ছবি: সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন ৭১ বছর আগে। এরপর সন্তান ও সংসারে এতটাই মজে যান যে পড়াশোনা চলে যায় বাতিলের খাতায়। ৭১ বছর পর যখন খানিকটা অবসর মিলল, তখন ভাবলেন, পড়াশোনাটা শুরু করলে মন্দ হয় না। অতঃপর চলল পুরোদমে পড়াশোনা এবং ৯০ বছর বয়সে স্নাতক হয়ে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিলেন জয়েস ডিফাউ।
যুক্তরাষ্ট্রের নর্দার্ন ইলিনয় ইউনিভার্সিটিতে ১৯৫১ সালে ভর্তি হয়েছিলেন জয়েস ডিফাউ। পরিকল্পনা ছিল গার্হস্থ্য অর্থনীতিতে ডিগ্রি নেবেন। তবে চার্চে গিয়ে দেখা পান বিশেষ একজনের। বদলে যায় তার পরিকল্পনাও। সিএনএনকে জয়েস বলেন, ‘সাড়ে তিন বছর ক্লাস করেছিলাম, তবে তার সঙ্গে দেখা হওয়ার পর আর চালিয়ে যাওয়া হয়নি।’
সেই বিশেষ মানুষটির নাম ডন ফ্রিম্যান সিনিয়র। দুজনের বিয়ে হয় ১৯৫৫ সালে, তিন সন্তান তাদের। ফ্রিম্যানের মৃত্যু হলে বছর পাঁচেক পর রয় ডিফাউকে বিয়ে করেন জয়েস। নাম বদলে জয়েস ভিওলা হয়ে যান জয়েস ডিফাউ। তাদের ঘরে দুই জোড়া যমজসহ মোট ছয় সন্তান রেখে মারা যান রয়। পরের বছরগুলোতে তাদের পরিবার আরও বড় হয়েছে। জয়েসের নাতি-পুতির সংখ্যা এখন ৪১।
যাহোক, ২০১৯ সালে এসে জয়েসের মনে হলো অসমাপ্ত ডিগ্রি এবার শেষ করা যাক। নর্দার্ন ইলিনয় ইউনিভার্সিটিতে ফোন করে ক্লাস শুরুর ব্যাপারে জানালে সবাই খুব অবাক হন। ক্লাস শুরু করেন, তবে আর আগের মতো নয়।
হেঁটে ক্যাম্পাসে গিয়ে ক্লাস করার বদলে ডিফাউ অংশ নেন কম্পিউটার স্ক্রিনের সামনে বসে। সেটিই তার প্রথম কম্পিউটার, পরিচালনা শিখেছেন সন্তানদের কাছে।
পড়াশোনার চাপ নিতে না পারলে মাঝেমধ্যে ছেড়ে দেয়ার কথাও মনে এসেছে তার। তবে শেষ পর্যন্ত হাল ধরে রেখেছেন। প্রতি সেমিস্টারে একটা করে ক্লাস নিতেন তিনি। এভাবে তিন বছর অক্লান্ত চেষ্টার পর অবশেষে কালো গাউন আর মাথায় টুপি চড়িয়ে ‘ব্যাচেলর অব জেনারেল স্টাডিজ’ ডিগ্রি পেলেন জয়েস।
জয়েসের এ সাফল্যে আনন্দিত তার সন্তান ও নাতি-নাতনিরাও। শেষ বয়সে এসেও যে তিনি নিজেকে এভাবে প্রমাণ করবেন, বিষয়টি তারা সত্যিই ভাবতে পারেননি। তাই তো জয়েস নিজে যেমন নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করলেন, তেমনি তার নাতি-নাতনিরাও দেখলেন নতুন আর স্মার্ট এক দাদিমাকে।
আরিয়ানএস/
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন