প্রকাশিত: মে ১, ২০২৩, ০৬:৩০ এএম
সুদানে সেনা-আধাসেনা সংঘাত থামছেই না। এরই মধ্যে সংঘাতে তৃতীয় সপ্তাহে গড়িয়েছে। রোববার পর্যন্ত দীর্ঘ এ ১৬ দিনে চুক্তি স্বাক্ষর ও ভঙ্গের খেলা চলেছে। একাধিক শান্তি চুক্তিও হয়েছে দুপক্ষের। তবে কোনোটাই টেকেনি।
আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) ও সেনাবাহিনী সুদান আর্মড ফোর্সেস (এসএএফ) সৌদি আরব, আফ্রিকান ইউনিয়ন ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় সর্বশেষ তিন দিনের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোয় সম্মত হয় বৃহস্পতিবার। কিন্তু টেকেনি এটাও।
শুক্রবার থেকেই বিমান হামলা শুরু করেছে সেনাবাহিনী। বসে নেই আরএসএফও। তারাও পালটা হামলা চালাচ্ছে। রোববারও খার্তুমের সেনা সদর দপ্তরের চার পাশে তীব্র গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে। নীল নদের অপর পাড়ে রাজধানীর জোড়া শহর ওমদুরমানেও সেনাবাহিনী বিমান হামলা চালিয়েছে।
দক্ষিণ খার্তুমের একজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, ‘আমি যে রাস্তার পাশে থাকি সেখানে তীব্র লড়াই চলছে। মিনিটে মিনিটে সকাল থেকে চলছে লড়াই ও ভারী গোলাগুলি।’
বিশৃঙ্খলা ও অনাচার গ্রাস করেছে খাতুর্ম। খাদ্য, পানি ও বিদ্যুতের অভাবে দিনে দিনে প্রকট হচ্ছে। অনাহারে, অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয়রা। জাতিসংঘ জানিয়েছে, এরই মধ্যে ৭৫ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। যেসব এলাকায় সংঘর্ষ চলছে তার কাছাকাছি প্রায় ৭০ শতাংশ হাসপাতালের পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সুদানের বিদেশি এবং আন্তর্জাতিক কর্মীরা দলে দলে দেশ ছেড়ে যাচ্ছেন।
এমন দুরবস্থার পরিপ্রেক্ষিতেই জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সুদান ভেঙে পড়ছে বলে সতর্ক করেছেন।
শনিবার সৌদি মালিকানাধীন আল আরাবিয়া টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দেশের দুঃসময়ে, দেশ যখন ভেঙে পড়ছে তখন দুই জেনারেলের ক্ষমতার লড়াইয়ে মেতে থাকার কোনো অধিকার নেই। সংঘর্ষের মধ্যে দেশের উপজাতিরা নিজেদের সশস্ত্র করার চেষ্টা করছে বলে জানান তিনি।
সতর্কতা জারি করেছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচিও (ডব্লিউএফপি)। চলমান সহিংসতা সমগ্র পূর্ব আফ্রিকাকে মানবিক সংকটে নিমজ্জিত করতে পারে। সুদানে আরও কয়েক লাখ মানুষ খাদ্যাভাবে পড়তে পারে।
সুদানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লা হামডোক সতর্ক করেছেন, দেশটির সংঘাত তাড়াতাড়ি বন্ধ না হলে তা বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ গৃহযুদ্ধের একটিতে পরিণত হবে।সুদানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শনিবার জানিয়েছে, সহিংসতায় কমপক্ষে ৫২৮ জন নিহত ও চার হাজার ৬০০ জন আহত হয়েছে। যদিও এর প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। সুদানের ১৮টি রাজ্যের মধ্যে দারফুরসহ ১২টি রাজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানায় তারা।