• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

দ্বাদশ শ্রেণিতে কর্ণাটকে প্রথম হলেন হিজাব আন্দোলনের মুখ হয়ে ওঠা তাবাসসুম

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৬, ২০২৩, ১০:৩৩ পিএম

দ্বাদশ শ্রেণিতে কর্ণাটকে প্রথম হলেন হিজাব আন্দোলনের মুখ হয়ে ওঠা তাবাসসুম

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

 ভারতের কর্নাটক রাজ্যে হিজাব আন্দোলনের সেই তাবাসসুম দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় কলা বিভাগে প্রথম হয়েছেন। মোট ৬০০ নম্বরের পরীক্ষায় তিনি ৫৯৩ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছেন। হিন্দি, সমাজবিজ্ঞান ও মনোবিজ্ঞানে তিনি ১০০ নম্বরের মধ্যে ১০০ পেয়েছেন। তাবাসসুমের ইচ্ছা, তিনি ‘ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি’ নিয়ে বিদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বেন। খবর ইন্ডিয়া টুডের।

গত বছরের জানুয়ারিতে কর্নাটকের এক স্কুলে হঠাৎ হিজাব নিষিদ্ধ করা হয়। কর্তৃপক্ষ নির্দেশনা জারি করে, হিজাব বা কোনো ধর্মীয় পোশাক পরে ক্লাসে অংশ নেয়া যাবে না। বোরকা বা হিজাব পরে প্রতিষ্ঠানে এলেও শ্রেণিকক্ষে তা খুলে ফেলতে হবে। সেখানে স্কুল ইউনিফর্মই একমাত্র পোশাক।

এরপর ক্রমেই রাজ্যের অন্যত্র এমন নির্দেশনা দিতে থাকে নানা প্রতিষ্ঠান। পরে এ নিয়ে ধর্মীয় উত্তেজনা তৈরি হয়। রাজধানী বেঙ্গালুরুতেও সেই ঢেউ আছড়ে পড়ে। ফলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। মুসলিম ছাত্রীরা ওই নির্দেশনা বিরুদ্ধে কর্নাটক হাইকোর্টে মামলা করেন। কিন্তু কর্নাটক হাইকোর্ট জানিয়ে দেন, হিজাব ইসলামের অপরিহার্য অঙ্গ নয়। স্কুলের ইউনিফর্মই শেষ কথা। ওই মামলা এখনো সুপ্রিম কোর্টে বিবেচনাধীন রয়েছে।

যখন রাজ্যে হিজাব বিতর্ক তুঙ্গে, তখন তাবাসসুম ও তার অন্য পাঁচ বান্ধবী বেঙ্গালুরুর স্কুলে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। অনেক দিন বাড়ি বসে ছিলেন। এরপর পরিবারের পরামর্শে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন তাবাসসুম।


তাবাসসুম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বাবার কথায় আমি মন বদলাই। হিজাবের চেয়ে শিক্ষাকে প্রাধান্য দিই। বাবা বলেছিলেন, দেশের আইন মানা জরুরি। তেমনই জরুরি নারীর শিক্ষালাভ। বাবা, মা ও বড় ভাইয়ের পরামর্শে স্কুলে ফেরার সিদ্ধান্ত নিই। পাঁচ বছর বয়স থেকে হিজাব পরে আসছি। হিজাব পরতে আমার ভালোও লাগে। পোশাকটির প্রতি একটা অধিকারবোধ জন্মে গিয়েছিল। হিজাব ছাড়া ক্লাস করতে প্রথম প্রথম খারাপ লাগতো। কিন্তু শিক্ষার স্বার্থে ওটুকু মেনে নিয়েছি।

তাবাসসুম আরও বলেন, অনেকে টিটকিরি দিয়েছে। কিন্তু সব সহ্য করেছি। মা-বাবা-বড় ভাইয়ের কথা সব সময় মাথায় রাখতাম। তারা বলতেন, প্রতিবাদের নামে পড়াশোনা ছেড়ে দিলে যারা চায় না মেয়েরা শিক্ষা পাক, তাদের উদ্দেশ্যই সফল হবে।

তাবাসসুমকে ‘অভিনন্দন’ জানিয়ে গত সোমবার টুইট করেছেন কংগ্রেস নেতা শশী থারুর। মা-বাবার সঙ্গে এই মেধাবী ছাত্রীর ছবি দিয়ে কেরালার এই কংগ্রেস নেতা লিখেছেন, সাফল্যই সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ। শাবাশ তাবাসসুম।


এডিএস/

আর্কাইভ