প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৩, ২০২৩, ০২:৫১ এএম
এক কোটি মুরগি মেরে এবার ডিম সংকটে পড়ল জাপান। মুরগির সঙ্গে ছিল হাঁস আর উটপাখিও। এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড-ফ্লুর মুখোমুখি হয়েই এত বড় সিদ্ধান্তে এসেছে দেশটি।
মঙ্গলবার ১০ মিলিয়ন হাঁস-মুরগি হত্যা করে রেকর্ড করেছে জাপান। সংকটের কারণে এবার ডিমের দাম বেড়ে আকাশচুম্বী হওয়ার আশঙ্কায় পড়েছে টোকিও। এএফপি।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে, কৃষি মন্ত্রণালয় জানায়, বার্ড-ফ্লুর কবলে পড়ে এই মৌসুমে প্রায় ৯.৯৮ মিলিয়ন প্রাণী হত্যা করা হয়েছে, যা আগের ২০২০ অর্থবছরের হত্যা করা ৯.৮৭ মিলিয়নের রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গেছে।
ন্যাশনাল ফেডারেশন অব অ্যাগ্রিকালচারাল কো-অপারেটিভ অ্যাসোসিয়েশনের জেন-নোহ নামের এক কর্মকর্তা জানান, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত প্রায় ১০.৯ মিলিয়ন হাঁস-মুরগি মারা হয়েছে দেশটিতে। তিনি প্রাদুর্ভাবের কারণে বাজারে মুরগির ডিমের সরবরাহ কমে যাওয়ার আশঙ্কাও করছিলেন। বলেন, ‘নিশ্চিতভাবে বাজারের ডিমের দাম বেড়ে যাবে।’
কৃষি মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে পাবলিক ব্রডকাস্টার এনএইচকে জানায়, চালান কমে যাওয়ায় জাপানে ডিমের পাইকারি দাম গত মাসে রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। মুরগির খাবারের অত্যাধিক দাম, প্রতিপালন খরচ এবং এভিয়ান ফ্লুর কারণে অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে।
সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের দেওয়া তথ্য অনুসারে, বন্য ও জলজ পাখিরা প্রাকৃতিকভাবে এভিয়ান ফ্লুতে সংক্রমিত হয়। আক্রান্ত পাখি লালা এবং অন্যান্য শারীরিক স্রাবের মাধ্যমে অন্য প্রাণীদের মধ্যে ভাইরাস ছড়িয়ে দেয়। এ বছর জাপানে ভাইরাসের সঞ্চালন সর্বকালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।
মঙ্গলবার, দক্ষিণ-পশ্চিম জাপানের মিয়াজাকিতে একটি পোলট্রি ফার্মে সর্বশেষ এভিয়ান ফ্লু ধরা পড়েছিল। কৃষি মন্ত্রণালয় জানান, হিরোশিমা অঞ্চলের একটি খামারেও এই রোগের সন্ধান মিলেছে। যেখানে প্রায় ৮ লাখ মুরগি রয়েছে। এছাড়া এর মধ্য দিয়ে সারা দেশে শনাক্তকৃত সামগ্রিক প্রাদুর্ভাবের ঘটনা ৫৮-তে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।
২০২০ মৌসুমে রেকর্ড ৫২-কেও ছাড়িয়ে গেছে। ভাইরাসটির দ্বারা দেশটির অন্তত ২৩টি অঞ্চল প্রভাবিত। ২০২০ সালে যার সংখ্যা ছিল ১৮ এবং এটিই আগের সর্বকালের সর্বোচ্চ রেকর্ড ছিল। এবারের বার্ড-ফ্লুর প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছিল গত বছর অক্টোবরে, যা এ বছর মে মাস পর্যন্ত চলতে পারে বলে ধারণা করছে মন্ত্রণালয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশেও বার্ড-ফ্লু ব্যাপক হারে বাড়ছে। সেই সঙ্গে বৃদ্ধি পাচ্ছে ডিমের মূল্যও।
যুক্তরাষ্ট্রে ভাইরাসের কবলে পড়ে হাঁস-মুরগির সংখ্যা অনেক কমে যায়। ফলে ডিমের দাম নভেম্বরের মধ্যে অন্যান্য মুদি জিনিসের থেকে অনেক বেশি হয়ে দাঁড়িয়েছিল।