প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২২, ০৬:২৩ পিএম
প্যারিসের বিমানবন্দরে দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে বসবাস করা ইরানের সেই নাসেরি মারা গেছেন। ১৯৮৮ সাল থেকে মেহেরান করিমি নাসেরি রয়েসি চার্লেজ ডি গাওলি বিমানবন্দরে বসবাস করে আসছিলেন। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে বিবিসি।
নাসেরির জীবনের গল্প নিয়ে ২০০৪ সালে নির্মাণ করা হয় হলিউড সিনেমা দ্য টার্মিনাল।
বিমানবন্দরের একজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘নাসেরিকে বৈধভাবে ফ্রান্সে বসবাসের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।’
১৯৪৫ সালে ইরানের খাজিস্তান প্রদেশে মেহেরান করিমি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তার মাকে খুঁজে বের করার জন্য প্রথমে ইউরোপে যাত্রা করেন।
তিনি কয়েক বছর বেলজিয়ামে বসবাস করেন। এরপর তার কাছে সঠিক কাগজপত্র না থাকায় তাকে যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ড এবং জার্মানি থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপরই তিনি ফ্রান্সে চলে যান। সেখানে তিনি বিমানবন্দরের ২ নম্বর টার্মিনালে বসবাস শুরু করেন।
বিমানবন্দরের এক পাশে তার ব্যবহৃত ট্রলি দিয়ে ঘিরে বসবাসের জন্য স্থান নির্বাচন করেন। যেখানে বসে তিনি তার জীবনের গল্প লিখতেন এবং বই আর খবরের কাগজ পড়তেন।
তার গল্পটি আন্তর্জাতিক মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল এবং স্টিফেন স্পিলবার্গের নজর কেড়েছিল, যিনি হ্যাঙ্কস এবং ক্যাথরিন জেটা-জোনস অভিনীত দ্য টার্মিনাল পরিচালনা করেছিলেন।
এই ছবি মুক্তি পাওয়ার পর অনেক তার সঙ্গে দেখা করার জন্য ভিড় জমাতেন। এক সময়ে নাসেরি নিজেকে ‘স্যার আলফ্রেড’ হিসেবে ডাকতেন। কারণ তখন তিনি এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন যে দিনে তাকে ছয়টি ইন্টারভিউ দিতে হত।
১৯৯৯ সালে ফ্রান্সে তাকে অভিবাসী হিসেবে থাকার অনুমতি প্রদান করা হলেও ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি বিমানবন্দরে ছিলেন। এরপর তিনি সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ফ্রান্সের লিভারেশন রিপোর্টে বলা হয়, তাকে নিয়ে যে ছবি নির্মাণ করা হয়েছিল তা থেকে তিনি বেশ কিছু অর্থ পান। পরবর্তীতে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সেই অর্থ খরচ দিয়ে তিনি একটি হোস্টেলে থাকেন।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, কয়েক সপ্তাহ আগে তিনি আবার বিমানবন্দরে ফিরে আসেন এবং সেখানেই তিনি মারা যান। এ সময় তার কাছে কয়েক হাজার ইউরো পাওয়া যায়।
এআরআই