীন রীতিনীতি এখনও মেনে চলা হয়। তবে হিমাচল প্রদেশের পিনি গ্রামের মানুষরা এমন একটি নিয়ম বছরের পর বছ ধরে মেনে আসছেন যা শুনলে অবাক হয়ে যাবে যে কেউ।
পাহাড়ের কোলে অবস্থিত হিমাচল প্রদেশ অত্যন্ত সুন্দর একটি জায়গা। এখানে কেউ একবার গেলে প্রেমে পড়বেন গ্যারান্টি। সেই হিমাচল প্রদেশের মণিকর্ণা উপত্যকার পিনি গ্রামে একটি অদ্ভুত রীতির প্রচলন রয়েছে। সেই গ্রামের মেয়েদের পোশাক ছাড়া থাকতে হয়। সম্পূর্ণ শরীরে সুতোর একটি টুকরো অবধি থাকে না।
প্রাচীন রীতি অনুযায়ী, বছরের নির্দিষ্ট পাঁচ দিনে পিনি গ্রামের মহিলারা কোনও পোশাক পরেন না এবং নিজের বাড়ি থেকে বের হন না। একবিংশ শতাব্দীতে এসেও গ্রামের বহু মহিলা নিজের ইচ্ছায় আজও এই রীতি মেনে চলেন। প্রত্যেক বছর শ্রাবণ মাসের পাঁচ দিন পোশাক ছাড়া থাকতে হয় মহিলাদের। এই গ্রামের পুরুষদের ক্ষেত্রেও কঠোর নিয়ম রয়েছে। এই পাঁচ দিন গ্রামের কোনও পুরুষ মদ বা অন্য কোনও জিনিস সেবন করতে পারেন না।
পিনি গ্রামে কথিত আছে, কোনও মহিলা যদি এই নিয়ম না মানেন তাহলে কয়েকদিনের মধ্যেই তিনি দুঃসংবাদ শুনতে পান। এই সময় গ্রামের স্বামী-স্ত্রীরা একে অপরের থেকে দূরে থাকেন, কোনও কথা বলেন না। মনে করা হয়, পুরুষদের জন্য এই নিয়ম প্রচণ্ড জরুরি। কোনও পুরুষ যদি এই প্রথা চলাকালীন মদ অথবা মাংস ছুঁয়ে থাকেন, তাহলে তাঁর প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়।
এই নিয়ম অনুযায়ী, বছরের এই পাঁচদিন কোনও পুরুষ অপর কোনও স্ত্রীকে দেখে হাসতে পারবেন না। একই নিয়ম মহিলাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য থাকে। পাশাপাশি এই পাঁচ দিন বাইরের কোনও মানুষকে গ্রামে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। শোনা যায়, পিনি গ্রামের এই নিয়মের পিছনে একটি ইতিহাস রয়েছে।
গ্রামের লোকজনদের কথায়, কয়েক শতাব্দী আগে পিনি গ্রামে এক রাক্ষস থাকতো। সেই রাক্ষস গ্রামে এসে সুন্দর পোশাক পরা মহিলাদের তুলে নিয়ে যেত। সেই সময় লাহুয়া নামের এক দেবতা অসুরের নিধন করেন। সেই থেকে পিনি গ্রামের মানুষরা বিশ্বাস করেন, আজও লাহুয়া দেবতা গ্রামে ফিরে আসেন। শুধু তাই নয়, খারাপের সঙ্গে লড়াইও করেন তিনি। সেই বিশ্বাস থেকেই বছরের পাঁচ দিন মহিলাদের পোশাক না পরার নিয়ম চলে আসছে।
জেকেএস/