প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৭, ২০২২, ০৫:২৭ এএম
পাকিস্তানের প্রধান বিরোধী দল তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই) নেতা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে দলের নেতৃত্ব থেকে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)। আলোচিত তোশাখানা মামলায় কমিশনের দেয়া রায়ের আলোকে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
ইমরান খানকে পিটিআইয়ের নেতৃত্ব থেকে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু ডনের প্রতিবেদনমতে, সোমবার (৫ ডিসেম্বর) ইমরান খানের নামে একটি নোটিশ জারি করা হয়েছে। এই আদেশের ওপর একটি শুনানি ও ইমরান খানকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়ে একটি দিনও ধার্য করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)। আগামী ১৩ ডিসেম্বর ওই শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। তোশাখানা মামলায় গত ২১ অক্টোবর এক রায়ে ইমরান খানের পার্লামেন্ট সদস্যপদ বাতিলসহ আগামী জাতীয় ও প্রাদেশিক যে কোনো নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)।
তবে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের এক আদেশে সেই নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করা হয়। ইমরান খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে বাইরের বিভিন্ন সরকারপ্রধান ও সরকারি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে যেসব দামি উপহার তিনি পেয়েছিলেন, সেসব সম্পর্কে তোশাখানা কর্তৃপক্ষকে ভুল তথ্য দিয়েছিলেন তিনি। এই অভিযোগে ইসিতে একটি মামলা করা হয় এবং তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরই নিষেধাজ্ঞা দেয় কমিশন।
১৯৭৪ সালে পাকিস্তানের সরকারি একটি বিভাগ হিসেবে তোশাখানা প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই বিভাগটি প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, আইনপ্রণেতা, সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান ও অন্যান্য বিশিষ্টজনের দেয়া উপহার জমা রাখে। পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী, দেশটির প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রী, আইনপ্রণেতা বা সরকারের পদস্থ কর্মকর্তাদের পাওয়া সব উপহার অবশ্যই এই বিভাগে জমা দিতে হবে। যারা এসব উপহার পেয়েছেন তারা চাইলে পরে সেগুলো কিনে নিতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে উপহারের বর্তমান যা বাজারমূল্য, তার ৫০ শতাংশ কম মূল্যে তা কেনার সুযোগ আছে তাদের। গত আগস্টে পাকিস্তানে ক্ষমতাসীন জোট সরকারের সবচেয়ে বড় শরিক দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ- নওয়াজের (পিএমএলএন) সদস্য মোহসিন নওয়াজ রানঝা ইমরানের বিরুদ্ধে তোশাখানায় অনিয়মের অভিযোগে মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৮ থেকে ২০২১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে বাইরের বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধান ও সরকারি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে পাওয়া বিভিন্ন উপহারের বাজারমূল্য সম্পর্কে যে তথ্য দিয়েছেন ইমরান খান, তাতে সেসব মূল্যের দাম অনেক কম দেখানো হয়েছে।
প্রদর্শিত দামের ভিত্তিতে কম মূল্যের সুবিধা নিয়ে তোশাখানা থেকে সেসব উপহার ক্রয়ের পর ইমরান খান বেশি দামে সেগুলো বাইরে বিক্রি করেছেন বলেও উল্লেখ করা হয় মামলার অভিযোগপত্রে।
সাজেদ/এএল