• ঢাকা শনিবার
    ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

প্রেমিক পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে বিয়ে করলেন নারী চিকিৎসক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২২, ০১:৩৭ এএম

প্রেমিক পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে বিয়ে করলেন নারী চিকিৎসক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

কোনো বাঁধাই মানে না সত্যিকারের প্রেম। ধনী-গরিব, জাতি-ধর্ম, শত্রু-মিত্র এসব কিছুই আটকাতে পারে না প্রেমিক-প্রেমিকাকে। হাসপাতালের এক পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে বিয়ে করে চিরায়ত এই সত্যটি আরও একবার প্রমাণ করলেন এক নারী চিকিৎসক। ঘটনাটি ঘটেছে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই চিকিৎসকের নাম কিশওয়ার সাহিবা এবং তার স্বামী ও হাসপাতালের ওই সাফাইকর্মীর নাম শাহজাদ। তারা পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের ওকারা জেলার দিপালপুর শহরের বাসিন্দা।

মূলত কিশওয়ারই শাহজাদকে বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং বিয়ের পর একটি ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে তাদের অনন্য প্রেমের গল্প ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়ে যায়। ‘মেরা পাকিস্তান’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলে পাকিস্তানি এ দম্পতি তাদের প্রেমের গল্প শেয়ার করেছেন।

সংবাদমাধ্যম বলছে, পাকিস্তানের যে হাসপাতালে কিশওয়ার সাহিবা চিকিৎসক হিসেবে কাজ করতেন, ওই একই হাসপাতালে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে আসতেন শাহজাদ। অনেক সময় চা-নাস্তাও দিয়ে যেতেন। সেখানে দেখেই শাহজাদকে পছন্দ হয় চিকিৎসক কিশওয়ার সাহিবার।

নিজেদের গল্প বলার সময় স্বামী শাহজাদ স্পষ্ট করে জানান, এমনটা যে হতে পারে, তিনি ভাবতেই পারেননি! ভালোবাসার প্রথম প্রস্তাবটা দিয়েছিলেন কিশওয়ারই। যখন হাসপাতালে পরিচ্ছন্নতার কাজ করতে এসেছিলেন শাহজাদ, তখন তার মোবাইল নম্বরটা চেয়ে নেন কিশওয়ার।

এরপর হোয়াটসঅ্যাপে দু’জনের কথাবার্তা চলতে থাকে। একদিন শাহজাদ একটি ‘স্ট্যাটাস মেসেজ’ দিয়েছিলেন হোয়াটসঅ্যাপে। সেই দেখে এক মুহূর্তেই সিদ্ধান্তটা নিয়ে ফেলেন কিশওয়ার। শাহজাদকে নিজের কর্মস্থল হাসপাতালে ডেকে পাঠান তিনি। তারপর সোজাসুজি জানিয়ে দেন ভালোবাসার কথা।

অবশ্য আচমকা এ ধরনের কথা শুনে চমকে গিয়েছিলেন শাহজাদ। জ্বর এসে গিয়েছিল তার। সেই জ্বরের চিকিৎসা হয়েছিল এবং স্বাভাবিকভাবে সেটি করেছিলেন কিশওয়ারই। আর এরপরই দু’জন বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন।

কেন শাহজাদকে ভালো লেগেছিল কিশওয়ারের? উত্তরে এই নারী চিকিৎসক জানিয়েছেন, এক বারের জন্যও শাহজাদকে দেখে তার ‘চা-ওয়ালা’ মনে হয়নি। সাদাসিধে মানুষটাকেই ভালো লেগে গিয়েছিল চিকিৎসক কিশওয়ারের।

অবশ্য কিশওয়ার মেনে নিলেও শাহজাদকে তার স্বামী হিসাবে মানতে পারেননি কিশওয়ারের সহকর্মীরা। তাদের কটুক্তির জন্য ওই হাসপাতাল ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন কিশওয়ার। এখন তার ইচ্ছা, ওই এলাকাতেই একেবারে নিজের একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র খুলবেন। প্রত্যাশিত ভাবেই পাশে দাঁড়িয়েছেন শাহজাদ।

তবে সহকর্মীরা না মানলেও স্বামী শাহজাদের ব্যক্তিত্বের ব্যাপক প্রশংসা করেছেন কিশওয়ার। নারী এই চিকিৎসক বলছেন, তিনি আগে শাহজাদকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন কারণ তার সাথে দুর্দান্ত বিবাহের সম্ভাবনা তিনি হারাতে চান না। এমনকি নিজের জীবনের সকল সিদ্ধান্ত তিনি মাত্র একদিনে নিয়েছিলেন বলেও জানান কিশওয়ার।

অন্যদিকে শাহজাদ জানান, তিনি তিনজন চিকিৎসকের অফিস কক্ষ পরিষ্কার করতেন এবং চা পরিবেশন করতেন। একদিন কিশওয়ার তার ফোন নম্বর চেয়ে নেন, আর এর পরে তারা একে অপরের সাথে কথা বলতে শুরু করেন।

এদিকে ইউটিউবে তাদের হৃদয়গ্রাহী প্রেমের গল্প ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের আনন্দিত করেছে। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘অসাধারণ প্রেমের গল্প। সুন্দর দম্পতি।’ অন্য একজন মন্তব্য করেছেন, ‘সুন্দর দম্পতি’।

জেডআই/

আন্তর্জাতিক সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ