• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ভারতের পার্লামেন্টে ‘অখণ্ড ভারত’ মানচিত্র দেখে নেপাল ও পাকিস্তানের ক্ষোভ

প্রকাশিত: জুন ৩, ২০২৩, ০৯:৩৩ পিএম

ভারতের পার্লামেন্টে ‘অখণ্ড ভারত’ মানচিত্র দেখে নেপাল ও পাকিস্তানের ক্ষোভ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বিতর্ক থামছেই না ভারতের নতুন পার্লামেন্ট ভবন ইস্যুতে। এবার পার্লামেন্ট ভবনে অখণ্ড ভারতের মানচিত্র রাখা নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পাকিস্তান ও নেপাল। খবর দ্য হিন্দুর।

নতুন সংসদ ভবনে একটি ‍‍`অখণ্ড ভারতের‍‍` মানচিত্র রাখা হয়েছে, যেখানে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল, আফগানিস্তান, মিয়ানমার ও শ্রীলঙ্কা সব দেশগুলোকেই দেখানো হয়েছে।

এই মানচিত্র বিতর্কের ঝড় তুলেছে নেপালের রাজনীতিতে। ভারতের এই কাণ্ডে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নেপালের রাজনৈতিক নেতারা। এতে কূটনৈতিক বিতর্ক আরও জোরালো হতে পারে বলে মত দেশটির নেতাদের।

ম্যুরালে নেপালের লুম্বিনীকে অখণ্ড ভারতের অঙ্গ হিসেবে দেখানো হয়েছে। গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনী নেপালিদের কাছে এক পবিত্র স্থান ও দেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটা তাদের এক অনন্য সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।
 
মানচিত্র নিয়ে নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বাবুরাম ভট্টরাই এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এই মানচিত্র নেপালসহ ভারতের অন্য প্রতিবেশী রাষ্ট্রে অহেতুক ও ক্ষতিকর বিতর্কের জন্ম দিতে পারে। বিভিন্ন প্রতিবেশীর সঙ্গে ভারতের যে বিশ্বাসের ঘাটতি রয়েছে, তা বাড়িয়ে দেওয়ার মতো উপাদান এ মানচিত্রে রয়েছে।’

এদিকে ধর্মের অজুহাত দিয়ে ভারত প্রতিবেশী দেশগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায় বলে অভিযোগ করেছে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুমতাজ জাহরা বেলুচ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পার্লামেন্ট চত্বরে ‍‍`অখণ্ড ভারত’এর ছবি এবং বিজেপি নেতাদের বক্তব্যে পাকিস্তান সরকার বেশ অবাক।

বেলুচ বলেন, অখণ্ড ভারতের মানচিত্র দিয়ে প্রতিবেশী দেশটির সাম্রাজ্যবাদী চিন্তাধারা ফুটে উঠেছে। তিনি বলেন, ভারত প্রতিবেশী দেশগুলোকে শুধুমাত্র নতজানুই রাখতে চায় না, তারা সংখ্যালঘুদেরও নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়।


গত ২৮ মে বিরোধীদের বয়কটের মধ্যে ধুমধাম করে ভারতের নতুন পার্লামেন্ট ভবন উদ্বোধন হয়। সেদিন প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মুর পরিবর্তে নতুন পার্লামেন্ট ভবন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

অত্যাধুনিক পার্লামেন্ট উদ্বোধনের পর একে কফিনের সঙ্গে তুলনা করে বিতর্ক উস্কে দেয় বিহারের ক্ষমতাসীন দল আরজেডি।
 
প্রতিটি দেশের রাজনৈতিক সীমা নির্ধারিত থাকলেও ভারতের সংসদ ভবনে অখণ্ড ভারতের মানচিত্র কেন? এমন প্রশ্ন যখন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।

‍‍`অখণ্ড ভারত‍‍`-এর ধারণাটি কট্টর হিন্দুত্ত্ববাদী সংগঠন আরএসএসের মূল মতাদর্শগত চিন্তার অন্যতম। এতে বলা হয়ে থাকে, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা হলো একটিই রাষ্ট্র অর্থাৎ অখণ্ড ভারতের অন্তর্ভুক্ত। ভারতের হিন্দুত্ত্ববাদীদের দাবি, অখণ্ড ভারত ও হিন্দু রাষ্ট্র একই সূত্রে গাঁথা। ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে তুলে ধরার লক্ষ্যেই আরএসএসের চিন্তা অনুসারে অখণ্ড ভারতের মানচিত্র রাখা হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই।

এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওই মানচিত্রে যেসব দেশকে দেখানো হয়েছে, তাদের স্বার্বভৌমত্ব স্বীকার করে ভারত। তাই অখণ্ড ভারতের এই তত্ত্বকে স্বীকৃতি দিয়ে নিজেদের অবস্থান অস্পষ্ট করলো ভারত।


এডিএস/

আর্কাইভ