• ঢাকা শুক্রবার
    ০৮ নভেম্বর, ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১

৬ লাখ ৭০ হাজার ইউক্রেনীয় দেশ ছেড়েছেন

প্রকাশিত: মার্চ ২, ২০২২, ০৫:৫৮ পিএম

৬ লাখ ৭০ হাজার ইউক্রেনীয় দেশ ছেড়েছেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

রাশিয়া কর্তৃক ইউক্রেন আক্রমণের ষষ্ঠ দিন পেরিয়েছে। ইউক্রেনের প্রতিবেশী দেশগুলোতে ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে শরণার্থীদের চাপ। একটু শান্তি ও নিরাপত্তার আসায় প্রিয়জনকে যুদ্ধের ময়দানে রেখে পোল্যান্ড, রোমানিয়া, মলদোভাসহ আরও অনেক দেশে পাড়ি জমিয়েছেন ইউক্রেনীয়রা। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশন জানিয়েছে, মঙ্গলবার পর্যন্ত ছয় লাখ ৭০ হাজার ইউক্রেনীয় দেশ ছেড়েছেন।

কোথাও কোনো দম ফেলার সময় নেই। আছে শুধু দৃঢ় প্রতিজ্ঞা। নিজের সন্তান ও বাবা-মায়ের নিরাপত্তায় নিরন্তর ছুটে চলা। হয়তো তাদের শরীরটা এসেছে, কিন্তু মন পড়ে আছে সুদূর ইউক্রেনে, যেখানে সম্মুখ সমরে লড়ে যাচ্ছেন তাদের বাবা ও সন্তান। আর বাবা-মায়েদের নিরাপদে আছেন বলে আশ্বস্ত করতে পেরে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন দেশত্যাগ করা বিদেশি শিক্ষার্থীরা।

দিনিপ্রো অধিবাসী আলেক্সান্দ্রা। তিনি দেশ ছাড়তে মোটেও চাচ্ছেন না। ইউক্রেনে ফেলে আসা মানুষদের সঙ্গে যুদ্ধ করে দেশ রক্ষা করতে চান। আলজাজিরার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, 'আমি দিনিপ্রো ছাড়তে চাই না। আমি অস্ত্র হাতে নিয়ে আমার মাকে (দেশ) বাঁচাতে চাই। কিন্তু আমার মা আমাকে বারণ করে বলেছে, আলেক্স তোকে যে তোর অবুঝ মেয়েটাকে দেখভাল করতে হবে।' 

 এক কন্যার জননী ৩৭ বছর বয়সী আলেক্সান্দ্রা আরো বলেন 'আমি ভালোমতোই বুঝেছি পুতিন পুরো ইউরোপকে চাইছে। তাই সবার উচিত ইউক্রেনীয়দের পাশে দাঁড়ানো।'

২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হাঙ্গেরিতে পৌঁছেছেন ৮৫ হাজার ইউক্রেনীয়। ১৩৫ কিলোমিটারজুড়ে বিস্তৃত সীমান্তে প্রচণ্ড ঠান্ডায় কষ্ট পাওয়া ইউক্রেনীয়দের গরম চা, স্যান্ডউইচ এমনকি তাদের সন্তানদের সঙ্গে খেলে সান্ত্বনা দিচ্ছেন হাঙ্গেরীয়রা।  

'কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে। যখন আমি জানলাম পুতিন আমাদের সীমান্তে সৈন্য সমাবেশ করছে। আমি আমার দুই সন্তানকে বলেছিলাম আমাদের দেশ ছাড়ার সময় হয়ে এসেছে।' অশ্রুসজল চোখে আলজাজিরায় বলছিলেন নাটায়েল। 'ইউক্রেন আক্রমণ অপ্রত্যাশিত ছিল।' কিয়েভে বাবাকে শেষ বিদায় দিয়ে ইউক্রেন ছাড়লেন নাটায়েল। 

জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশন জানিয়েছে, মঙ্গলবার পর্যন্ত ৬ লাখ ৭০ হাজার ইউক্রেনীয় দেশ ছেড়েছেন। এজেন্সি আরও বলেছে, এ সমস্যা সমাধান না করা গেলে এই পরিস্থিতি শতাব্দীর ভয়াবহ শরণার্থী সংকটে পড়বে গোটা বিশ্ব। তারা বলেছে, মানুষের এত চাপে পোল্যান্ডে প্রত্যেক শরণার্থীকে ৬০ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়, সে তুলনায় হাঙ্গেরি সহজ হওয়ায় এখানেই তাদের লক্ষ্য থাকে। 

হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অর্বান বলেছেন, 'আমরা ইউক্রেনীয়দের গ্রহণ করব, যত্ন নেব এবং আমরা ভালোভাবেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে চাই।' সরকার হাঙ্গেরি সীমান্তে মানবিক সহায়তায় সেনা মোতায়েন করেছে। তবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞায় সমর্থন থাকলেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার ঝিজারতো সোমবার বলেছেন, 'আমাদের সরকার ইউক্রেনীয়দের কোনো অস্ত্র সরবরাহ করবে না।'

সূত্র: আলজাজিরা 

এইচএ/এফএ
আর্কাইভ