• ঢাকা শনিবার
    ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বিশ্বে জনসংখ্যা ৬ বিলিয়নে নেমে যাবে এই শতাব্দীর শেষে: বিজ্ঞানীদের পূর্বাভাস

প্রকাশিত: মার্চ ৩১, ২০২৩, ০৯:০২ পিএম

বিশ্বে জনসংখ্যা ৬ বিলিয়নে নেমে যাবে এই শতাব্দীর শেষে: বিজ্ঞানীদের পূর্বাভাস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

 বিশ্বজুড়েই কমছে জন্মহার। জনসংখ্যা বৃদ্ধি ২০৫০ সালের মধ্যে থেমে যেতে পারে। যার জেরে ২১০০ সালে পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা ৬ বিলিয়নে নেমে যেতে পারে। জন্ম প্রবণতা নিয়ে নতুন একটি বিশ্লেষণে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। 

দ্য ক্লাব অফ রোমের দ্বারা পরিচালিত এক সমীক্ষায় ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে যে বর্তমান প্রবণতা অব্যাহত থাকলে বিশ্বের জনসংখ্যা, যা বর্তমানে ৭.৯৬ বিলিয়ন এই শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে ৮.৬ বিলিয়ন হবে। তারপর শতাব্দী শেষের আগে কমে যাবে প্রায় ২ বিলিয়ন। মানব জাতির জন্য পূর্বাভাসটির ভালো এবং খারাপ উভয় দিকই আছে। মানুষের জনসংখ্যার নিম্ন প্রবণতা পৃথিবীর পরিবেশগত সমস্যাগুলিকে কিছুটা উপশম করবে ঠিকই, তবে সমস্যা সমাধানের পথ কঠিন করে তুলবে। 

জনসংখ্যার ক্রমহ্রাসমান প্রবণতা মানব জাতির সামগ্রিক বয়স বাড়িয়ে তুলবে এবং কর্মজীবী বয়সের মানুষের অনুপাতকে কমিয়ে দেবে। স্বাস্থ্যসেবা এবং পেনশনের অর্থায়নের জন্য তরুণদের উপর আরও বেশি চাপ বাড়বে। পরিবেশ বিজ্ঞানী এবং অর্থনীতিবিদদের নিয়ে গঠিত Earth4 All Collective-এর সদস্যরা তাদের গবেষণার ফলাফল ২৭ মার্চ একটি ওয়ার্কিং পেপারে প্রকাশ করেছেন।

নরওয়েজিয়ান বিজনেস স্কুলের সেন্টার ফর সাসটেইনেবিলিটির ডিরেক্টর এবং Earth4All-এর প্রজেক্ট লিডার এসপেন স্টোকনেস এক বিবৃতিতে বলেছেন ‘আমরা জানি নিম্ন-আয়ের দেশগুলিতে দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে প্রজনন হারের উপর ব্যাপক প্রভাব পড়ে। মেয়েরা শিক্ষার সুযোগ পায় এবং নারীরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন হয়। পাশাপাশি উন্নত স্বাস্থ্যসেবা পায় বলে প্রজনন হার কমে যায়।’ বৈজ্ঞানিকরা আসন্ন বিপদ সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সতর্ক করেছেন। 

নতুন ফলাফল অন্যান্য সাম্প্রতিক জনসংখ্যার পূর্বাভাস থেকে ভিন্ন। উদাহরণস্বরূপ, ২০২২ সালে জাতিসংঘ অনুমান করেছিল যে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের জনসংখ্যা ৯.৭ বিলিয়নে পৌঁছাবে এবং ২১০০ সালের মধ্যে সেটি ১০.৪ বিলিয়ন হবে। এক দশক আগে জাতিসংঘের অনুমান অনুসারে জনসংখ্যা ১১ বিলিয়ন হবে বলে জানানো হয়েছিল। Earth4All এর মডেলটি একটু বেশি জটিল, পরিবেশ এবং অর্থনীতির সাথে সংযুক্ত বিষয়গুলিকেও এর মধ্যে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শক্তির প্রাচুর্য, অসমতা, খাদ্য উৎপাদন, আয়ের মাত্রা এবং ভবিষ্যতের বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব। 

এই মডেলটি ভবিষ্যৎ মানব জনসংখ্যার জন্য দুটি সম্ভাব্য ফলাফলের পূর্বাভাস দিয়েছে। প্রথমটি হলো- সরকারগুলি পরিবেশের সমস্যা সম্পর্কে উদাসীন। যার জেরে বিশ্বের জনসংখ্যা ঝুঁকির মুখে আছে। আর তাই ২০৫০ সালের মধ্যে জনসংখ্যা ৯ বিলিয়নে পৌঁছলেও ২১০০ সালে ৭.৩ বিলিয়নে নেমে আসবে। দ্বিতীয়, ফলাফলটি হলো- সরকারগুলি শিক্ষা, সমতাপূর্ণ সমাজ এবং সবুজ পরিবর্তনে বিনিয়োগ করবে- ফলে শতাব্দীর অর্ধেক পথে এসে গ্রহের জনসংখ্যা দাঁড়াবে ৮.৫ বিলিয়ন এবং ২১০০ সালের মধ্যে পৌঁছে যাবে ৬ বিলিয়নে। দলটি জনসংখ্যার আকার এবং মানুষের জনসংখ্যা টিকিয়ে রাখার জন্য গ্রহের ক্ষমতা নিয়েও তদন্ত করেছে। 

তারা দেখেছে যে, জনপ্রিয় ম্যালথুসিয়ান বর্ণনার বিপরীতে, জনসংখ্যার আকার জলবায়ু পরিবর্তনের মূল কারণ নয়। পরিবর্তে, তারা উচ্চ মাত্রার খরচের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের ওপর দোষ চাপিয়েছে। অবিলম্বে এই খরচ হ্রাস করার কথা জানিয়েছে তারা। নরওয়েজিয়ান স্কুল অফ বিজনেসের একজন  অধ্যাপক এবং Earth4All -এর সদস্য জর্জেন রান্ডার্স বলছেন- ‘মানবতার প্রধান সমস্যা জনসংখ্যা নয়, বরং নির্বিচারে কার্বন এবং বায়োস্ফিয়ার খরচ।’  

 

এএল/

আন্তর্জাতিক সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ