• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ভারতে ওমিক্রনের নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট বিএফ.৭ শনাক্ত

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৮, ২০২২, ০২:৩১ এএম

ভারতে ওমিক্রনের নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট বিএফ.৭ শনাক্ত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

চীনে ইতোমধ্যেই নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে করোনা। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। চীনে নতুন করে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির পেছনে যে ভ্যারিয়েন্টকে দায়ী করা হচ্ছে, সেই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট বিএফ.৭-এর সন্ধান পাওয়া গেছে ভারতে।

চীনের পাশাপাশি ব্রাজিল, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, হংকং ও তাইওয়ানসহ আরও কয়েকটি দেশে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। স্বভাবতই নতুন করে উদ্বেগ বাড়ছে ভারতেও। যদিও পুরো দেশেই একাধিক রাজ্যের পক্ষে বিভিন্ন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। দফায় দফায় বৈঠকে বসছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে সব জনবহুল এলাকায় মাস্ক পরার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ‘মন কি বাত’ নামক রেডিও ভিত্তিক অনুষ্ঠানে থেকে পুরো দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও।

সব রাজ্য ও কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলগুলোর কোভিড হাসপাতাল এবং নার্সিং হোমগুলোকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডব্য। করোনার এই নতুন ঢেউ রুখতে দেশ কতটা প্রস্তুত, রাজ্যগুলোতে কি কি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে, সেখানকার স্বাস্থ্য পরিষেবা কেমন, হাসপাতালগুলোতে স্বাস্থ্য অবকাঠামো ঠিকঠাক আছে কিনা, করোনা রোগী আসলে কতটা দ্রুততার সঙ্গে তাদের পরিষেবা শুরু করা হয়, হাসপাতালগুলোতে আইসোলেশন ওয়ার্ড, আইসোলেশন বেড, অক্সিজেন বেড, ভেন্টিলেটর বেড পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে কিনা, সংকটজনক কোভিড রোগীদের জন্য ভেন্টিলেটর ও তরল অক্সিজেন কি পরিমাণে আছে, সবকিছুই খতিয়ে দেখতেই মকড্রিল করা হয়েছে পুরো ভারতে।

মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর হাত ধরেই এই মকড্রিলের সূচনা হয়। এদিন সকাল ১০টা নাগাদ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজে দিল্লির সফদরজঙ্গ হাসপাতাল পরিদর্শন করে সেখানকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। মন্ত্রীর সঙ্গে এই পরিদর্শনে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয় ও হাসপাতালের শীর্ষ কর্মকর্তা ও চিকিৎসকরা। পরে টুইট করে সেই হাসপাতালের ভিডিও ও ছবি পোস্ট করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এই কর্মসূচিতে করোনা রোগীদের যাতে মেডিকেল অক্সিজেন ও চিকিৎসার পরিকাঠামো ঠিকঠাক থাকে, সেই বিষয়ে জোর দিতে বলা হয়।

হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলোতে পর্যাপ্ত সংখ্যক করোনা চিকিৎসার জন্য প্রশিক্ষিত চিকিৎসক, নার্সিং স্টাফসহ অন্যান্য কর্মী আছে কিনা, অক্সিজেন ট্যাংকারগুলো পূর্ণ আছে কিনা এই বিষয়গুলোতে খেয়াল রাখতে বলা হয়। এছাড়া কোমর্বিডিটি করোনা রোগীদের বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া, গুরুত্বপূর্ণ ওষুধের যোগান, হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলোতে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর, ভেন্টিলেটর, বাইপ্যাপসহ সব লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম, করোনা টেস্ট করার ব্যবস্থা রাখা আছে কিনা-এই সব বিষয়গুলোর উপর জোর দেয়া হয়।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, আমাদের এটা সুনিশ্চিত করতে হবে যে ভারতে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির খবর নেই। প্রধানমন্ত্রী সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। করোনার সংক্রমণ যদি বৃদ্ধিও পায়, সেক্ষেত্রে সরকারও প্রস্তুত আছে। মানুষ যাতে যথাযথ চিকিৎসা পায়, তা সুনিশ্চিত করতে আজ গোটা দেশের কোভিড হাসপাতালগুলোতে মকড্রিল করা হচ্ছে।

সফদরজঙ্গ হাসপাতাল ছাড়াও দিল্লির লোকনায়ক জয় প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতাল ও অ্যাপোলো হাসপাতালসহ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে মকড্রিল করা হয়। এর পাশাপাশি কলকাতা, জম্মু-কাশ্মীর, হায়দারাবাদ, মুম্বাই, তামিলনাড়ু, আসাম, ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশসহ সব জায়গাতেই কোভিড হাসপাতালগুলোতে মকড্রিল করা হয়। কলকাতার শম্ভু নাথ পণ্ডিত হাসপাতাল, এমআর বাঙ্গুর, বেলেঘাটা আইডিসহ গোটা পশ্চিমবঙ্গে ৪০টি হাসপাতালে এদিন এই মকড্রিল চলে।

মকড্রিলের পর সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলোর পক্ষে একটি রিপোর্ট পাঠিয়ে দেয়া হবে রাজ্যের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে। পরে রাজ্যের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষে সেই রিপোর্ট কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানো হবে। এদিকে চীনে নতুন করে কোভিড বিস্ফোরণের পর নেজাল ভ্যাকসিনকে ছাড়পত্র দিয়েছে ভারত। টিকা উৎপাদনকারী সংস্থা বায়োটেক ইন্ট্রানেজাল কোভিড টিকাকে ছাড়পত্র দিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বুস্টার ডোজ হিসেব এই নেজাল ভ্যাকসিন নেয়া যাবে। ইতোমধ্যেই এই টিকার দামও নির্ধারণ করা হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষে। জিএসটি বাদে নেজাল ভ্যাকসিনের দাম ৮০০ রুপি, জিএসটিসহ এর দাম পড়তে পারে আনুমানিক ১ হাজার রুপি।

এদিকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৫৭ জন। গোটা দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪ কোটি ৪৬ লাখ ৭৭ হাজার ৪৫৯ জন এবং মৃত ৫ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৬ জন।

এআরআই

আর্কাইভ