• ঢাকা রবিবার
    ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

বাংলাদেশীকে জামাই বানালেন অনুপ চেটিয়া

প্রকাশিত: অক্টোবর ১০, ২০২২, ১০:১২ এএম

বাংলাদেশীকে জামাই বানালেন অনুপ চেটিয়া

সিটি নিউজ

কলকাতা (ভারত) প্রতিনিধি:

বাংলাদেশী যুবকের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন আসামের উলফা নেতা অনুপ চেটিয়া। দুর্গা পূজার উৎসবের সময় আসামের ডিব্রুগড় জেলার চাবুয়া বিধানসভা কেন্দ্রের জেরাই গ্রামে উভয় পরিবারের উপস্থিতিতে ওই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে।

বরের নাম অনির্বান চৌধুরীর (৩০)। কণের নাম বন্যা বড়ুয়ার (২৭)।  তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে  চলছিল প্রেমের সম্পর্ক। সম্পর্ক মেনে নিয়ে অনুপ চেটিয়া ও তার স্ত্রী মনিকা বড়ুয়া তাদের মেয়েকে বিয়ে দিয়ে বাংলাদেশীদের সাথে আত্মীয়তা করেছেন। বাংলাদেশি যুবক অনির্বাণ চৌধুরী অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন।

বাংলাদেশি ছেলের সঙ্গে কেন মেয়ে দিচ্ছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে অনুপ চেটিয়া বলেন, ঢাকার ধানমন্ডির মাস্টার মাইন্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে পড়ার সময় তাদের দুজনের পরিচয় হয়। দীর্ঘদিন উভয়ের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক অব্যাহত থাকে। এ কারণে আমরা বিয়েতে মত দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আমি দীর্ঘ ২৮ বছর বাংলাদেশে অবস্থান করেছি। বাংলাদেশের মানুষের আতিথেয়তা ও ভালোবাসা পেয়েছি। এ জন্য বাংলাদেশের মানুষের প্রতি দুর্বলতা কাজ করে। সেটাও এই বিয়েতে রাজি হওয়ার মূল একটা কারণ।

বাংলাদেশে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা আছে কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বাংলাদেশে যখন ছিলাম তখন পরিচয় গোপন করে লুকিয়ে ছিলাম। বাকি সময় জেলে ছিলাম। এবার বৈধভাবে সবাইকে জানিয়ে যেতে চাই। কিন্তু আমার যাওয়া ভারত ও বাংলাদেশ সরকার- কেউই ভালোভাবে দেখবে না। তবে আত্মীয়তা হয়ে গেলে একবার যাবো। সেখানে অনেক বন্ধু রয়েছে, তাদের সঙ্গে সাক্ষাতের ভীষণ ইচ্ছা আছে।

মেলবোর্নের ইসকন মন্দিরে আগামী ২৫ নভেম্বর বরের পক্ষ থেকে একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হচ্ছে। উভয় পরিবার এবং তাদের বন্ধুরা সেখানে উপস্থিত থাকবেন।

অনুপ চেটিয়া বাংলাদেশে অতি পরিচিত একটি নাম। তিনি ১৯৭৯ সালে ইউনাটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম (উলফা) সংগঠনটির কমান্ডার-ইন-চিফ পরেশ বড়ুয়া সহ আরও পাঁচজন নেতার সাথে মিলে উলফা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আসাম সরকার তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার পর তিনি বাংলাদেশে লুকিয়ে ছিলেন। ১৯৯৭ সালের ২১ ডিসেম্বর ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকার পুলিশ। অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থান এবং অবৈধভাবে বিদেশি মুদ্রা ও স্যাটেলাইট ফোন রাখার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হয়। ১৮ বছর বাংলাদেশের কারাগারে বন্দি থাকার পর ২০১৫ সালে তাকে চুক্তি অনুযায়ী ভারতের কাছে হস্তান্তর করে বাংলাদেশ। শান্তি চুক্তির শর্তে তিনি জামিন পান। গুয়াহাটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তির পর অনুপ চেটিয়া নয়াদিল্লির সঙ্গে শান্তির মূল আলোচনাকারী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। 

আরেকটি অংশ উলফা-স্বাধীনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পরেশ বড়ুয়া। যিনি বর্তমানে চেয়ারপারসন ও কমান্ডার ইন চিফ হিসেবে সশস্ত্র আন্দোলন করছেন।

 

এসএএস

আন্তর্জাতিক সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ