প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২২, ০২:৫৮ পিএম
তেল
আবিবে পা রেখে চার দিনের মধ্যপ্রাচ্য সফর শুরু করছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট
জো বাইডেন। ইসরায়েল থেকে ফিলিস্তিন হয়ে সরাসরি যাবেন সৌদি আরবে। প্রেসিডেন্ট
হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর এটা তার প্রথম মধ্যপ্রাচ্য সফর।
ইসরায়েলের রাজধানী এখন নিরাপত্তার
চাদরে ঢকা। ১৫ হাজারেরও বেশি ইসরায়েলি পুলিশ আর স্বেচ্ছাসেবী রয়েছেন নিরাপত্তা
নিশ্চিত করার দায়িত্বে। জনজীবন থমকে গেছে প্রায়।
এক পথচারী বললেন, প্রেসিডেন্ট
বাইডেন আসছেন। এটা আমাদের জন্য খুব গৌরবের ব্যাপার। তবে জেরুজালেমবাসী হিসেবে
আমাদের জন্য দুর্ভোগেরও। কারণ নগর পুরোপুরি রুদ্ধ থাকবে এবং আমরা কেউ ঘর থেকে
বের হতে পারবে না।
আল জাজিরা জানায়, এদিন এয়ার ফোর্স
ওয়ানে করে তেল আবিবে বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণে করেন বাইডেন।
সেখানে তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান ইসরাইলি কর্মকর্তারা। এরপর প্রাথমিক এক বক্তব্যে
ইসরাইলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ককে ‘অত্যন্ত গভীর’ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
একই সঙ্গে নিজেকে একজন ‘জায়নিস্ট’ বলেও অভিহিত করেন
বাইডেন। তার ভাষায়, জায়নিস্ট হওয়ার
জন্য কারও ইহুদি হওয়ার দরকার নেই। আমি গর্বের সঙ্গে জানাচ্ছি, যুক্তরাষ্ট্র ও
ইসরাইল সম্পর্ক আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে আরও গভীর ও শক্তিশালী। অবশ্য ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতের নিরসনে
দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের কথাও বললেন যুক্তরাষ্ট্রের এ নেতা।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী
ইয়ার লাপিদও বাইডেনকে ‘বড় জায়নিস্ট’ বলে বর্ণনা করেন।
তাকে ইসরাইলের সবচেয়ে ভালো বন্ধুদের একজন অভিহিত করে তিনি বলেন, ইসরাইলের সঙ্গে
আপনার সম্পর্ক সবসময় ব্যক্তি সম্পর্কের মতো।
আল জাজিরার প্রতিবেদন মতে, এটা বাইডেনের ১০ম
ইসরাইল সফর। ১৯৭৩ সালে প্রথমবার তেল আবিব সফর করেন তিনি। ওই বছর প্রথম ডেলাওয়ার
থেকে সিনেটর নির্বাচিত হন বাইডেন। এবারের সফরে তিনি দুইদিন জেরুজালেমে অবস্থান
করবেন। এ সময়ে প্রধানমন্ত্রী লাপিদ ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুসহ
ইসরাইলি নেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে অংশ নেবেন।
এরপর শুক্রবার (১৫ জুলাই)
ইসরাইল অধিকৃত পশ্চিম তীর সফর করবেন বাইডেন। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) প্রেসিডেন্ট
মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। এর ইসরাইল থেকে সরাসরি জেদ্দার ফ্লাইট
ধরবেন। সৌদি আরব সফরকালে রিয়াদে সৌদি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি উপসাগরীয়
মিত্র দেশগুলো আয়োজিত এক সম্মেলনে যোগ দেবেন।
পশ্চিম জেরুজালেম থেকে আল
জাজিরার সাংবাদিক স্টেফানি ডেকার জানান, তেল আবিব পৌঁছার পর বাইডেনের প্রাথমিক বক্তব্যে
ইসরাইল-ফিলিস্তিন সমস্যার ছিটেফোটাও দেখা যায়নি। ডেকারের ভাষায়, তার এ বক্তব্য
মূলত ইসরাইলি কর্মকর্তা ও দেশটির নাগরিকদের উদ্দেশে। এর প্রধান বিষয় ছিল ইসরাইল, ইসরাইলের সঙ্গে
যুক্তরাষ্ট্র ও তার নিজের সম্পর্ক কেমন।
সৌদি আরব সবসময় বলে এসেছে, স্বাধীন, সার্বভৌম
ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত তারা ইসরাইলের সঙ্গে
সম্পর্কোন্নয়নের পথে যাবে না। কিন্তু দুই দেশের সম্পর্কের অচলাবস্থা দীর্ঘদিন ধরে
চলে আসায় এবং পরিবর্তনের বড় কোনো আভাস কখনো দেখা না যাওয়ায় ইসরাইল প্রশ্নে সৌদি
আরবের কঠোরতা খানিকটা কমে এসেছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
এ পরিস্থিতিতে দুই দেশের
সম্পর্কে আরেও পরিবর্তন দেখার আশা নিয়েই মধ্যপ্রাচ্য সফর শুরু করলেন বাইডেন। গত
শনিবার দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট-এ প্রকাশিত লেখায়ও সে কথাই বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
তাই কয়েক মাস আগেও সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যার কারণে সৌদি সরকারের বিরুদ্ধে
রীতিমতো তোপ দাগানো বাইডেন ওই প্রসঙ্গে এখন নীরব।
জেডআই/