• ঢাকা রবিবার
    ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

গর্ভপাতের অধিকার হারালো যুক্তরাষ্ট্রের নারীরা

প্রকাশিত: জুন ২৫, ২০২২, ০৬:২৬ পিএম

গর্ভপাতের অধিকার হারালো যুক্তরাষ্ট্রের নারীরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের নারীদের গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকার বাতিল করে দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। গর্ভপাতকে বৈধতা দেওয়া প্রায় ৫০ বছরের পুরোনো আইনটি শুক্রবার (২৪ জুন) বাতিল করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ আদালত গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকার বাতিল করে দিয়ে গর্ভপাতের অনুমোদন দেওয়া বা না দেওয়ার সিদ্ধান্তের ক্ষমতা প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের ওপর ছেড়ে দিয়েছে।

রায়ে বলা হয়, গর্ভপাতের অধিকার সংবিধানের আওতায় থাকতে পারে না এবং গর্ভপাত নিয়ন্ত্রণের অধিকার অবশ্যই মানুষের এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ন্যস্ত করা উচিত।

প্রতিটি রাজ্যই এখন নিজস্বভাবে গর্ভপাত নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপ নিতে পারবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই রায়কে মর্মান্তিক ভুলবলে অভিহিত করেছেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে রাস্তায় নেমেছে বিক্ষোভকারীরা।

মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যে গর্ভধারণের ১৫ সপ্তাহের পর গর্ভপাত নিষিদ্ধ করাকে চ্যালেঞ্জ করে আনা এক মামলার রায়ে সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারের পক্ষে রায় দিলে গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকার কার্যত রহিত হয়ে যায়।

মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে এখন রক্ষণশীল বিচারকরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকার রহিত করার পক্ষে মতামত দেন ছয়জন বিচারক, বিপক্ষে দেন তিনজন।

ধারণা করা হচ্ছে এই রায়ের পর অর্ধেকের বেশি অঙ্গরাজ্যে গর্ভপাত নিষিদ্ধ অথবা এটির ওপর নানারকম বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর তাৎক্ষণকভাবে গর্ভপাত নিষিদ্ধ হবেইতোমধ্যে এমন আইন পাস করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ১৩টি অঙ্গরাজ্য।

এক জরিপে বলা হচ্ছে, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে যুক্তরাষ্ট্রে সন্তানধারণে সক্ষম তিন কোটি ৬০ লাখ নারী গর্ভপাতের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে। ডানপন্থী ও ধর্মীয় রক্ষণশীলদের জন্যে এই সিদ্ধান্ত অনেক বড় বিজয়। তারা ১৯৭৩ সালে গর্ভপাতকে বৈধতা দেয়ার পর থেকেই এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছিল। সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে শীর্ষস্থানীয় ডেমোক্র্যাট নেতারা সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তের নিন্দা করেছেন। এর মধ্যে আছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তিনি একে মৌলিক স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ বলে উল্লেখ করেছেন। প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেছেন, নিষ্ঠুর এই সিদ্ধান্তের অর্থ হচ্ছে নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় মধ্যবর্তী নির্বাচনে নারীর অধিকারের বিষয়টি নির্বাচনী ইস্যু হিসেবে বিবেচিত হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধী দল রিপাবলিকান পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা ও দেশটির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স এ রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন।

দেশটির সরকারি দল ডেমোক্রেটিক পার্টির শীর্ষস্থানীয় নেতারা নিন্দা জানিয়েছেন এ সিদ্ধান্তের। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সুপ্রিম কোর্টের এ রায়কে মৌলিক স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ বলে উল্লেখ করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভা কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের (প্রতিনিধি পরিষদ) স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি সর্বোচ্চ আদালতের এই রায়কে নির্মমউল্লেখ করে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘মার্কিন নারীরা এখন তাদের মায়েদের চেয়ে কম স্বাধীনতা ভোগ করছে।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের নারী অধিকার সংগঠন দ্য আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন এক টুইটে বলেছে, ‘আদালত কি বলেছে সেটি গুরুত্বপূর্ণ নয়, কারণ কাউকেই তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বাচ্চা নিতে বাধ্য করা উচিত নয়গর্ভপাত নারীদের অধিকার; এবং এই অধিকার আদায়ের জন্য আমরা এর জন্য লড়াই বন্ধ করব না।

জেডআই/এএল

আন্তর্জাতিক সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ