প্রকাশিত: জুন ১০, ২০২৩, ০২:৩১ এএম
প্লাস্টিক দুষণ আর অনিয়ন্ত্রিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় প্রতিনিয়ত নষ্ট হচ্ছে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য। মহামূল্যবান প্রবালসহ অস্তিত্ব হারিয়ে হুমকির মুখে প্রাণী।
এবারের বিশ্ব সমুদ্র দিবসে মহাসাগরের দূষণ ও প্লাস্টিক বর্জ্য বিষয়ে সচেতনতামূলক বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আল জাজিরা। তাতে বলা হয়েছে, এভাবে চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে বিশ্বের সাগর ও মহাসাগরগুলোর পরিবেশ ধ্বংস হয়ে যাবে।
জীবন-জীবিকার জন্য পৃথিবীর প্রায় ৩০০ কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে সমুদ্রের ওপর নির্ভরশীল। জীবনধারণের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় উপাদান অক্সিজেনের প্রায় ৫০ শতাংশ তৈরি করে সমুদ্র। আর মানুষের সৃষ্টি করা ৩০ শতাংশ কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে সাগর-মহাসাগরগুলো।
ইউনেস্কোর বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানিয়েছে, বিশ্বে প্রতি বছর ৪০ কোটি টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন হয়। যার অর্ধেক দিয়ে বানানো হয় শপিং ব্যাগ, কাপ ও প্যাকেজিং পণ্য।
আর প্রতি বছর এসব প্লাস্টিকের ৮ থেকে ১০ লাখ টন ফেলা হয় সমুদ্রে। যদি এসব প্লাস্টিক এক জায়গায় বিছিয়ে রাখা হয় তবে এটি ১১ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা পুরোপুরি ঢেকে ফেলার জন্য যথেষ্ট।
অর্থাৎ বিপুল পরিমাণ এই প্লাস্টিক দিয়ে ঢেকে যাবে কাতার, জ্যামাইকা কিংবা বাহামার মতো ছোট দেশগুলো। এই হার অব্যাহত থাকলে আগামী ৫০ বছরের মধ্যে সাগরে ৫ লাখ ৫০ হাজার বর্গ কিলোমিটার ছাড়িয়ে যাবে প্লাস্টিক বর্জ্য। যা ফ্রান্স, থাইল্যান্ড বা ইউক্রেনের চেয়েও আকারে বড়।
আল জাজিরা আরও জানিয়েছে, বর্তমানে সাগরে ভাসমান কিংবা তলদেশে আছে প্রায় ৭৫ ট্রিলিয়ন মাইক্রোপ্লাস্টিকের টুকরো। যা সামুদ্রিক জীববৈচিত্রের পাশাপাশি মানুষের স্বাস্থ্যের ওপরও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে।
বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান `সাইন্স অ্যাডভান্স রিসার্চের` বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানিয়েছে, মহাসাগরে যত প্লাস্টিক বর্জ্য আছে তার ৮০ শতাংশই এসেছে এশিয়া থেকে। সমুদ্রে বর্জ্য ফেলায় সবার চেয়ে এগিয়ে ফিলিপিন্স। এই তালিকায় আরো আছে ভারত, মালয়েশিয়া, চীন ও ইন্দোনেশিয়ার নাম।
বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক বর্জ্যের সবশেষ ঠিকানায় পরিণত হয়েছে মহাসাগরগুলো। সমুদ্রের তলদেশ যেন ময়লার বিশাল ভাগাড়। এর প্রভাবে প্রতি বছরই যেমন বাড়ছে বৈশ্বিক তাপমাত্রা, বাড়ছে সমুদ্রের পানির উষ্ণতা। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে মানুষকে সচেতন করতে নানা প্রতিপাদ্য নিয়ে ১৯৯২ সাল থেকে ৮ জুন পালন করা হয় বিশ্ব সমুদ্র দিবস।
এডিএস/