প্রকাশিত: এপ্রিল ৩, ২০২৩, ০৬:৫১ পিএম
জেলির মতো শরীর ৮ কিলোমিটার গভীরেও পরিস্থিতিতে টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করে স্নেইলফিশকে। আক্ষরিক অর্থেই গভীর জলের মাছকে ক্যামেরাবন্দি করার কথা জানালেন একদল বিজ্ঞানী। সেই গভীরতা কতটা হতে পারে? ৮ কিলোমিটার গভীরে তো মাছের অস্তিত্ব মিলেছিল আগেই, এবার তার চাইতে কিছুটা গভীরে স্নেইলফিশ পাওয়া গেছে।
দক্ষিণ জাপানের ইজু-ওগাসাওয়ারা ট্রেঞ্চ বা খাতে ৮ হাজার ৩৩৬ মিটার বা ২৭ হাজার ৩৪৯ ফুট গভীরে একটি স্বয়ংক্রিয় ল্যান্ডারের সাহায্যে সেখানকার চিত্র ভিডিও করা হয়েছে।
২০১৭ সালে মারিয়ানা খাতে ৮ হাজার ১৭৮ মিটার গভীরে স্নেইলফিশ দেখা গিয়েছিল উল্লেখ করে গবেষক দলের প্রধান অধ্যাপক অ্যালান জেমিসন বলেন, আগের চাইতে ১৫৮ মিটার গভীর মাছের বিচরণ দেখা গেছে।
“যদি এই রেকর্ডও ভেঙে যায়, সেক্ষেত্রে আরও মিনিট খানেকের গভীরতা হতে পারে, সম্ভবত আর কয়েক মিটার।”
দ্য ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্র বিষয়ক এই বিজ্ঞানী ১০ বছর আগে থেকে ধারণা করছিলেন, ৮২০০ থেকে ৮৪০০ মিটার গভীরে মাছ মিলতে পারে। দশক ধরে বিশ্বজুড়ে অনুসন্ধানের পর সেই ধারণাই সত্যি হল।
স্নেইলফিশকে সত্যিকার অর্থে অদ্ভুত মাছ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এর রয়েছে তিনশরও বেশি প্রজাতি, যার বেশির ভাগই বাস করে অগভীর জলে, নদীর মোহনাতেও দেখা যায় এদের।
কিন্তু সেই স্নেইলফিশই উত্তর মহাসাগর ও দক্ষিণ মহাসাগরের ঠাণ্ডা জলের জীবন মানিয়ে নিয়েছে। এমনকি বিশ্বের গভীরতম খাতে পানির চরম চাপেও টিকে আছে।
বিজ্ঞানীর জানাচ্ছেন, ৮ কিলোমিটার গভীর জলে স্নেইলফিশকে ৮০ মেগাপ্যাসকেলেরও বেশি চাপ সহ্য করতে হচ্ছে, যা সমুদ্রপৃষ্ঠের তুলনায় ৮০০ গুণ বেশি চাপ। তাদের জেলির মতো শরীর প্রতিকূল পরিস্থিতিতে টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করে।
সাধারণত মাছে যে পটকা (বাতাসে পরিপূর্ণ বেলুন জাতীয় অঙ্গ) থাকে, তা স্নেইলফিশে না থাকার কারণে বাড়তি সুবিধা মেলে। তাছাড়া এরা চুষে ও খোলকী যেসব খাবার গ্রহণ করে, সেগুলো অনেক খাতেই মেলে।
অধ্যাপক অ্যালান জেমিসন বলছেন, মারিয়ানা খাতের চাইতেও গভীরে এই মাছ পাওয়ার সম্ভাব্য কারণ হতে পারে ইজু-ওগাসাওয়ারার পানি কিছুটা উষ্ণ হওয়ায়।
“আমরা ধারণা করেছিলাম যে সবচাইতে গভীর জলের মাছ সেখানে আছে এবং সেটা স্নেইলফিশ হতে পারে। কিন্তু লোকে যখন বলতে শুরু করে আমরা গভীর সমুদ্রের কিছুই জানি না, তখন হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। আমরা দেখিয়েছি। পরিস্থিতি খুবই দ্রুত বদলে যাচ্ছে।”