প্রকাশিত: মার্চ ১৩, ২০২৩, ০৪:০৮ পিএম
পর পর দু’টি বিয়ে করেও হয়নি সন্তান। আকাঙ্ক্ষা পূরণ হচ্ছে না কেন জানতে চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে চরম পথই বেছে নিল পুরুলিয়ার আড়শা থানা এলাকার বাসিন্দা উমেশ মাঝি। নিজের স্ত্রীকে কুড়ুলের এক কোপে খুন করে সটান সে চলে যায় গ্রামেরই একটি মন্দিরে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে দেখে শিউরে ওঠেন এলাকার মানুষ।
কিন্তু হত্যার কিছুক্ষণ পরেই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান উমেশ। গত রোববার (১২ মার্চ) তাকে গ্রেফতার করে আড়শা থানার পুলিশ। ওই দিনই পুরুলিয়া জেলা আদালতে পেশ করা হলে ধৃতকে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। ঘটনায় তন্ত্রমন্ত্রের যোগ রয়েছে কি না খতিয়ে দেখছে পুলিশ। জেলার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। দেহটির ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। পুরো বিষয়টি জানতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।’ নিজেদের হেফাজতে নেয়ার পর পুলিশ ঘটনার পুনর্নির্মাণ করতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
নিহত গৃহবধূর নাম হিমানি মাঝি (৩০)। বছর দুয়েক আগে আড়শার হাড়মাডি গ্রামের বাসিন্দা উমেশের সঙ্গে লাগোয়া মিশিরটাঁড় গ্রামের হিমানির বিয়ে হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম বিয়েতে সন্তান না হওয়ায় ফের বিয়ের পিঁড়িতে বসে উমেশ। কিন্তু দ্বিতীয় বিয়ের পর পেরিয়ে যায় দু`বছর। সন্তান হয়নি এ বারও। সন্তান কামনায় গুনিনদের কাছেও গিয়েছিল সে।
কিন্তু সন্তান না হওয়ায় দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গেও সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে তার। সংসারে ক্রমশ বাড়তে থাকে অশান্তি। গত বৃহস্পতিবার স্ত্রীর সঙ্গে প্রবল কলহ হয় উমেশের। কলহ চলাকালীন কুড়ুল জাতীয় অস্ত্র নিয়ে স্ত্রীর মাথায় সজোরে আঘাত করে সে। প্রচণ্ড রক্তপাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় হিমানির। সেই মুহূর্তে নিজের হাতেও সে আঘাত করে বলে জানা গিয়েছে।
হত্যার পরেই রক্তাক্ত অবস্থায় এলাকার একটি মন্দিরে চলে যায় উমেশ। সেখানে সে খুনের কথা জানায় কয়েক জনকে। খবর পেয়ে নিহত স্ত্রীর বাপের বাড়ির লোকজন হাড়মাডি গ্রামে চলে আসেন। মৃত হিমানির বাবা সোনারাম মাঝি শুক্রবার আড়ষা থানায় জামাইয়ের বিরুদ্ধে খুনের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সোনারাম বলেন, `প্রথম পক্ষের স্ত্রীর সন্তান না হওয়ায় উমেশ আমার মেয়েকে দু`বছর আগে বিয়ে করে।
কিন্তু, মেয়ের সন্তান হয়নি। এ নিয়ে উমেশ আমার মেয়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করত। মাঝে মধ্যে চরম ঝামেলাও করত। বৃহস্পতিবার আমি জানতে পারি, আমার মেয়ে হিমানিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে উমেশ খুন করেছে। ওর কঠোরতম শাস্তি দাবি করছি আমি।`