প্রকাশিত: মার্চ ২৯, ২০২৩, ০৫:৫৭ পিএম
আবারও গণতন্ত্র সম্মেলনের আয়োজন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার (২৯ মার্চ) হোয়াইট হাউসে দ্বিতীয়বারের মতো শুরু হয়েছে ২ দিনের এ ‘সামিট ফর ডেমোক্রেসি-২০২৩’। চলবে বৃহস্পতিবার অবধি।
যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও এ সম্মেলনের সহ-আয়োজক কোস্টারিকা, নেদারল্যান্ডস, জাম্বিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া। সম্মেলনের প্রথম পর্ব হবে ভার্চুয়ালি। নিজ নিজ দেশ থেকেই বিশ্বনেতারা আলোচনায় বসবেন।
দ্বিতীয় পর্বে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য সহ-আয়োজক দেশের সশরীর ও ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণের মাধ্যমে আলোচনা অব্যাহত থাকবে। বিশ্বনেতারা ছাড়া সুশীল সমাজ ও ব্যক্তি খাতের প্রতিনিধিরাও এতে অংশ নেবেন। এ সম্মেলন নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিশ্বের রাজনীতি সচেতন বহু মানুষেরই প্রশ্ন, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রেই গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের অভাব, নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি এবং প্রতিনিয়ত চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে, সেখানে ঘটা করে এমন সম্মেলন করার যৌক্তিকতা কতটুকু?
সম্মেলনে কোনো দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে; আবার কোনো দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। ফলে এমন প্রশ্নও উঠছে, আমেরিকার এ গণতন্ত্র সম্মেলনই বা কতটুকু গণতান্ত্রিক?
গণতন্ত্র সম্মেলন
২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে নির্বাচনী প্রচারে বাইডেন যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার একটি গণতন্ত্র সম্মেলন। তিনি বলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে প্রথম বছরেই গণতন্ত্র সম্মেলনের আয়োজন করবেন তিনি।
সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতেই ২০২১ সালে প্রথম সম্মেলন আয়োজন করেন বাইডেন। সেবার বিশ্বের ১১২টি দেশকে সম্মেলনে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ভার্চুয়াল সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন প্রায় সাড়ে ৭শ প্রতিনিধি।
চলতি বছর দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজন করা হচ্ছে এ সম্মেলনের। এবার এতে নতুন ৮টিসহ ১২০টি দেশ আমন্ত্রণ পেয়েছে। বলা হচ্ছে, বিশ্বের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সুরক্ষা ও কর্তৃত্ববাদী শাসন প্রতিহত করা, দুর্নীতি দমন ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখা এ সম্মেলনের প্রধান লক্ষ্য।
গণতন্ত্র সম্মেলন কতটা গণতান্ত্রিক?
প্রথমবার যখন এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়, তখই এ সম্মেলন কতটা গণতান্ত্রিক ছিল সেই প্রশ্ন ওঠে। কারণ যেসব দেশকে ওই সম্মেলনে অংশ নেয়ার জন্য বাছাই করা হয়েছে, তা কীসের ভিত্তিতে করা হয়েছে। অংশগ্রহণকারী দেশ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কোনো গণতান্ত্রিক কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
বিশ্লেষকদের মতে, অংশগ্রহণকারী দেশ নির্বাচনে সামরিক-রাজনৈতিক সম্পর্ক, ভূরাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ আর কৌশলগত সমর্থনকেই বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া যে তিনটি ক্রাইটেরিয়ন বা বিষয়কে সম্মেলনের প্রধান লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, আমন্ত্রিত বেশিরভাগ দেশেরই সেগুলো উতরানোর যোগ্যতা নেই।
কার্যত, এ সম্মেলন যতটা না গণতান্ত্রিক তার চেয়ে শতগুণ রাজনৈতিক। আর সেই রাজনীতি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক কর্তৃত্বের রাজনীতি। সেই রাজনীতি হলো গণতন্ত্রের নামে দেশগুলোকে পক্ষে টানার রাজনীতি। সেই রাজনীতি হচ্ছে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোকে চোখ রাঙানোর রাজনীতি।
বিভাজন ও সংঘাতই লক্ষ্য
বর্তমান বৈশ্বিক রাজনীতির মঞ্চে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান প্রতিপক্ষ চীন। রয়েছে পুরনো শত্রু রাশিয়াও। এই দুই দেশকেই গণতন্ত্র সম্মেলনের অংশগ্রহণকারী দেশের তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। কিন্তু যে দেশটির সঙ্গে চীনের চরম দ্বন্দ্ব সেই তাইওয়ানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। দাওয়াত দেয়া হয়েছে রাশিয়ার উঠানের দেশ ইউক্রেনকে। আর তাই সংগত কারণেই ক্ষোভে ফুঁসছে চীন ও রাশিয়া।
পাকিস্তান দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম কর্তৃত্ববাদী ও দুর্নীতিপরায়ণ দেশ- যেখানে মানবাধিকারের লেশমাত্র নেই, সে দেশটিকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বাইডেনের তথাকথিত গণতন্ত্র সম্মেলনে।
এ প্রসঙ্গে চীন বলেছে, গণতন্ত্রকে যুক্তরাষ্ট্র ‘গণবিধ্বংসী অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছে। তাদের প্রকৃত উদ্দেশ্য হচ্ছে বিশ্বজুড়ে ‘বিভাজন’ ও ‘সংঘাত’ পরিস্থিতি তৈরি করা। বেইজিং আরও বলেছে, বিশ্বে নতুন শক্তি হিসেবে চীনের উত্থানকে থামিয়ে দিতে চায় ওয়াশিংটন।
অনেক বিশ্লেষকের মতে, বর্তমান বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের যে ভূমিকা তা কারো অজানা নয়। আর তাই তারা যখন গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে কথা বলে তখন তা হাস্যকরই শোনায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দেশে দেশে যত সামরিক অভ্যূত্থান ও সরকার উৎখাতের ঘটনা ঘটেছে, তার ৯৯ শতাংশের নেপথ্যে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্তরাষ্ট্রের হাত ছিল।
যখনই কোনো দেশ বা সে দেশের শাসক বা সরকারের সঙ্গে বনিবনা হয়নি তখনই সেই শাসক বা সরকারের উৎখাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন মার্কিন নেতারা। কখনো গৃহযুদ্ধ লাগিয়ে কখনো বা সরাসরি আগ্রাসন চালিয়ে আবার কখনো সামরিক অভ্যূত্থানের মাধ্যমে সরকার উৎখাত করেছেন তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের আগাগোড়া ভূমিকা তার গণতন্ত্র ও মানবতাবিরোধী চরিত্রের প্রমাণ বহন করে। বিশেষ করে আফগানিস্তান, সিরিয়া, লিবিয়া, ফিলিস্তিন, ইরাকসহ আরও অনেক দেশে তারা প্রত্যক্ষভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে বা তাদের মিত্রদের দ্বারা এসব দেশে গণতন্ত্রের ধোঁয়া উড়িয়ে মানুষের জীবনকে যুদ্ধময় করে তুলেছে। যেখানে এখনো মানবাধিকার বা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা তো দূরের কথা মানুষের স্বাভাবিক জীবনের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে পারেনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা তার কথিত মিত্ররা।
শুধু তাই নয়, প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি থামিয়ে দিতে সেই দেশে এলিট শ্রেণি, বিজ্ঞানী ও বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছে। এমনকি কৌশলে দুর্ভিক্ষ তৈরি করে লাখ লাখ মানুষ হত্যায় ভূমিকা রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। আর তাই বিশ্বের কোটি কোটি শান্তিকামী মানুষের প্রশ্ন, এমন একটা দেশ কীভাবে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের রক্ষক হতে পারে?
বিশ্লেষকদের মতে, আমেরিকার গণতন্ত্র মূলত স্বার্থপরতার গণতন্ত্র। গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও বাক-স্বাধীনতার মতো বিষয়গুলোকে নিজেদের সামরিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব-প্রতিপত্তি রক্ষায় শ্রেফ অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন মার্কিন নেতারা। শুধু প্রভাব ও ক্ষমতা বজায় রাখতে ও নিজেদের যাবতীয় কুকর্ম আড়াল করতেই তারা মাঝে মাঝেই অন্য দেশের ওপর আগ্রাসন চালায় ও লুটতরাজ করে।
ত্রুটিপূর্ণ মার্কিন গণতন্ত্র
তথাকথিত গণতন্ত্র সম্মেলনের মাধ্যমে বাইডেন প্রশাসনের চাওয়া এতটুকুে, বাছাই করা দেশগুলো তাদের আমন্ত্রণে সাড়া দেবে। গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে তাদের বক্তব্য ও বিবৃতি শুনবে ও তা রক্ষায় নতুন নতুন প্রতিশ্রুতি দেবে। গত সম্মেলনেই যেমনটা দেখা গেছে; আমন্ত্রিত দেশগুলোর প্রত্যেকটিই মৌখিকভাবে কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু প্রধানত ভার্চুয়াল একটা বৈঠকে করা এমন মৌখিক প্রতিশ্রুতি কতটা গুরুত্ব বহন করে তা প্রশ্ন সাপেক্ষ। যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের নিজের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়েই নানা প্রশ্ন রয়েছে।
বহু বিশ্লেষকই এ ব্যাপারে একমত যে, মার্কিন গণতন্ত্র ব্যাপকভাবে ত্রুটিপূর্ণ এবং তা এই মুহূর্তে বড় হুমকির মুখে রয়েছে। এরপর গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ ওঠে। যার ফলাফল নিয়ে এখন পর্যন্ত জনমনে সন্দেহ ও অবিশ্বাস রয়েছে। ওই নির্বাচনে নানা জনমত জরিপে এগিয়ে থাকলেও শেষ পর্যন্ত অনাকাঙিক্ষতভাবে হেরে যান সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্পের ৬৮ শতাংশ সমর্থক এবং বিরোধী রিপাবলিকান পার্টির এক বড় অংশই মনে করেন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার দল ডেমোক্রেটিক পার্টি কারচুপি ও জালিয়াতি করেই ক্ষমতায় এসেছেন। প্রকৃত বিজয়ী ট্রাম্পের থেকে জয় ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। যে কারণেই বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে সত্যায়নের দিন মার্কিন পার্লামেন্ট ক্যাপিটল হিলে রিপাবলিকান সমর্থকরা হামলা চালায়, যা আমেরিকার ২০০ বছরের ইতিহাসে নজিরবিহীন।
মূলত যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে দাবি করলেও দেশটি আর প্রকৃত গণতন্ত্রের দেশ নেই। গত কয়েক বছর ধরেই দেশটির গণতন্ত্র নিয়ে নেতিবাচক রিপোর্ট আসছে। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে লন্ডনভিত্তিক দ্য ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) গণতন্ত্র সূচক ২০২২।
সূচকে পাঁচটি মূল বিষয়ের আলোকে বিশ্বব্যাপী দেশগুলোর গণতন্ত্রের প্রকৃতি মূল্যায়ন করা হয়েছে। বিষয়গুলো হলো- নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও বহুত্ববাদ, সরকারের কার্যকারিতা, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ, রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও নাগরিক স্বাধীনতা। এগুলোর ভিত্তিতে সূচকে দেশ ও অঞ্চলগুলোকে ৪টি বিভাগে ভাগ করা হয়েছে। পূর্ণ গণতন্ত্র, ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র, হাইব্রিড শাসনব্যবস্থা ও কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা।
এ সূচকে ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্রের দেশগুলোর তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের নামও রয়েছে। সূচকে আগের বছরের চেয়ে চার ধাপ পিছিয়ে ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র বিভাগে ৩০তম স্থানে রয়েছে বাইডেনের দেশ।
ইআইইউর প্রতিবেদন মতে, সুষ্ঠুভাবে কাজ করা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অপরিহার্য উপাদান রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর মানুষের আস্থা কমে যাওয়াই এর জন্য দায়ী। পিউ, গ্যালাপ ও অন্য জরিপ প্রতিষ্ঠানগুলোও নিশ্চিত করেছে, যুক্তরাষ্ট্রে সরকারের ওপর থেকে মানুষের আস্থা ঐতিহাসিক পর্যায়ে নেমে গেছে। গণতন্ত্রের মানের ক্ষেত্রে এটা ক্ষয়িষ্ণু প্রভাব ফেলেছে।
গণতন্ত্র সম্মেলন ও বাংলাদেশ
এবারের গণতন্ত্র সম্মেলনে ১২০টি দেশের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়া থেকে ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও মালদ্বীপকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। বাংলাদেশকে কেন আমন্ত্রণ জানানো হয়নি তা নিয়ে বরাবরের মতো রব তুলেছেন বিএনপি ও বিরোধীদলীয় জোটের নেতারা।
তবে বাইডেনের গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ না জানানোর পেছনে কী বার্তা রয়েছে, তা একটু বিশ্লেষণ করলেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করছেন, বাংলাদেশকে এ তালিকায় না রাখা ‘অশীর্বাদরুপী অভিশাপ’।
গণতন্ত্র ইস্যুতে বাংলাদেশের অনেক কিছু বলার ও দেখানোর মতো উন্নতি হয়েছে, যা আগে ছিল না। বাংলাদেশের জন্মই তো হয়েছে গণতান্ত্রিক লড়াই সংগ্রামের মধ্যদিয়ে, যেখানে আমেরিকার ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ!
কেউ কেউ বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও বাইডেন প্রশাসন মূলত চীন ও রাশিয়ার বিপরীতে নিজেদের নতুন বলয় তৈরির লক্ষ্যে এমন কৌশল খাটাতে পারে। কারণ যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের কথা বললেও বিশ্বের বহু দেশে তারা মানবাধিকার বা গণতন্ত্র রক্ষায় ভূমিকা তো রাখেইনি বরং মানবাধিকার লঙ্ঘনে তাদের নীতি বরাবরই প্রশ্নবিদ্ধ। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ না জানানোয় বাংলাদেশ অনেক দিকে থেকে নিজেদের চাপের বাইরে রাখতে সক্ষম হবে এবং এটি আশীর্বাদস্বরুপ।
সম্প্রতি প্রকাশিত ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) রিপোর্টে গণতান্ত্রিক সূচকে বাংলাদেশ বৈশ্বিকভাবে ৫.৯৯ স্কোর অর্জন করে গণতন্ত্র সূচকে দুই ধাপ এগিয়েছে। ২০২২ সালে ১৬৭টি দেশের মধ্যে করা গবেষণা ও তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের মাধ্যমে বাংলাদেশের অবস্থান নির্ধারণ করা হয়েছে।
সূচকে বাংলাদেশ ৭৩ নম্বরে অবস্থান করছে। হাজারও সীমাবদ্ধতাকে উতরে বাংলাদেশ আরও ভালো স্কোর করবে এবং আরও উন্নত গণতন্ত্র উপহার দেবে আগামী দিনে এমনটাই প্রত্যাশা অনেকের। সে লক্ষ্যে কাজও করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ ২০০৮ সালের পর থেকে বর্তমানে সবচেয়ে ভালো স্কোর অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বলছে, গণতন্ত্রের জন্য বাজে বছরেও বাংলাদেশসহ এশিয়ার কিছু দেশের স্কোরে উন্নতি হয়েছে।
গণতন্ত্র সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। ভারত ৭.০৪ স্কোর নিয়ে এ অঞ্চলে গণতান্ত্রিক সূচকে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। বৈশ্বিকভাবে বাংলাদেশ ৭৩তম, ভারত ৪৬তম আর পাকিস্তান ১০৭তম অবস্থানে রয়েছে।
১০৭তম অবস্থানে থেকেও বাইডেনের ডেমোক্রেসি সামিটে আমন্ত্রণ পেয়েছে পাকিস্তান। কিন্তু বাংলাদেশ ৭৩তম স্থানে থেকেও কেন আমন্ত্রণ পায় না এমন প্রশ্ন উঠছে? বিশ্লেষকরা বলছেন, এর কারণ ডেমোক্রেসি বা গণতন্ত্র এখন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কর্তৃত্ববাদের নতুন হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। বিশ্বময় তারা এখন গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রশ্নে একেক অঞ্চলে একেক রকম নীতি অবলম্বন করছে।
এএল