প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২২, ০৬:৩৮ পিএম
সাড়ে আট মাস ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। এই অভিযানে ইরানের ড্রোন ব্যবহার করছে রুশ সেনারা। এ নিয়ে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে গোপনে রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ তোলে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের এই অভিযোগকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছে পিয়ংইয়ং। এমনকি ভবিষ্যতেও রাশিয়ার কাছে অস্ত্র বিক্রির কোনো পরিকল্পনা নেই বলে দাবি করেছে দেশটি।
মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনে যুদ্ধের জন্য পিয়ংইয়ং রাশিয়াকে গোপনে অস্ত্র সরবরাহ করছে বলে যুক্তরাষ্ট্র যে দাবি করেছে, সেটি প্রত্যাখ্যান করেছে উত্তর কোরিয়া। পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির দাবি, তারা মস্কোর কাছে কখনও অস্ত্র বিক্রি করেনি এবং ভবিষ্যতে কোনও বিক্রির পরিকল্পনাও নেই।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবি গত সপ্তাহে বলেন, উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে ‘উল্লেখযোগ্য’ সংখ্যক আর্টিলারি শেল সরবরাহ করছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তথ্য রয়েছে। তবে তার সেই দাবি উড়িয়ে দিয়ে মঙ্গলবার উত্তর কোরিয়ার সরকারি কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ)-এর মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান জানাল কিমের প্রশাসন।
উত্তর কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগগুলোকে ‘গুজব’ বলে অভিহিত করে বলেছেন, পিয়ংইয়ং ‘রাশিয়ার সঙ্গে কখনোই ‘অস্ত্রের লেনদেন’ করেনি’ এবং ‘ভবিষ্যতে এটি করার কোনও পরিকল্পনাও নেই’। কেসিএনএ-তে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে উত্তর কোরিয়ার ওই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের এই ধরনের পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উত্তর কোরিয়ার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বিবেচনা করি। একইসঙ্গে ওয়াশিংটনের এই কর্মকাণ্ড পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে অবৈধ নিষেধাজ্ঞা প্রস্তাব আহ্বান করার প্রচেষ্টা বলে মনে করি।’ দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ছয় দিনের বিমান মহড়া চালায়। এর জবাবে গত সপ্তাহে, উত্তর কোরিয়া সম্ভাব্য আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম)-সহ একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে এবং সমুদ্রে কয়েকশ কামানের গোলা ছুঁড়েছে। পাল্টাপাল্টি এসব কর্মকাণ্ডে কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যেই উত্তর কোরিয়ার এই বক্তব্য সামনে এলো।
গত সেপ্টেম্বরে উত্তর কোরিয়া মস্কোর কাছে আর্টিলারি শেল এবং রকেট বিক্রি করার পরিকল্পনা করছে বলে মার্কিন গোয়েন্দা নথিতে দাবি করা হলেও তা অস্বীকার করে পিয়ংইয়ং। তবে যে কোনো অস্ত্র সহায়তা মস্কো এবং পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর করবে, কারণ ইউক্রেনে যুদ্ধের কারণে বিশ্বে রাশিয়া অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। উল্লেখ্য, রাশিয়ার পর উত্তর কোরিয়া ছিল বিশ্বের একমাত্র দেশ যা ইউক্রেনের পূর্ব ডনবাস অঞ্চলে দোনেতস্ক পিপলস রিপাবলিক (ডিপিআর) এবং লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক (এলপিআর)-কে স্বীকৃতি দিয়েছে। এছাড়া ইউক্রেনের দখলকৃত ভূখণ্ডে তথাকথিত গণভোটের মাধ্যমে সেগুলো রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্তির প্রতিও সমর্থন প্রকাশ করেছে উত্তর কোরিয়া।
কিউ/এসএই