• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

কিছুটা শান্তিতেই কেটেছে ফিলিস্তিনিদের ঈদ

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৩, ২০২৩, ০১:২১ এএম

কিছুটা শান্তিতেই কেটেছে ফিলিস্তিনিদের ঈদ

ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বছরের অন্য সময়ের মতো পবিত্র রমজানেও ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বাহিনীর হামলা, নির্যাতন ও নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। তবে পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনটি কিছুটা শান্তিতেই কেটেছে ফিলিস্তিনিদের।

ফিলিস্তিনজুড়ে মসজিদে মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেসব জামাতে অংশ নিয়েছেন হাজার হাজার ফিলিস্তিনি। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেছেন পরিবার-পরিজন ও আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে।

ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বাহিনীর অত্যাচার ও নিপীড়ন নিত্যদিনের বাস্তবতা। রমজান মাসে এই নিপীড়ন বন্ধ হবে-এমনটাই প্রত্যাশা ছিল ফিলিস্তিনিদের। কিন্তু বাস্তবে তেমনটা ঘটেনি।

রোজার মাসজুড়েই ফিলিস্তিনিদের ওপর অত্যাচার ও নিপীড়ন চালানো হয়েছে। কখনও গুলি করে হত্যা, কখনও অভিযান ও হামলা, কখনও উচ্ছেদ অভিযান আবার কখনও ফসল নষ্ট করে দেয়া-এসবই ছিল প্রতিদিনের চিত্র।

রমজানের শুরুতেই অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে আল-আকসা মসজিদে অভিযান চালায় ইসরাইলি পুলিশ। গত ৫ এপ্রিল ভোরে ফজরের নামাজের সময় থেকে মসজিদ প্রাঙ্গনে দফায় দফায় রীতিমত তাণ্ডব চালায় তারা।

উপস্থিত ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের ওপর টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়া হয়। এতে অন্তত ১২ জন মুসল্লি আহত হন। মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে আটক করা হয় চার শতাধিক মুসল্লিকে।
 

ফিলিস্তিনি মুসলিমদের ওপর ইসরাইলি বাহিনীর ন্যক্কারজনক এই হামলার জবাবে ইসরাইলকে লক্ষ্য করে লেবানন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। 


যার প্রতিক্রিয়ায় লেবানন, অধিকৃত গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরে দফায় দফায় বিমান হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী। এর জেরে শক্তিধর ইসরাইল ও সশস্ত্র ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে নতুন যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দেয়।

যদিও শেষ পর্যন্ত বড় সংঘাত এড়াতে সক্ষম হয় উভয় পক্ষ। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি বাহিনীর অভিযান-হামলা ও দমন-পীড়ন বন্ধ হয়নি। এর মধ্যদিয়েই পবিত্র রমজান পার করেছেন ফিলিস্তিনিরা। অবশেষে পশ্চিম আকাশে পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ নিয়ে এলো ঈদুল ফিতরের বার্তা।

সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ আরও কয়েকটি আরব দেশের সঙ্গে গত শুক্রবার (২১ এপ্রিল) পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপন করে ফিলিস্তিন। এদিন ইসরাইলি বাহিনীর বড় কোনো হামলা ও অভিযানের ঘটনা ছাড়াই ঈদ উদ্‌যাপন করেছেন ফিলিস্তিনিরা। দেশটির মসজিদে মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

আল জাজিরা জানিয়েছে, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসাহের মধ্যদিয়েই ঈদ উদ্‌যাপন করেছেন অধিকৃত গাজা উপত্যকার ফিলিস্তিনিরা। মসজিদে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গেই ঈদের আনন্দ উপভোগ করেছেন।

ফিলিস্তিনের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে পূর্ব-জেরুজালেমের পবিত্র আল আকসা মসজিদে। শুক্রবার ভোরে জেরুজালেমের পুরানো শহরের আল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ঈদুল ফিতরের নামাজের জন্য জড়ো হন হাজার হাজার ফিলিস্তিনি। নামাজের পর বিক্ষোভকারীরা গাজা উপত্যকার শাসক সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সমর্থনে স্লোগান দেন।

প্রতিবেদন মতে, রমজানের শুরুর দিকে আল-আকসা মসজিদে ইসরাইলি বাহিনীর তাণ্ডবের মধ্যদিয়ে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে বড় সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হলেও শেষ পর্যন্ত সেখান থেকে ফিরে আসতে সক্ষম হয় উভয় পক্ষ।


সবার মধ্যে সবসময় একটা উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা থাকলেও অবশেষে শান্তিপূর্ণভাবেই ঈদ উদ্‌যাপন করতে পেরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন ফিলিস্তিনিরা। গত ১৫ বছর ধরে ইসরাইল আরোপিত ভয়াবহ স্থল, সমুদ্র ও বিমান অবরোধের কারণে অধিকৃত গাজা উপত্যকায় কঠিন অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা বিরাজ করছে।

এরপরও রমজান মাসের শেষ দিনগুলোতে ঈদুল ফিতর উদযাপনের প্রস্তুতি ছিল চোখে পড়ার মতো। বাজারগুলো ছিল জমজমাট। সাধারণ ফিলিস্তিনিরা সাধ্যমতো বাচ্চাদের জন্য স্বাচ্ছন্দ্যেই পোশাক-পরিচ্ছদ ও ঈদের প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করেছেন। অধিকৃত পূর্ব-জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরজুড়েও একই চিত্র দেখা গেছে।

 

জেকেএস/

আর্কাইভ