প্রকাশিত: এপ্রিল ২৪, ২০২৩, ০৪:০১ এএম
চীনের দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে একটি ‘অলৌকিক’ ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করা হয়, তবে এর পেছনে রয়েছে উচ্চ মাত্রার দুর্নীতি। বড় ধরনের দুর্নীতি ছাড়া এমনটা সম্ভব ছিল না। আফ্রিকার দেশগুলোতে বিলিয়নকে বিলিয়ন ডলার ঢেলেছে চীন। অর্থাৎ অন্যভাবে বললে, আফ্রিকাতেও দুর্নীতির একই মডেল ছড়িয়ে দিয়েছে বেইজিং।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম ওয়াশিংটন টাইমসে লেখা এক নিবন্ধে এমনটাই দাবি করেছেন জিয়ানলি ইয়াং। ওই নিবন্ধের বরাত দিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই।
এতে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এবং রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে পরিচালিত উদ্যোগের মাধ্যমে চীন সাব-সাহারান আফ্রিকায় বিপুল পরিমাণ অর্থ ‘বিনিয়োগ’ করেছে। এর সঙ্গে আরও ‘আন্তর্জাতিক সংশ্লিষ্টতা’ বাড়ানোর লক্ষ্যে ২০১৩ সালে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের সূচনা করেছেন, তার ফলে প্রক্রিয়াটি আরও ত্বরান্বিত হয়েছে।
আফ্রিকা মহাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ খাতে আধিপত্য বিস্তারের প্রচেষ্টায় সেখানে বিলিয়নকে বিলিয়ন ডলার ঢেলেছে চীন। একই সঙ্গে এর লক্ষ্য হল- চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) পশ্চিমা-বিরোধী বৈদেশিক নীতির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে আফ্রিকায় তার উপস্থিতি জোরদার করা।
চীনের দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে কখনও কখনও কিছু পন্ডিত ‘অলৌকিক’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তবে এই ‘অলৌকিক ঘটনা’ নিম্নলিখিত চারটি বৈশিষ্ট্য ছাড়া ঘটা সম্ভব ছিল না। সেগুলো হল- চীনের স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থার উচ্চ দুর্নীতি এবং নিম্ন মানবাধিকার, নিম্নমানের পরিবেশগত আইন-কানুন এবং নিম্ন নৈতিকতা।
ভারতীয় বার্তা সংস্থাটি বলছে, ওয়াশিংটন টাইমস রিপোর্ট করেছে যে, এক অর্থে চীন একই মডেল আফ্রিকায় ছড়িয়ে দিয়েছে। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার মতো পশ্চিমা গণতন্ত্রের তুলনায় আফ্রিকায় (প্রভাব বাণিজ্যে জড়িত হওয়ার ক্ষমতার দিক থেকে) সিসিপিকে অনেক বেশি প্রতিযোগিতামূলক করে তোলে।
আফ্রিকায় চীনের সম্পৃক্ততা মহাদেশটির দেশগুলোতে এরই মধ্যে প্রতিফলিত হয়েছে। সেটা শুধু চীনা সরকারের শোষণমূলক অভিপ্রায়ের কারণে নয় বরং ‘চীনা মডেল’ বিশেষ করে আফ্রিকানদের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং দুর্নীতির কারণে।
লন্ডনভিত্তিক অলাভজনক ব্যবসা এবং মানবাধিকার সংস্থান কেন্দ্রের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুসারে, বিশ্বব্যাপী চীনা বিনিয়োগের সঙ্গে সম্পর্কিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ১ হাজার ৬৯০টি অভিযোগের মধ্যে ১৮১টি আফ্রিকায় সংঘটিত হয়েছে। এই মানবাধিকার লঙ্ঘনের বেশিরভাগই ঘটেছে আফ্রিকার খনি ও নির্মাণ খাতে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিটি ক্ষেত্রেই জড়িত চীনা সংস্থাগুলো হয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে কিংবা কেবল তা উপেক্ষা করেছে।
ওয়াশিংটন টাইমস তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, ২০১৭ সালের এক প্রতিবেদন অনুসারে, ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ চীনা কোম্পানি লাইসেন্স পাওয়ার জন্য ‘টিপস’ বা ঘুস দেওয়ার কথা স্বীকার করেছে।
জেকেএস/