প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৩, ০৮:৩৮ পিএম
২০০৭ সালের নভেম্বর মাসে দেশে জরুরি অবস্থা জারির জন্য মোশারফকে দায়ী করে পাকিস্তান সরকার। তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। পারভেজ মোশারফের বিরুদ্ধে বিরাট রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। ২০১৩ সাল থেকে এই মামলা পড়ে ছিল। ২০১৯ সালের ৫ ডিসেম্বর এই মামলায় ৭৬ বছরের মোশারফ কে বয়ান দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল লাহোরের বিশেষ আদালত। এরপর তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণা করে বিশেষ আদালত। দেশের ইতিহাসে কোনও সেনাশাসককে চূড়ান্ত বিশ্বাসঘাতকতা ও দেশদ্রোহের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ঘটনা সেই প্রথম।
কী প্রতিক্রিয়া ছিল মোশারফের?
সাজা ঘোষণার সময় দুবাইয়ে চিকিৎসারত ছিলেন পারভেজ মোশারফ । শাস্তির কথা জানার পর দুবাইয়ে হাসপাতালের বিছানা থেকে এক ভিডিয়ো বার্তা দেন মোশারফ । তিনি বলেন, "দশ বছর ধরে দেশের সেবা করেছি। দেশের হয়ে লড়াই করেছি। এই মামলায় আমার কথাটুকুও শোনা হল না। স্রেফ ষড়যন্ত্রের শিকার করা হল।" যদিও এই মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার রাস্তাও খোলা রাখা হয়েছিল প্রাক্তন পাক প্রেসিডেন্টের জন্য।
পাকিস্তানের বিশেষ আদালতের রায়ে একটি অংশ নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে। রায়ের ৬৬ নম্বর প্যারাগ্রাফে বলা হয়েছিল, "অসুস্থ মোশারফ যদি মৃত্যুদণ্ডের আগেই মারা যান, তবে তাঁর মৃতদেহ ইসলামাবাদের ডি চকে তিন দিন ধরে ঝুলিয়ে রাখা উচিত।" এই বিষয়টি নিয়ে পাক সেনার তরফে চরম ক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। মোশারফের মৃত্যুদণ্ড ধর্ম এবং মানবিকতার বিরুদ্ধ বলে প্রচার শুরু করে পাক সেনা। তাদের বক্তব্য ছিল, এ ভাবে টেনেহিঁচড়ে প্রকাশ্যে দেহ ঝুলিয়ে রাখার নিদান নৃশংস। ফলে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছিল ইমরান খানের সরকার।
বাতিল হয় মৃত্যুদণ্ডের সাজা
২০২০ সালে পারভেজ মোশারফকে দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের সাজার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে লাহোর হাইকোর্ট। এই সাজাকে অসাংবিধানিক তকমা দেয় আদালত। লাহোর হাইকোর্টের তিন বিচারকের বেঞ্চ (বিচারপতি সৈয়দ মঝহার আলি আকবর নকভি, বিচারপতি মহম্মদ আমির ভাট্টি ও বিচারপতি চৌধুরি মাসুদ জাহাঙ্গীর) সর্বসম্মতি ক্রমে বিশেষ আদালত গঠনকেই `অসাংবিধানিক` ঘোষণা করে। আদালতের বক্তব্য ছিল, মোশারফের বিরুদ্ধে দায়ের করা রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাটি আইন মেনে করা হয়নি। স্বস্তি পান মোশারফ ।
আরিয়ানএস/