প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২২, ০৩:৫৫ পিএম
সিরিয়ার উপকূলে অভিবাসীদের বহনকারী একটি নৌকা ডুবে ৩৪ অভিবাসী প্রাণ হারিয়েছেন। এ ঘটনায় জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে আরও অনেককে। অভিবাসী ও শরণার্থীদের বহনকারী এই নৌকাটি লেবানন থেকে যাত্রা করেছিল এবং পথিমধ্যে সিরিয়ার উপকূলে এটি ডুবে যায়। এতেই এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
বৃহস্পতিবার সিরিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, নৌকাডুবির ঘটনার পর মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা লোকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪ জনে। এছাড়া জীবিত উদ্ধার হওয়া আরও ২০ জনকে তার্তুসের বাসেল হাসপাতালে চিকিৎসা করা হচ্ছে।
সিরিয়ার পরিবহন মন্ত্রণালয় বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের উদ্ধৃত করে বলেছে, গত মঙ্গলবার লেবাননের উত্তর মিনিয়েহ অঞ্চল থেকে নৌকাটি যাত্রা শুরু করে এবং এটিতে ১২০ থেকে ১৫০ জনের মধ্যে আরোহী ছিল।
বন্দর মহাপরিচালক সামের কুব্রুসলি বলেছেন, উত্তাল সমুদ্র এবং প্রবল বাতাসের কারণে সৃষ্ট কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেই অনুসন্ধান অভিযান চলছে।
কিছু লেবানিজ, সিরিয়ান এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সংকট-বিধ্বস্ত লেবানন থেকে সমুদ্রপথে ইউরোপে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা ক্রমেই বাড়ছে এবং অবৈধ এই যাত্রা পথে এটিই সবচেয়ে মারাত্মক ঘটনা।
অর্থনৈতিক সংকটের কারণে শুধু লেবাননেই হাজার হাজার লোক তাদের চাকরি হারিয়েছে এবং লেবানিজ পাউন্ডের মূল্য ৯০ শতাংশেরও বেশি কমে গেছে। এছাড়া হাজার হাজার পরিবার তাদের ক্রয় ক্ষমতা হারিয়েছে এবং এখন তারা কার্যত চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছে।
তার্তুসের গভর্নর আব্দুল হালিম খলিল হাসপাতালে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের দেখতে গেছেন বলে জানা গেছে। অবশ্য ডুবে যাওয়া নৌকায় ঠিক কতজন লোক ছিল এবং তারা ঠিক কোথায় যাচ্ছিল তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট হওয়া যায়নি। তবে কোস্টগার্ড এখনও মৃতদেহের সন্ধান করছে।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে বিভিন্ন দেশের মানুষ ছিল।
আলজাজিরা বলছে, হাজার হাজার লেবানিজ, সিরিয়ান এবং ফিলিস্তিনি গত কয়েক মাস ধরে ইউরোপে আরও ভালো জীবনের আশায় নৌকায় করে লেবানন ছেড়েছে। লেবাননের জনসংখ্যা ৬০ লাখ, যার মধ্যে ১০ লাখ সিরীয় শরণার্থী রয়েছে।
বর্তমানে লেবানন দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি। এর আগে সর্বশেষ ১৮৫০ এর দশকে দেশটি এমন ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পতিত হয়েছিল। এই সংকট কাটাতেই অনেকেই লেবানন ছাড়ছেন। বিশেষ করে যুদ্ধের কারণে যেসব সিরিয়ান লেবাননে আশ্রয় নিয়েছিলেন তাঁরা এখন আবারও দেশে ফেরার চেষ্টা করছেন। এ ছাড়া ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুরাও লেবানন ছাড়ছেন।
গত এপ্রিলে লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির কাছ থেকে যাত্রা করা একটি অভিবাসী বহনকারী নৌকা লেবাননের নৌবাহিনীর বাধার মুখে দেশটির উপকূলে ডুবে যায়। সেই নৌকায় অন্তত ৮০ জন লেবাননিজ, সিরিয়ার এবং ফিলিস্তিনি অভিবাসী ছিলেন। যাদের মধ্যে প্রায় ৪০ জনকে উদ্ধার করা হয় এবং ৭ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। বাকি ৩০ জনের খোঁজ আর মেলেনি।
জেডআই/