প্রকাশিত: এপ্রিল ১২, ২০২৩, ১১:১৫ পিএম
শুক্রবার পারিবারিকভাবে ছুটি কাটাতে যাওয়ার সময় জর্ডান ভ্যালিতে লুসি, রিনা ও মাইয়ার গাড়িতে হামলা করে বন্দুকধারীরা। প্রথমে গাড়িটি অচল করে দেওয়া হয়, এরপর বন্দুকধারীরা খুব কাছে গিয়ে ওই তিন নারীকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।
পশ্চিম তীরে বন্দুকধারীর হামলার ঘটনায় নিহত ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত ইসরায়েলি নারীর শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ পাঁচ ব্যক্তির শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার শেষকৃত্যের আগে দুটি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পাঁচজনের শরীরে তাঁর অঙ্গগুলো প্রতিস্থাপন করা হয়।
৯ বছর আগে যুক্তরাজ্য থেকে ইসরায়েলে পাড়ি জমান লুসি ডি। গত শুক্রবার ৪৮ বছর বয়সী এ নারী গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। গত সোমবার তাঁর মৃত্যু হয়। একই হামলায় লুসি ডির দুই মেয়ে রিনা (১৫) ও মাইয়াও (২০) নিহত হয়েছেন। তাঁদের শেষকৃত্য হয়েছে আরও দুই দিন আগে।
ইসরায়েলের জাতীয় অঙ্গ প্রতিস্থাপন কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, ৫১ বছর বয়সী এক নারীর শরীরে লুসি ডির হৃৎপিণ্ড এবং ৫৮ বছর বয়সী এক নারীর শরীরে তাঁর ফুসফুস প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। ২৫ বছর বয়সী এক পুরুষের শরীরে তাঁর যকৃৎ এবং ৫৮ ও ৩৯ বছর বয়সী দুই পুরুষের শরীরে তাঁর দুটি কিডনির একটি করে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। আর লুসি ডির কর্নিয়াগুলো ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য রেখে দেওয়া হয়েছে।
লুসির স্বামী রাব্বি লিও ডি টাইমস অব ইসরায়েলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, তাঁর স্ত্রীর অঙ্গগুলো দান করে দেওয়ার ব্যাপারে পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে। কারণ, পরিবার মনে করে, কারও জীবন বাঁচাতে পারবে—এমন সবকিছুই দান করে দেওয়া উচিত।
ইসরায়েলি সম্প্রচারমাধ্যম কানের প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া একটি কালাশনিকভ রাইফেলে ২২টি বুলেটের খাপ পাওয়া গেছে।
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার উত্তেজনা চলার মধ্যে এ হামলা হয়। ঘটনার পর থেকে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) হামলাকারীদের খুঁজে বেড়াচ্ছে। ফিলিস্তিনি বন্দুকধারী হামলা চালিয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
ফিলিস্তিনের কর্মকর্তারা বলেছেন, সোমবার পশ্চিম তীরে জেরিকো এলাকার কাছে আকাবাত জাবর শরণার্থীশিবিরে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে মোহাম্মদ বালহান নামের ১৫ বছর বয়সী এক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলছে, ওই শিবিরে তারা জঙ্গিবিরোধী অভিযান চালাচ্ছিল। তখন তাদের লক্ষ্য করে গুলি ও বিস্ফোরক ছোড়া হলেও তারাও পাল্টা গুলি ছুড়েছে।
চলতি বছরের শুরু থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে জঙ্গি, সাধারণ নাগরিকসহ ৯০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আর ফিলিস্তিনি ও এক ইসরায়েলি আরবের হামলার ঘটনায় ১৮ জন ইসরায়েলি, একজন ইউক্রেনীয় এবং একজন ইতালীয় নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন ইসরায়েলের আধা সামরিক পুলিশের কর্মকর্তা; আর সবাই সাধারণ মানুষ।
জেকেএস/