আন্তর্জাতিক ডেস্ক
শেষবার চাঁদের মাটিতে মানুষ পা রেখেছিল সেই ১৯৭২ সালে। পঞ্চাশ বছর পর ফের পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহে মানুষ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমেরিকান মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। সে অনুযায়ী জোর প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে, চীন ও রাশিয়াও যৌথ উদ্যোগে লুনার স্টেশন তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে। কিন্তু চাঁদে গিয়ে থাকতে হলে মানুষের বাঁচার জন্য চাই খাবার। জীবনধারণের সেই ন্যূনতম চাহিদা মেটানো সম্ভব কি না, তা জানতেই শুরু হয়েছিল গবেষণা। মিলল সাফল্য। চাঁদের মাটিতে জন্ম নিলো এক টুকরো সবুজ!
অর্ধশত বছর আগে অ্যাপোলো অভিযানের সময় চাঁদ থেকে মাটি এনেছিলেন মহাকাশচারীরা। সে সময়ে পরীক্ষাগারে ব্যবহার না করে ভবিষ্যতের জন্য রেখে দেওয়া হয়েছিল।
গবেষণাগারে সেই মাটিতেই সবুজ প্রাণের সঞ্চার ঘটালেন বিজ্ঞানীরা। নাসা জানিয়েছে, এই মাটিতে তেমন পুষ্টিগুণ নেই। তারই মধ্যে জন্মেছে অ্যারাবিডোপসিস থালিয়ানা। এদের জীবনীশক্তি খুব বেশি। অল্পতে মরে না। গাছটিকে আফ্রিকা ও ইউরেশিয়ায় দেখতে পাওয়া যায়। ব্রকোলি, ফুলকপির মতো ক্রুসিফেরাস জাতের গাছ। গবেষণাগারে এই কাজটি করে দেখিয়েছে ফ্লরিডা বিশ্ববিদ্যালয়।
সব ঠিক থাকলে হয়তো আগামী কয়েক বছরের মধ্যে চাঁদে মানুষ পাঠাবে নাসা। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, চাঁদের মাটিতে কৃষিকাজ সম্ভব। পৃথিবীর মতো অত কিছু হয়তো ফলানো যাবে না। কিন্তু গাছের জন্ম সম্ভব, সে নিয়ে নিশ্চিত তারা।
অ্যাপোলো ১১, ১২ এবং ১৭ অভিযানে মহাকাশচারীরা চাঁদের মাটি নিয়ে ফিরেছিলেন। গবেষণাগারে সেই নমুনা ব্যবহার করা হয়। একটি গাছের জন্য ওই মাটিতে বীজ ছড়িয়ে পানি দেওয়া হয়েছিল। যোগ করা হয়েছিল সারও। তাতেই গবেষণাগারের ট্রেতে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে সবুজ চারা। উদ্যানবিদ্যার অধ্যাপক অ্যানা-লিসা পল বলেন, ‘দুদিন বাদেই বীজ থেকে কল বেরোতে শুরু করে। বলে বোঝাতে পারব না, আমরা কী পরিমাণ অবাক হয়েছিলাম! দুরকম ট্রে ছিল। এক ধরনের ট্রেতে চাঁদের মাটিতে বীজ ছড়ানো হয়েছিল। অন্য ট্রেতে পৃথিবীর মাটিতে বীজ দেওয়া হয়। দুক্ষেত্রেই একই রকম গাছ হয়েছে।’
এফএ
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন