আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আফগানিস্তান থেকে ন্যাটো ও মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর দেশটিতে তালেবানরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। দৌরাত্ম্য বেড়েছে তাদের। বিভিন্ন স্থানে হামলার পরিমাণও বাড়িয়ে দিয়েছে। একের পর এক নতুন নতুন জায়গা দখল করছে। তাদের অগ্রযাত্রা রুখতে অস্ত্র তুলে নিতে শুরু করেছে সাধারণ আফগানরা। এমন পরিস্থিতিতে সেখানে গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তালেবানের সঙ্গে শান্তি চুক্তির পর আফগানিস্তান ছেড়ে যাচ্ছে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর সেনারা। মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটে থাকা নিজেদের সব সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছে ইতালি এবং জার্মানিও। এর মধ্য দিয়ে ন্যাটোর সঙ্গে ২০ বছর ধরে নিজেদের আফগান-যাত্রার ইতি টানল ইউরোপের দেশ দুটি।
এক বিবৃতিতে ইতালির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, মঙ্গলবার রাতে আনুষ্ঠানিকভাবে আফগানিস্তানে তাদের মিশনের ইতি ঘটেছে। অন্যদিকে জার্মান প্রতীরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাদের বুনডেসভেরের সবশেষ সেনারা আফগানিস্তান ত্যাগ করেছেন।
গত ২০ বছরে আফগানিস্তানে জার্মানির মোট দেড় লাখ এবং ইতালির ৫০ হাজার সেনা দায়িত্ব পালন করেছেন। এই যাত্রায় ইতালির ৫৩ সেনা নিহত, ৭২৩ সেনা আহত এবং জার্মানির ৫৯ সেনা নিহত হয়েছেন।
বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের পর সেখানে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে তালেবানের দাপট। তাদের লাগাম টানতে অস্ত্র হাতে তুলে নিচ্ছেন সাধারণ আফগানরা। এমন পরিস্থিতিতে দেশটিতে গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা করছেন অনেকে। যুক্তরাষ্ট্র-নেতৃত্বাধীন আফগান মিশনের শীর্ষ মার্কিন কমান্ডার জেনারেল স্কট মিলার বলেছেন, আন্তর্জাতিক সেনারা চলে গেলে যদি তাদের রাজনৈতিক দলগুলো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে না পারে, তাহলে খুবই কঠিন সময়ের মুখোমুখি হতে পারে আফগানিস্তান।
আফগান মিশনের মার্কিন কমান্ডার জেনারেল স্কট মিলার বলেন, এখন আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি ভালো নয়। বর্তমানে যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে তা অব্যাহত থাকলে নিশ্চিতভাবে গৃহযুদ্ধের পথে এগোবে দেশটি। বিষয়টি বিশ্বের জন্য উদ্বেগজনক। আমরা কোনো বিমান হামলা চালাতে চাই না। কিন্তু বিমান হামলা বন্ধ হোক সেটা চাইলে আপনাদেরকে সব সহিংসতা বন্ধ করতে হবে।
আফগানিস্তানবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত ডেবোরাহ লিয়নস নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছিলেন, মে মাস থেকে এ পর্যন্ত দেশটির ৩৭০টি জেলার মধ্যে ৫০টিরও বেশি দখলে নিয়েছে তালেবান।
শামীম/সবুজ/এএমকে
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন