• ঢাকা রবিবার
    ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

কুয়েত দখলে গিয়ে সাদ্দাম হোসেন যেভাবে নাস্তানাবুদ হয়েছিলেন

প্রকাশিত: মে ১, ২০২৩, ০১:৩২ এএম

কুয়েত দখলে গিয়ে সাদ্দাম হোসেন যেভাবে নাস্তানাবুদ হয়েছিলেন

ছবি: সংগৃহীত

সিটি নিউজ ডেস্ক

সেদিন ভোরবেলা, ট্যাঙ্ক, হেলিকপ্টার আর ট্রাক নিয়ে প্রায় এক লাখ ইরাকি সৈনিক কুয়েতের সীমানায় ঢুকে পড়েছিল।

সেই সময়ে ইরাকের সেনাবাহিনী ছিল বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম সেনাবাহিনী। এক ঘণ্টার মধ্যেই ইরাকি সেনাবাহিনী কুয়েত শহরে পৌঁছে যায় আর দুপুরের মধ্যেই ইরাকি ট্যাঙ্ক কুয়েতের রাজপ্রাসাদ দসমান প্যালেস ঘিরে ফেলে।

ততক্ষণে কুয়েতের আমির পালিয়ে সৌদি আরবে পৌঁছে গিয়েছিলেন। তার প্রাসাদে রেখে গিয়েছিলেন সৎভাই শেখ ফাহাদ আল আহমেদ আল সাবাহকে। ইরাকি সেনারা তাকে দেখামাত্রই গুলি করেছিল।

প্রত্যক্ষদর্শী এক ইরাকী সেনার কথায়, তার মৃতদেহ একটা ট্যাঙ্কের সামনে রেখে তার ওপর দিয়ে ট্যাঙ্ক চালিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

কুয়েত আক্রমণ করার আগে বাথ অভ্যুত্থানের ২২ তম বার্ষিকী পালনের সময়েই সাদ্দাম হোসেন কুয়েতের কাছে একটা দাবিনামা পেশ করেছিলেন।

এর মধ্যে ছিল আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম স্থির করার অধিকার, উপসাগরীয় যুদ্ধের সময়ে কুয়েত থেকে নেওয়া ঋণ মওকুফ এবং ইরাকের পুনর্নির্মাণে সাহায্য করার জন্য মার্শাল পরিকল্পনার অনুকরণে একটা আরব পরিকল্পনা বানানোর মতো দাবি।

প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন ইরাকি টিভিতে ধমকের সুরে বলেছিলেন, ‘যদি কুয়েত আমাদের কথা না মানে তাহলে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনও উপায় থাকবে না।’

সৌদি রাজনীতিক ও শাহ ফাহাদের ঘনিষ্ঠ পরামর্শদাতা ড. গাজি আলগোসেইবি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘উপসাগরীয় যুদ্ধের সময়ে ইরাককে দেওয়া ঋণ ফেরত পাওয়ার আশা সৌদি আরব আর কুয়েত দুটি দেশই মোটামুটিভাবে ছেড়ে দিয়েছিল। কিন্তু তারা যদি আনুষ্ঠানিকভাবে ওই ঘোষণা করে দেয়, তাহলে ভুল বার্তা যেতে পারে বলে তারা মনে করেছিল।’

তিনি বলেন, শাহ ফাহাদ সাদ্দাম হোসেনকে ঋণ মওকুফ করার বার্তা দিয়েছিলেন, কিন্তু সাদ্দাম এরকম একটা আভাস দিয়েছিলেন যে তিনি সৌদি আরবের এরকম একটা অবস্থানে খুশি নন। তখনই শাহ ফাহাদ বুঝে গিয়েছিলেন যে কুয়েতের খারাপ সময় আসছে।

সাদ্দাম হোসেন অবশ্য কুয়েতের সামনে তার দাবিনামা প্রকাশ করার আগেই সেদেশে হামলার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন। ২১ জুলাইয়ের মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার ইরাকি সৈন্য কুয়েতের সীমান্তের দিকে রওনা হয়ে গিয়েছিল।

২৫ জুলাই দুপুর একটার সময়ে বাগদাদে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত এপ্রিল গিলেস্পিকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। কুয়েত অভিযান নিয়ে তার মতামত জানতে চেয়েছিলেন সাদ্দাম হোসেন।

তার আগে, ফেব্রুয়ারি মাসেই গিলেস্পির সঙ্গে সাদ্দাম হোসেনের একটা কূটনীতিক মতবিরোধ হয় গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ভয়েস অফ আমেরিকার এক সম্প্রচারে সাদ্দামের ইরাককে চোসেস্কুর রোমানিয়ার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন সেই সম্প্রচারে।

গিলেস্পি ওই সম্প্রচারের জন্য সাদ্দাম হোসেনের কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেছিলেন ইরাকের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর কোনও অভিপ্রায় নেই যুক্তরাষ্ট্রের।

২৫ জুলাইয়ের বৈঠকটা সাদ্দাম হোসেন এভাবেই শেষ করেছিলেন, কুয়েতের সঙ্গে যদি সমঝোতা না হয়, তাহলে ইরাক মৃত্যু স্বীকার নিশ্চয়ই করে নেবে না।

২ আগস্ট, ১৯৯০ রাত দুটোর সময়ে প্রায় এক লাখ ইরাকি সৈন্য ৩০০টি ট্যাঙ্ক নিয়ে কুয়েতের সীমানা পার হয়।

কুয়েতের ১৬ হাজার সদস্যের সেনাবাহিনীর পক্ষে ইরাকি বাহিনীকে মোকাবিলা করা অসম্ভব ছিল। তাই সীমান্তে কোনও বাধার মুখেই পড়তে হয় নি ইরাকি বাহিনীকে।

যখন ইরাকি বাহিনী রাজধানী কুয়েত শহরে পৌঁছায়, তখন সামান্য বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল কুয়েতের বাহিনী। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই তাদের কব্জা করে ফেলে সাদ্দাম হোসেনের বাহিনী।

কুয়েতের যুদ্ধবিমানগুলো আকাশে উড়েছিল ঠিকই, কিন্তু ইরাকি বাহিনীর ওপরে বোমাবর্ষণ করতে নয়, তারা পালাচ্ছিল সৌদি আরবের দিকে। কুয়েতি নৌবাহিনী তো এক জায়গায় দাঁড়িয়ে যেন মজা দেখছিল।

সাদ্দাম হোসেনের একমাত্র ব্যর্থতা ছিল কুয়েতের আমির আর তার মন্ত্রীপরিষদের সব সদস্যের সৌদি আরবে পালিয়ে যাওয়া।

ইরাকের রিপাবলিকান গার্ডকে নির্দেশ দেওয়া ছিল যে কুয়েত শহরে পৌঁছেই প্রথম দসমান প্যালেসে গিয়ে রাজপরিবারকে বন্দী করতে হবে।

সাত ঘণ্টার মধ্যে কুয়েতের দখল নিয়ে নিয়েছিল ইরাকি বাহিনী। পুরো সরকারের সঙ্গে প্রায় তিন লাখ কুয়েতি দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন। তখনই ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটা বিমান দখল করার সুযোগ এসে যায় সাদ্দাম হোসেনের সামনে।

লন্ডন থেকে দিল্লিগামী ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের ওই বিমানটি কুয়েত বিমানবন্দরে নেমেছিল জ্বালানি নিতে।

পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আন্দাজ করছিল যে ইরাক কুয়েত দখল করেছে, কিন্তু তারা বেসরকারি বিমানগুলোকে সতর্ক করার কথা ভাবেনি।

যখনই বিমানটি কুয়েতের অবতরণ করে, সব কর্মী আর যাত্রীদের পণ বন্দী করে নেওয়া হয়। তাদের বাগদাদে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, যাতে সেখানে যদি বোমাবর্ষণ হয় তখন এই পণ বন্দীদের মানব ঢাল হিসাবে ব্যবহার করা যাবে।

কুয়েত আক্রমণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ ইরাকের ওপরে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করে দেন। যুদ্ধবিমানবাহী জাহাজ ‘ইণ্ডিপেন্ডেন্স’কে ভারত মহাসাগর থেকে পারস্য উপসাগরের দিকে রওনা হতে নির্দেশ দেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাঙ্কগুলোতে জমা থাকা ইরাকের সব অর্থ ও সম্পদ যুক্তরাষ্ট্র বাজেয়াপ্ত করে নেয়। সেই সময়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার যুক্তরাষ্ট্র সফরে ছিলেন।

কুয়েতে ইরাকি হামলাকে তিনি তিরিশের দশকে চেকোস্লাভাকিয়ার ওপরে জার্মান আক্রমণের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। আবার অন্যান্য প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্র আর সোভিয়েত ইউনিয়ন পরস্পর বিরোধী অবস্থান নিলেও কুয়েতে ইরাকি হামলার বিষয়ে যৌথ বিবৃতি দিয়ে নিন্দা জানায়।

জাতিসংঘ এবং আরব লীগও ইরাকের এই পদক্ষেপের নিন্দা করে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ইরাকের ওপরে সম্পূর্ণভাবে অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

তুরস্ক ও সৌদি আরবের মধ্যে দিয়ে যাওয়া ইরাকের তেলের পাইপলাইন কেটে দেওয়া হয়। সৌদি সীমান্তে ইরাকী সেনাদের জমায়েত হতে দেখে সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সামরিক সাহায্য চায়।

ইরাকের কবল থেকে কুয়েতকে রক্ষা করতে নিজেদের সীমাবদ্ধতা জানিয়ে পরবর্তী ছয় মাসে প্রায় ৬০ হাজার সৈন্যকে বিমানযোগে সৌদি আরবের মাটিতে নিয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র।

৭ আগস্ট প্রেসিডেন্ট বুশ জাতির প্রতি দেওয়া এক ভাষণে জানান যে ৮২ নম্বর এয়ারবোর্ন ডিভিশনকে তিনি সৌদি আরবে পাঠাচ্ছেন।

সেটাই ছিল ‘অপারেশন ডেসার্ট স্টর্ম’-এর শুরু।

ভিয়েতনাম যুদ্ধের পরে এই যুদ্ধেই বিদেশের মাটিতে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সবথেকে বড় অপারেশন।

আক্রমণ শুরু হতেই কুয়েতের এক তৃতীয়াংশ মানুষ, প্রায় তিন লাখ বাসিন্দা পালিয়ে গিয়েছিলেন।

১৯৯০ সালের ২২ ডিসেম্বর ইকোনমিস্ট পত্রিকা লিখেছিল, সাদ্দাম হোসেনের গোয়েন্দারা বিরোধীদের নিয়ে এসে খালি করে দেওয়া রাজপ্রাসাদের ঘরগুলোতে অত্যাচার চালায়। অনেক রাস্তার নাম বদল করে দেওয়া হয়েছে। নাগরিকদের নতুন পরিচয়পত্র দেওয়া হচ্ছে আর গাড়ির জন্য নতুন লাইসেন্স প্লেট নিতে বলা হয়েছে।

এক ইরাকী জেনারেল ওয়াফিক আল সমুরাই সেই সময়ে সাদ্দাম হোসেনের দেওয়া নির্দেশগুলো নিয়ে বলেছিলেন, ‌সাদ্দাম হোসেন আমাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন যে যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যদের আটক করে তাদের ইরাকি ট্যাঙ্কের কাছাকাছি দাঁড় করিয়ে রাখতে, যাতে আমরা তাদের মানব ঢাল হিসাবে ব্যবহার করতে পারি।

তিনি বলেন, তার একটা ভুল ধারণা ছিল যে এইভাবে যুক্তরাষ্ট্রের হাজার হাজার সৈন্যকে আমরা মানব ঢাল হিসাবে ব্যবহার করতে পারব। তার এই শিশুসুলভ চিন্তাভাবনা দেখে আমি এবং অন্যান্য জেনারেলরা আশ্চর্য হয়ে যেতাম।  

‘আটলান্টিক’ পত্রিকাকে ২০০২ সালের মে মাসে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে সমুরাই বলেছিলেন, ‌যখন আমি সাদ্দাম হোসেনকে বলার চেষ্টা করেছিলাম যে আমরা ধ্বংসের পথে এগোচ্ছি, তখন তিনি পাল্টা জানতে চান যে ওটা আমার ব্যক্তিগত বিশ্লেষণ না কি ওটাই বাস্তবতা।

আমি বলেছিলাম আমার সামনে যা তথ্য আছে, সেগুলোও ওপর ভিত্তি করেই এই মতামত দিচ্ছি। তিনি বলেন, এখন তুমি আমার মতামত শোনো। এই লড়াইয়ে ইরান হস্তক্ষেপ করবে না। আমাদের বাহিনী কতটা লড়াই করতে পারবে, তা তোমার ধারণার বাইরে। যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার জন্য তারা বাঙ্কার বানিয়ে ফেলতে সক্ষম।

তারা দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালিয়ে যেতে পারবে, অনেক লোক মরবে। আমরা তো এই ক্ষয়ক্ষতি সামলে নেব, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সেটা সামলানোর পরিস্থিতিতে থাকবে না। নিজেদের সেনাবাহিনীতে প্রচুর মৃত্যু হলে তারা সেটা মেনে নিতে পারবে না, এমনটাই মত ছিল সাদ্দাম হোসেনের।  

প্রেসিডেন্ট বুশ ১৯৯১ সালের ১৬ জানুয়ারি ইরাকের ওপরে বিমান হামলা চালানোর নির্দেশ দেন। পুরো ইরাক জুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হল। মাত্র চার সপ্তাহের মধ্যে ইরাকের চারটি পারমানবিক গবেষণাগার সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হল।

ইরাকের সব সামরিক আর অর্থনৈতিক স্তম্ভগুলো ধ্বংস করে দেওয়া হতে লাগল। রাস্তা, সেতু, বিদ্যুৎ কেন্দ্র আর তেলের খনিগুলোর ওপরে বোমা বর্ষণ চলল।

ইরাকি বিমানবাহিনীর মনোবলেও বড় সড় ধাক্কা লাগল যখন তাদের একশোরও বেশি যুদ্ধ বিমান উড়ে গিয়ে ইরানে আশ্রয় নিল। এরকমও খবর পাওয়া যাচ্ছিল যে সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে বিমানবাহিনীর ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পরেই যুদ্ধ বিমান নিয়ে ইরানে আশ্রয় নেয় সৈনিকরা।

যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার মোকাবিলা করতে না পারার জন্য সাদ্দাম হোসেন বিমানবাহিনীর অফিসারদের মৃত্যুদণ্ড দিচ্ছিলেন, সেজন্যই বিদ্রোহ হয়।

যুদ্ধের মধ্যেই সোভিয়েত প্রেসিডেন্ট মিখাইল গর্বাচভের দূত হিসাবে বাগদাদে যান ইয়েভগেনি প্রাইমাকভ। সাদ্দাম হোসেনের ওজন প্রায় ১৫ কেজি কমে গেছে দেখে তিনি বেশ চমকে গিয়েছিলেন।

১৮ ফেব্রুয়ারি ইরাকের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারিক আজিজ মস্কো গিয়েছিলেন। সোভিয়েত ইউনিয়ন যে প্রস্তাব দিয়েছিল কুয়েত থেকে বিনাশর্তে ইরাককে সরে আসতে হবে, সেটা মেনে নেন আজিজ।

কিন্তু ততদিনে বিশ্বনেতারা সাদ্দাম হোসেনকে এতটাই অবিশ্বাস করতে শুরু করেছিলেন যে শুধুমাত্র আশ্বাসে কাজ হবে বলে তারা মনে করছিলেন না।

এদিকে ইরাকের ওপরে স্থলপথে আক্রমণ হতে পারে, এই আশঙ্কা করে কুয়েতের সব তেলখনিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন সাদ্দাম হোসেন।

শেষমেশ প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ সেনা কমান্ডার জেনারেল নর্ম্যান শোয়ার্জকফকে আদেশ দেন যদি ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ইরাকি সেনা যদি কুয়েত না ছাড়ে তাহলে শক্তি প্রয়োগ করে তাদের সরিয়ে দিতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের হামলা শুরু হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইরাক পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছিল।

ছয় সপ্তাহ ধরে লাগাতার বিমান হামলায় বিধ্বস্ত হয়ে ইরাকের সৈন্যরা লড়াই করার পরিস্থিতিতেই ছিল না।

পাল্টা হামলায় দ্বিতীয় দিনের শেষে ২০ হাজার ইরাকি সৈন্য বন্দী হয় আর ৩৭০টি ট্যাঙ্ক ধ্বংস করা হয়।

অবশেষে সাদ্দাম হোসেন তার বাহিনীকে নির্দেশ দেন যে ১৯৯০ সালের পয়লা আগস্ট তারা যে জায়গায় অবস্থান করছিল, সেখানেই যেন ফিরে আসে।

২৬ ফেব্রুয়ারিতে কুয়েতে একজনও ইরাকী সৈন্য ছিল না। হয় তাদের যুদ্ধবন্দী হিসাবে গ্রেফতার করা হয়েছিল, অথবা ইরাকে ফিরে গিয়েছিল।

ইরাকি যুদ্ধবন্দীদের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে পৌঁছে গিয়েছিল ৫৮ হাজারে আর প্রায় দেড় লাখ ইরাকি সেনা হয় আহত বা নিহত হয়েছিলেন।

ইরাকি সেনা অফিসারেরা একটা মাত্র অনুরোধ করেছিলেন, যে তাদের যেন হেলিকপ্টারে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়, কারণ সব রাস্তা আর সেতু ধ্বংস হয়ে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল শোয়ার্জকফ ইরাকি অফিসারদের সেই অনুরোধ মেনে নিয়েছিলেন।

 

জেকেএস/

আন্তর্জাতিক সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ