প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০২৩, ০৬:০৯ পিএম
বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গ বলেছেন, বাংলাদেশের জন্য সহায়তা অব্যাহত থাকবে। যে কোনো সংকটে বাংলাদেশকে দৃঢ় সমর্থন দেবে বিশ্বব্যাংক। এ ছাড়া উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে পাশে থাকবে সবসময়।
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) তিন দিনের ঢাকা সফর শেষ এসব কথা বলেন তিনি।
বিশ্বব্যাংকের এমডি জানান, ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উচ্চমধ্যম আয়ের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করার জন্য প্রস্তুত আছে সংস্থাটি।
বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশের মধ্যে অংশীদারিত্বের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে ২১ জানুয়ারি ঢাকায় আসেন তিনি। মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) তার ঢাকা সফর শেষ হয়। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সফর শেষে এক্সেল ভ্যান বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির গতিপথ অনেক দেশের জন্য অনুপ্রেরণা। দেশটি উল্লেখযোগ্য উপায়ে অনেক উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে। বাংলাদেশ রেকর্ড সময়ের মধ্যে দারিদ্র্য হ্রাস করেছে এবং দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযোজনে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। সেই সঙ্গে সমস্যা সমাধানে উদ্ভাবনী ভূমিকা পালন করেছে। বিশ্বব্যাংক গত পাঁচ দশক ধরে একটি অবিচল অংশীদার এবং বাংলাদেশকে সবুজ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং উন্নয়ন অর্জনে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভ্যান ট্রটসেনবার্গ বলেন, বিশ্বব্যাংক করোনা মহামারি এবং ইউক্রেন-রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রভাবসহ বৈশ্বিক ধাক্কার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সাহায্য করছে। উচ্চ প্রবৃদ্ধির পথে বাধাগুলো দূর করতে সাহায্য করছে সংস্থাটি। পাশাপাশি বেসরকারি খাতে আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি উন্নত করতে এবং জলবায়ু ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়তা অব্যাহত থাকবে বিশ্বব্যাংকের।
ভ্যান ট্রটসেনবার্গ বলেন, ৫০ বছরের অংশীদারিত্বে বিশ্বব্যাংক প্রায় ৩৯ বিলিয়ন ডলার ঋণ ও অনুদান দিয়েছে।
এর আগে সোমবার ভ্যান ট্রটসেনবার্গ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজন ও দুর্যোগ প্রস্তুতিতে বাংলাদেশের ভূমিকা এবং ২০২০-২০২২ সালের মধ্যে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ ফোরামের সভাপতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।
ভ্যান ট্রটসেনবার্গ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ ১৯৭১ সাল থেকে ঘূর্ণিঝড়জনিত মৃত্যু ১০০ গুণেরও বেশি কমিয়ে সাহসী ও উদ্ভাবনী পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। ফলে জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা এবং দুর্যোগ প্রস্তুতিতে বিশ্বব্যাপী নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে বাংলাদেশ।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে ৭০০ কিলোমিটারেরও বেশি উপকূলীয় বাঁধ নির্মাণ ও পুনর্বাসনে সহায়তা করেছে। এ ক্ষেত্রে ১ হাজারটি সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করা হয়েছে যা, স্কুল হিসেবেও কাজ করে। ৫৫০ কিলোমিটার পাকা রাস্তা করা হয়েছে, যা আশপাশের গ্রামের জন্য যাতায়াত সুবিধা সৃষ্টি করেছে।
সফরের শেষ দিন মঙ্গলবার ভ্যান ট্রটসেনবার্গ বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নকৃত ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। এসব আশ্রয়কেন্দ্র স্বাভাবিক আবহাওয়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
এ সময় তিনি স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে কথা বলেন। পাশাপাশি তিনি কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। প্রায় ১১ লাখ বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশের উদারতায় ধন্যবাদ জানান।
এনএমএম/এএল